পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের করা মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। গতকাল রোববার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছা বেগম এ আদেশ দিয়েছেন।
হেফাজতে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইয়ের ওই ছয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তিনি মামলার আবেদন করেছিলেন। এছাড়া বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করে ২০০ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ এবং ফেনী জেলা কারাগারের কারাকক্ষে তল্লাশির অভিযোগে নিরাপত্তা চেয়ে করা পৃথক দু’টি আবেদনও একইসঙ্গে খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
মামলার আবেদনে আরও যাদের নাম ছিল তারা হলেন- পিবিআই চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার মো. নাজমুল হাসান, মেট্রোর পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা, পিবিআইয়ের সাবেক দুই পরিদর্শক বর্তমানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (পাহাড়তলী জোন) একেএম মহিউদ্দিন সেলিম ও খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা এবং পিবিআইয়ের জেলা পরিদর্শক কাজী এনায়েত কবির।
চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাবুল আক্তার তিনটি পিটিশন দাখিল করেছিলেন। মূল পিটিশন হচ্ছে ছয়জন পিবিআই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার আবেদন। আদালত সেটা খারিজ করে দিয়েছেন। বাকি দু’টি সাব-পিটিশন। একটি হচ্ছে বাবুল আক্তারকে আদালতে হাজির করে ২০০ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ, আরেকটি ফেনী কারাগারের জেল সুপারকে বন্দি বাবুল আক্তারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের আদেশ। দু’টি আবেদনই আদালত নামঞ্জুর করেছেন।
আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, সাবেক এসপি বাবুল আক্তার পরিষ্কারভাবে অভিযেগ করেছেন- পিবিআইয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তদন্তকারী কর্মকর্তা তাকে রিমান্ডে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন। বাবুল আক্তার মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত প্রধান আসামি। আদালতের কাছে এটি পরিষ্কার হয়েছে যে, মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলা থেকে নিজেকে রক্ষার চেষ্টায় তিনি কতগুলো অভিযোগ সৃজন করেছেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
আদেশে আরও বলা হয়, নির্যাতন হেফাজতে মৃত্যু নিবারণ আইন, ২০১৩ এর ১১ ধারা অনুযায়ী বাবুল আক্তারের মামলার আবেদন গ্রহণের বিষয়ে বিবেচ্য কিছুই পাওয়া যায়নি। ফলে এটি গ্রহণের কোনো সুযোগ নেই। একই আইনের ভিত্তিতে ২০০ ধারায় বাবুল আক্তারের জবানবন্দি গ্রহণেরও কোনো সুযোগ নেই।
গত ৮ সেপ্টেম্বর বাবুল আক্তার তাকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগে মামলার আবেদন করেছিলেন। এরপর ১২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে বাবুল আক্তারের পক্ষে তার আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ আরেকটি আবেদন দাখিল করে অভিযোগ করেন, ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফেনী মডেল থানার ওসি নিজাম উদ্দিন ফেনী কারাগারে প্রবেশ করে বাবুল আক্তারের কক্ষে দীর্ঘসময় ধরে তল্লাশি চালান।
আবেদনে আসামি বাবুলের দাবি ছিল, তার জীবনের ক্ষতিসাধন ও মানসিকভাবে দুর্বল করার জন্য ওসি কারাগারে প্রবেশ করেন। আবেদনে ওসির প্রবেশের তদন্ত এবং বাবুলের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ফেনীর জেল সুপারকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়ার বিষয় উল্লেখ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন