যুক্তরাষ্ট্রের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রোগ্রামে বিনিয়োগ করেছিল তুরস্ক। কিন্তু রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ক্রয়ের কারণে তুরস্কের ওপরে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জানিয়ে দিয়েছিল, রাশিয়া থেকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ক্রয় করলে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দেয়া হবে না তুরস্ককে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান এফ-৩৫ পেতে নানা চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। এখন যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এফ-৩৫ প্রোগ্রামে তুরস্ক যে বিনিয়োগ করেছে তার বিনিময়ে তাকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। এরদোগান নিজেই যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রস্তাবের কথা জানিয়েছেন। রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি বলেন, তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তার বিনিয়োগ ফেরত চেয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে। আমরা এফ-৩৫ এর জন্য ১.৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছিলাম। এখন যুক্তরাষ্ট্র এর বিনিময়ে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান প্রদান করতে চাইছে। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, আঙ্কারা ১০০ টিরও বেশি এফ-৩৫ বিমান কিনতে চেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে। কিন্তু রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনায় ২০১৯ সালেই তুরস্ককে এই প্রোগ্রাম থেকে বাদ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্রও দেশটিকে দূরে ঠেলে দেয়। গত বছরের ডিসেম্বরে তুরস্কের প্রতিরক্ষা ইন্ডাস্ট্রির প্রধান ইসমাইল ডেমির ও এর তিন কর্মকর্তাকে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। অপর এক খবরে বলা হয়, আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে চায় তুরস্ক। সে লক্ষ্যে আফ্রিকার তিন দেশ সফরে বের হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। রোববার তুর্কি প্রেসিডেন্ট অ্যাঙ্গোলার রাজধানী লুয়ান্ডায় পৌঁছান। এর পর তিনি নাইজেরিয়া ও টোগো সফর করবেন। খবর ডেইলি সাবাহর। এদিন এরদোগানকে অ্যাঙ্গোলার পররাষ্ট্রমন্ত্রী তেতে অ্যান্তোনিও এবং দেশটিতে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত আল্প আই কোয়াত্রো দে ফেভেরেইরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী এমিনি এরদোগান, দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসগ্লু, জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদমন্ত্রী ফাতিহ ডোনমেজ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার এবং বাণিজ্যমন্ত্রী মেহমেত মুসা। এরদোগানের সফর উপলক্ষে লুয়ান্ডার সড়কে তুরস্কের পতাকা উড়তে দেখা গেছে। এ ছাড়া নাইজেরিয়ার রাজধানী আবুজায় বিলবোর্ডে তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। অ্যাঙ্গোলায় এরদোগান দেশটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করার কথা। অ্যাঙ্গোলার প্রেসিডেন্ট প্যালেসে এরদোগানকে শুভেচ্ছা জানাবেন। বৈঠক শেষে দুই দেশের প্রেসিডেন্ট যৌথ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করবেন। এরদোগান অ্যাঙ্গোলার পার্লামেন্টে ভাষণ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে তিনি দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট অ্যান্তনিও আগস্টিনহো নেটোর সমাধি পরিদর্শন করবেন, যার মৃত্যু হয়েছিল ১৯৭৯ সালে। তৃতীয় তুরস্ক-আফ্রিকা পার্টনারশিপ সামিট ইস্তান্বুলে অনুষ্ঠিত হবে ১৭-১৮ ডিসেম্বর। সম্মেলনে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের প্রধান, মন্ত্রী, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। ২০০৮ সালে প্রথম এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বারের মতো এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ইকুয়েটোরিয়াল গিনিতে। আল-জাজিরা, রয়টার্স, ডেইলি সাবাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন