বিনোদন ডেস্ক : পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক বৈরী সম্পর্কের জের ধরে ভারতের একটি সিনেমা উৎসব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে অবিভক্ত পাকিস্তানে নির্মিত প্রখ্যাত চলচ্চিত্র ‘জাগো হুয়া সাভেরা (ডে শ্যাল ডন)’। চলচ্চিত্রটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জহির রায়হান ও খান আতাউর রহমানসহ সে সময়ে ঢাকা চলচ্চিত্রের অনেক ব্যক্তিত্ব। এজে কারদার পরিচালিত সিনেমাটিতে নায়ক হয়েছিলেন খান আতাউর রহমান (তিনি আনিস নামে পরিচিত ছিলেন)। নায়িকা হয়েছিলেন কলকাতার তৃপ্তি মিত্র। চলচ্চিত্রটি জিয় মামি ১৮তম মুম্বাই ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে (এমএফএফ) নামে ভারতের একটি উৎসবে ‘রেস্টরড ক্ল্যাসিক’ বিভাগে আগামী সপ্তাহে প্রদর্শন করার কথা ছিল। বিষয়টি জানতে পেরে ‘সংঘর্ষ’ নামে একটি সংগঠন সিনেমাটির প্রদর্শন নিয়ে আপত্তি তোলে। সংগঠনটির দাবি, ভারতের মানুষের জাতীয়তাবাদী আবেগ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন উৎসবের উদ্যোক্তারা। উরি হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, সেটা মাথায় রাখা উচিত। সংগঠনটির আপত্তির কারণে উৎসবের উদ্যোক্তারা শেষ পর্যন্ত জাগো হুয়া সাভেরা প্রদর্শন স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন কলকাতার প্রখ্যাত চিত্রনায়িকা এবং সংসদ সদস্য মুনমুন সেন ও শতাব্দী রায়। তারা মনে করেন, শিল্পীর কোনো দেশ হয় না। শিল্প নিয়ে রাজনীতি করাও উচিত নয়। জাগো হুয়া সাভেরা প্রদশর্ন স্থগিত করার এমন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হয়নি। উল্লেখ্য, ১৯৫৮ সালে সিনেমাটি নির্মিত হয়। ৮৭ মিনিট ব্যাপ্তির সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৫৯ সালের ৮ মে। প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক মানিক বন্দোপাধ্যায়ের গল্প অবলম্বনে এটি যৌথভাবে রচনা করেন, মানিক বন্দোপাধ্যায় ও এ জে কারদার। চিত্রনাট্য করেন ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ। পরিচালনা করেন এ জে কারদার। সহকারী পরিচালক হিসেবে ছিলেন জহির রায়হান। প্রযোজনা করেন নোমান তাসির। বাংলা এবং উর্দু দুই ভাষাই এতে ব্যবহার করা হয়। মুক্তির পরপরই সিনেমাটি আলোড়ন তুলে। ঐ বছরই ৩২তম অস্কার পুরস্কারে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে এটি জমা দেয়া হয়। এর পরপরই ফার্স্ট মস্কো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এটি গোল্ড মেডেল পুরস্কার পায়। কয়েক দশক পর সম্প্রতি সিনেমটিকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে রূপান্তর করা হয়। এবছর অনুষ্ঠিত ৬৯তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে ক্ল্যাসিক বিভাগে এটি প্রদর্শিত হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন