শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইসিটি এন্ড ক্যারিয়ার

বন্ধ হলো ইভ্যালির ওয়েবসাইট ও অ্যাপ: নেটিজেনদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

শাহেদ নুর | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ৭:৫৩ পিএম

সাময়িকভাবে বন্ধ হলো বিতর্কিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ। শনিবার বিকেলে প্রতিষ্ঠানটির ভেরিফাইড ফেইসবুক পেজে এ তথ্য জানায় কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে নেটিজেনরা।

ফেইসবুক পোস্টে তারা লিখেছেন, সম্মানিত গ্রাহক, বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে আপনারা সবাই অবগত। ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রার অংশীদার হয়ে দেশের অনলাইন কেনাকাটাকে সবার হাতের মুঠোয় নিয়ে যেতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি অবিরাম। আমরা এই কাজকে এগিয়ে নিতে চাই। চাই আপনাদের সকলের সহযোগিতায় আমাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে চালিয়ে যেতে। আর এই সুযোগ পেলে সকলের সব ধরনের অর্ডার ডেলিভারি দিতে আমরা অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলাম, আছি, থাকবো। বর্তমান পরিস্থিতিতে অজ্ঞাতনামা হিসেবে আমাদের সকল এমপ্লয়িগণ শঙ্কার মধ্যে দিন অতিবাহিত করছেন। আমাদের সম্মানিত সিইও এবং চেয়ারম্যান কারাগারে থাকায় আমাদের ব্যাংকিং-ও সাময়িকভাবে বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের সার্ভারসহ, অফিসের খরচ চালানো এবং আমাদের এমপ্লয়িগণের দায়িত্ব নেয়ার বিষয়গুলোতে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। আমাদের উকিলের মাধ্যমে আমাদের সম্মানিত সিইও’র বক্তব্য হলো- সুযোগ এবং সময় পেলে আমাদের পক্ষে ৪ মাসের মধ্যেই সকল জটিলতা গুছিয়ে উঠা সম্ভব। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সার্ভার বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। পুনরায় দ্রুত সার্ভার চালু করে দেয়ার জন্য আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। গ্রাহক এবং সেলারদের স্বার্থ সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট। দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত হতে আমাদের এই যাত্রায় আমরা আপনাদের পাশে পেয়েছি সবসময়। আপনাদের এই ভালোবাসায় আমরা চিরকৃতজ্ঞ। সামনের দিনগুলোতেও আমরা এভাবে আপনাদের পাশে চাই। আপনাদের ভালোবাসার শক্তি আমাদের অদম্য পথচলার প্রেরণা। ইভ্যালির পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।’

এই পোস্টের কমেন্টে ডক্টর মো. রেদওয়ান হোসেন লিখেছেন, ‘সবই রাসেলের প্ল্যান। আমরা এখনো বোকা স্বর্গে আছি। আমার কষ্টের জমানো দেড় লাখ টাকা শেষ, আর আশা করে লাভ নাই, যেখানে সার্ভার বন্ধ সেখানে সব শেষ! আল্লাহর কাছে বিচার দিলাম, আর কিছু করার নাই! কেউ যেনো আর মামলা করতে না পারে, সেজন্য আমাদের শেষ ভরসা অর্ডারগুলোর নম্বর ও গায়েব করে দিয়েছে। কেউ দয়া করে আর আশা দেখবেন না, আমাদের কারো হতে আর কিছু নেই।’

ক্ষোভ প্রকাশ করে এমটি খালেদ মামুন লিখেছেন, ‘এই কি ব্র্যান্ড ভ্যালু, অফিস আর স্টাফ চালাইতে হিমসিম? পরের ধনে পোদ্দারি করলে এই হয়!’

রফিকুল ইসলামের দাবি, ‘হয় রাসেল সাহেবকে মুক্তি দিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দিন। নয়তো যাবত জীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড দেয় হোক। তাহলে টেনশন মুক্ত হবো।’

নিসাজ ইয়াসিরের পরামর্শ, ‘সবাই যার যার অর্ডারের ইমেইল কপি সংগ্রহ করে রাখুন। এখন তো আর অর্ডারের লিস্ট দেখা যাবে না।’

সাফিয়া আক্তার লিখেছেন, ‘ইভ্যালির কারণে মানুষের মনে অনলাইন থেকে কেনাকাটাতেই ভয় ঢুকে গিয়েছে। যে জন্য আমাদের মত ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা পরেছে বিপদে।’

হতাশা প্রকাশ করে আবির আহম্মেদ লিখেছেন, ‘টাকা পাওয়ার শেষ আশাটাও শেষ হয়ে গেলো এর সাথেই!’

এ প্রসঙ্গে ডিজিটার মার্কেটার ওবায়েদুর রহমান রাব্বি ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘টাটা বাই বাই! খতম! ইভ্যালি!’

এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান আরও ৪ মাস সময় চেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে এমডি আনসারুল হক লিখেছেন,‘রাসেল সাহেবকে চার মাস সময় দেয়ার জন্য জোর দাবি জানাচ্ছি। যেহেতু তিনি চার মাস সময় চাচ্ছেন। চার মাস সময় পর দেশীয় আইনে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। আমার মনে হয়, দেনাসহ কোম্পানিটি বিক্রি করে দেয়ার ফাইনাল পরিকল্পনা আছে। যদি সম্পূর্ণ দেনা পরিশোধ করার মতো টাকাও বিক্রি না করতে পারে, তারপরও যতদূর সম্ভব করতে পারলেও মন্দের ভালো। আর যদি তিনি এই সুযোগ না পান, তাহলে ফাইনালি একটা অভিযোগ একদিকে থেকেই যাবে, যা আদৌ তাদের জন্য সুখবর না। যেহেতু এই কোম্পানিটি সচল না হলেও বিদেশী কোন কোম্পানি বিজনেস করবে তাহলে কোম্পানিটি বিদেশীদের কাছে বিক্রি করে দেওয়াটাই বেটার। ভুক্তভোগী মধ্যবিত্তের কথা আশা করি কর্তৃপক্ষ বিবেচনা করবেন।’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন