মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কার্টুনিস্ট কিশোরকে নির্যাতনের প্রমাণ পায়নি পিবিআই

কারা তুলে নিলো তা অজানা

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পায়নি তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। আদালতে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সংস্থাটি। আগামী ২৪ নভেম্বর প্রতিবেদনের বিষয়ে শুনানির তারিখ দিয়েছেন আদালত। গত ১৭ অক্টোবর মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েসের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা-পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের সুনির্দিষ্ট কোনও প্রমাণ না পাওয়ায় বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।

প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, সাদা পোশাকে অজ্ঞাতনামা ১৬-১৭ জনের বিরুদ্ধে আনা কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়নি। গত ২০ মার্চ কিশোরের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শরীরে (কান, পা ও শরীরে) আঘাতের চিহ্ন পায়নি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের তিন সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড। গত ১০ মার্চ কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজ্ঞাত সদস্যদের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। কান, পা ও শরীরের যেখানে আঘাত পেয়েছেন বলে কিশোর যে অভিযোগ করেছেন, সেগুলো পরীক্ষা করতে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে নির্দেশ দেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ।
পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সাদা পোশাকে অজ্ঞাতপরিচয় ১৬-১৭ জনের বিরুদ্ধে কিশোরকে শারীরিক নির্যাতনের যে অভিযোগ, সেটির প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জড়িত কোনো আসামিকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কে বা কারা কার্টুনিস্ট কিশোরকে কোন গাড়িতে করে, কোন রোডের, কোন স্যাঁতসেঁতে বাড়িতে রেখেছিল, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য সরবরাহ করতে পারেননি বাদী। প্রকৃতপক্ষে কার্টুনিস্ট কিশোরকে র‌্যাব তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছিল। কিশোরের বিরুদ্ধে মামলার বাদী র‌্যাব-৩এর কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। তিনি জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে কার্টুনিস্ট কিশোরকে তার বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে কোনো প্রকারের শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়নি। মামলাটির চারজন তদন্ত কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তারাও কিশোরকে নির্যাতনের কোনো তথ্য জানাতে পারেননি।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, কার্টুনিস্ট কিশোরের ভাই আহসান কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনিও জানাতে পারেননি, ২ মে কারা কিশোরকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। তবে আহসান কবির জানান, সেদিন কিশোরের বাসার সবকিছু তছনছ করে। কিশোরের মুঠোফোন ফোন কেড়ে নেয়। পরে তার নাক-মুখে জমটুপি পরিয়ে বাসা থেকে টেনেহিঁচড়ে নিচে নামায়। পরে গাড়িতে উঠিয়ে জোরে গান ছেড়ে দেয়, যাতে কিশোরের চিৎকার কেউ শুনতে না পায়। এই মামলায় ১৯ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই।

কিশোরের অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ৫ মে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কার্টুনিস্ট আহমেদ কবীর কিশোর গ্রেফতার হন। কিন্তু তার তিন দিন আগে ২ মে বিকাল ৫টা ৪৫ মিনিটে বাসা থেকে সাদা পোশাকধারী ১৬-১৭ জন লোক তাকে মুখোশ পরিয়ে হাতকড়া লাগিয়ে নির্জন জায়গায় নিয়ে যায়। এরপর ২ মে থেকে ৩ মে পর্যন্ত তাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন