বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউরোপের একাধিক দেশে লকডাউন ডাচ পুলিশের গুলি, গাড়িতে আগুন

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

ইউরোপে আবার করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে বড়দিন ও নতুন বছরের উৎসবের আগেই লকডাউন কার্যকর হতে চলেছে। ইউরোপের মধ্যে অস্ট্রিয়া, জার্মানি ও রাশিয়ায় দৈনিক করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যুর রেকর্ড তীব্রতা দেখা গিয়েছে। এই দেশগুলিতে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবং ইউরোপের মধ্যে অস্ট্রিয়াই প্রথম দেশ যেখানে করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য লকডাউন কার্যকর করা হয়েছে। শুক্রবার ইউরোনিউজের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া ভাইরাসের বিস্তারকে প্রভাবিত করেছে বলে ইউরোপের বিভিন্ন অংশে করোনার সংক্রমণ আবার বাড়ছে। জার্মানের ভাইস চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল নাগরিকদের টিকা দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। ইতিমধ্যে দেশের সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মার্কেল বলেন, পরিস্থিতি এখন চূড়ান্ত নাটকীয়তায় চলে গিয়েছে। জার্মানের স্বাস্থ্য মন্ত্রী জেনস স্পান জানিয়েছেন যে জার্মানি হয়তো করোনা রোগীদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে বা এমনকী প্রতিবেশী দেশেও চিকিৎসার জন্য পাঠাতে পারে। স্পান বলেন, আমরা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছি যেখানে আমাদের করোনা রোগীদের শুধু একই অঞ্চলে নয়, জার্মানির অন্যান্য অঞ্চলে স্থানান্তর করতে হবে।’ শুক্রবারও জার্মানিতে দৈনিক করোনা সংক্রমণ রেকর্ড হয়েছে ৫২,৯৭০টি। জার্মানের বাভারিয়া, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য তাদের জনপ্রিয় বড়দিনের বাজার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এদিকে, হল্যান্ডের রটারডাম শহরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য যে লকডাউন দেয়া হয়েছে তার বিরুদ্ধে সেখানকার জনগণ সহিংস প্রতিবাদে নেমেছেন। শুক্রবার রাতে বিক্ষোভকারীরা বন্দরনগরী রটারডামে লকডাউনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এসময় বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয় এবং বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ পানিকামান ব্যবহার করে। এতে বিক্ষোভকারীরা আরো বেশি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুঁড়ে মারেন। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, পুলিশের গাড়িতে বিক্ষোভকারীরা আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন এবং তারা পুলিশের দিকে ইট-পাটকেল ও আগুনে বোমা ছুঁড়ে মারছেন। করোনাভাইরাস মোকাবেলার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষ শহরের জরুরি অধ্যাদেশ জারি করেছে। এর আওতায় শহরটিতে গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, সাধারণ লোকজনকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কেউ যাতে নির্দেশ অমান্য না করে সেজন্য পুলিশ শহরের বিভিন্ন স্থানে পানিকামান মোতায়েন করেছে এবং ঘোড়ায় চড়ে টহল দিচ্ছে। করোনা সংক্রমণের তীব্রতা কমাতে অস্ট্রিয়া ইতিমধ্যে লকডাউন কার্যকর করার কথা ঘোষণা করেছে এবং দেশের পুরো জনসংখ্যাকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে সম্পূর্ণ টিকাকরণের আওতায় আনার কথা বলা হয়েছে। অস্ট্রিয়ান চ্যান্সেলর আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেছেন, ‹মানুষকে টিকাকরণের জন্য আমরা যথেষ্টভাবে রাজি করাতে পারছি না। কিন্তু এখন এটা নিয়ে কড়া বন্দোবস্ত করতে হবে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা পারস্পরিক সহযোগিতা দেখাননি। এই দুষ্ট চক্র ভাঙ্গার একমাত্র উপায় টিকাদানের হার বাড়ানো।’ দেশজুড়ে লকডাউন কার্যকর হবে আগামী সোমবার থেকে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই দেশে ১৫,৬০৯টি নতুন সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, যা মহামারি শুরুর পর থেকে সর্বোচ্চ। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্তের তালিকায় পাঁচটি দেশের একটি হল রাশিয়া। টিকা প্রয়োগের পর কয়েক মাস আক্রান্ত ও মৃত্যুহার নিয়ন্ত্রণে থাকলেও গত সপ্তাহ থেকেই তা আবার বাড়তে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে কর্মক্ষেত্র, রেস্তোরাঁ কিংবা শপিংমলে গেলে টিকা সনদ সঙ্গে রাখার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারও এই দেশে সর্বোচ্চ ১,২৫৪টি দৈনিক নতুন মৃত্যু সহ ৩৭,১৫৬টি নতুন করোনা কেস সনাক্ত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই দেশে ১,২৫১ জন ও বুধবার ১,২৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, রাশিয়ার মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ করোনার দুই ডোজ টিকা নিয়েছেন। বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন