শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চুক্তিতে প্রশ্ন ফাঁস

আহছানউল্লা’র পিয়নসহ গ্রেফতার তিন

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

পাঁচ ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের ঘটনা আরো তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি)। গত বুধবার রাতে রাজধানীর দক্ষিণখান থানা এলাকা থেকে দেলোয়ার হোসেন ও রবিউল আউয়ালকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মহাখালী এলাকা থেকে পারভেজ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এদের মধ্যে দেলোয়ার হোসেন আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক (পিয়ন)।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তেজগাঁও জোনের এডিসি শাহাদত হোসেন জানান, পিয়ন দেলোয়ার লাখ টাকার চুক্তিতে প্রশ্ন ফাঁস করতো। তার কাজ ছিল শুধু একসেট প্রশ্ন বাইরে বের করে আনা। প্রশ্ন ফাঁস করার কথা স্বীকার করাসহ তিনি প্রশ্নফাঁসের নেপথ্যে ঊর্ধ্বতন কয়েকজনের নাম বলেছেন। তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করা যাচ্ছে না।
তিনি আরো বলেন, দেলোয়ার হোসেন প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার কাজী শফিকুল ইসলামের অফিসে পিয়ন হিসেবে যোগদান করেন। কয়েক মাস পর জানতে পারেন ব্যাংকসহ বিভিন্ন চাকরি পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপা ও পরীক্ষার টেন্ডার পায় আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। যেহেতু ট্রেজারার পরীক্ষা কমিটিতে থাকতেন, সেহেতু তাকে প্রশ্ন ছাপার বিভিন্ন কাজে নেয়া হতো। এ কাজে তিনি নিয়মিত আশুলিয়ায় আহছানিয়া মিশনের নিজস্ব ছাপাখানায় যেতেন। সেখানে নজরদারি ও নিরাপত্তার অনেক অভাব ছিল। সেই সুযোগে দেলোয়ার লুকিয়ে প্রশ্ন নিয়ে বের হতেন। তাকে এই কাজে প্রলোভন দেন আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যায়ের আইসিটি টেকনিশিয়ান মোক্তারুজ্জামান রয়েল ও ল্যাব সহকারী পারভেজ মিয়া। তাদের অনুরোধে তিনি কমপক্ষে ৪ থেকে ৫টি পরীক্ষার প্রিলি ও রিটেনের প্রশ্ন এনে দিয়েছেন। প্রতিবার তারা তাকে ৫০ হাজার করে টাকা দিয়েছেন। তাদের সঙ্গে শ্যামল নামে একজন ছিলেন।
এডিসি শাহাদত হোসেন বলেন, গ্রেফতার রবিউল আউয়াল জিজ্ঞাসাবাদে জানান তিনি আহছানিয়া প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশন্সে বাইন্ডার পদে কর্মরত। তার হাতের আঙুলের আঁচিলের জন্য আহছানউল্লা ইউনিভার্সিটির সহকারী দেলোয়ারের কাছে ওষুধ চেয়েছিলেন। ওষুধ দেয়ার কথা বলে দেলোয়ার তাকে কামারপাড়া গিয়ে মোক্তারুজ্জামান রয়েল ও পারভেজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেযন। অপর আসামি পারভেজ মিয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তিনি আহছানউল্লা ভার্সিটিতে ল্যাব সহকারী পদে চাকরি করেন। পারভেজ ও মোক্তারুজ্জামান মিলে দেলোয়ারের সঙ্গে কথা বলে প্রেসের রবিউলের সঙ্গে এক সপ্তাহ আগে দেখা করেন। গত ৪ নভেম্বর নবীনগর স্মৃতি সৌধের পাশ থেকে মোক্তারুজ্জামান, পারভেজ ও রবিউলের কাছ থেকে ৬ নভেম্বরের ব্যাংকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নেন। মোক্তারুজ্জামান প্রশ্নপত্র নিয়ে বাসায় চলে যান।
তিনি বলেন, দেলোয়ার, পারভেজ ও রবিউল নামে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেলোয়ার প্রশ্নফাঁসকারী চক্রের অন্যতম হোতা। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য দিয়েছেন। আমরা এসব যাচাই করছি। তাদের বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়। তারা তিনজনই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। গত ৬ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।

 

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন