দির্ঘদিন নিরুদ্দেশ থাকার পর স্বামী নজরুল ইসলাম (৩৮) হঠাৎ বাড়িতে এসে স্ত্রী কুলসুম আক্তারকে (৩০) ডেকে আনলেন নিজ বাড়িতে, পরদিন ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার হল শ^শুর বাড়ির পুকুরপাড়ে আমগাছের ডালে গলায় ওড়নার সাথে ফাঁস লাগানো অবস্থায়। কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার ধামতী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে সোমবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই রাসেল মিয়া বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করেন।
স্থানীয়রা জানায়, নিহত গৃহবধূ কুলসুম আক্তার ধামতী গ্রামের উত্তরপাড়া হামিদ আলী সরকারের পুত্র নজরুল ইসলাম সরকারের দ্বিতীয় স্ত্রী। প্রায় ১২ বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। বর্তমানে এক পুত্র ও দুই কণ্যা সন্তানের জননী। কুলসুম আক্তার পোনরা গ্রামের শেখ আব্দুল আউয়ালের কণ্যা। বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহ চলতে থাকে। কুলসুমকে বিয়ের আগে উপজেলার বক্রিকান্দি গ্রামে আরো একটি বিয়ে করেন। প্রথম স্ত্রীর এক কণ্যা সন্তানসহ তাকে তালাক দিয়ে বিদায় করা হয়েছিল। পরে সে চলে যায় রাঙ্গামাটি এলাকায়। সেখানে আরো একটি বিয়ে করে সংসার শুরু করে। ওখানেও তার একটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন নিরুদ্দেশ থাকায় খাওয়া পড়ার অভাবে কুলসুম আক্তার তিন সন্তান নিয়ে তার বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। হঠাৎ গত শনিবার নজরুল ইসলাম বাড়িতে এসে তার স্ত্রীকে ডেকে আনে। রোববার কুলসুম স্বামীর ডাকে তার শ^শুর বাড়িতে চলে আসে। দীর্ঘদিন পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। সোমবার সকালে বাড়ির পুকুর পাড়ে আম গাছের ডালে গলায় ওড়নায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া নান্নু জানান, নজরুল বিয়ে পাগল, কয়দিন পরপর বিয়ে করেন। ঘটনার পর থেকে নজরুল নিরুদ্দেশ। কুলসুমের আত্মীয় পোনরা গ্রামের পারভীন আক্তার নামে এক স্কুল শিক্ষিকা জানান, কুলসুমকে তার স্বামী পছন্দ করত না। তাই তাদের মধ্যে প্রতিনিয়ত পারিবারিক কলহ লেগেই থাকত। দীর্ঘদিন পর সে বাড়িতে আসে। কুলসুমকে তার বাবার বাড়ি থেকে ডেকে এনে হত্যা করে লাশ গাছে ঝুলিয়ে রাখে। ঝুলন্ত অবস্থায় তার শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত ও ফুলা জখমের দাগ ছিল।
দেবিদ্বার থানার এসআই নাজমুল হাসান জানান, গৃহবধূর গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় আম গাছের ডাল থেকে নামিয়ে ময়না তদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পরই বলা যাবে হত্যা নাকি আত্মহত্যা। তবে পায়ের অংশে পিপড়ার কামরের ক্ষত ছিল, মাথার অংশে গাছের সাথে ধস্তাদস্তির কারনে ক্ষত হওয়ার কারনে রক্ত বেরুতে পাড়ে। ওই ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন