সিদ্ধিরগঞ্জে সিন্ডিকেট করে দেওয়া হচ্ছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ তিতাস কর্তৃপক্ষ নীরব। কয়েকটি সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে বিভিন্ন আবাসিক ভবনে অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে
ত্রুটিপূর্ণ এসব সংযোগ লিকেজ হয়ে ফিস্ফোরণ ঘটে প্রাণ হানির ঘটনা ঘটছে। স্থানীয় অসাধু তিতাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে গোপন আতাঁত করে এসব সিন্ডিকেট চক্র চালাচ্ছে সরকারি প্রাকৃতিক সম্পদ গ্যাস হরিলুটের মহোৎসব। ফলে সরকার হারাচ্ছেন মোটা অংকের রাজস্ব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আবাসিক গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় তিতাসের একশ্রেণির ঠিকাদার ও দালালরা অবলম্বন করেছেন অবৈধ উপায়। স্থানীয় প্রভাবশালীদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এসব সিন্ডিকেট তিতাসের কিছু কর্মকর্তাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এক থেকে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন নব নির্মিত আবাসিক ভবন ও অবৈধ মিল কারখানায় গভীর রাতে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এলাকায় অন্তত দশটি সিন্ডিকেট অবৈধ গ্যাস সংযোগে নিয়োজিত। তারা এককালিন মোটা অংকের অর্থ নিয়ে গ্যাস সংযোগ দিয়েও ভবন মালিকদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিচ্ছেন। সিন্ডিকেট চক্র ও তিতাস কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হরিলুট করা হচ্ছে সরকারি সম্পদ গ্যাস।
অবৈধ উপায়ে সহজেই গ্যাস সংযোগ ও বিল পরিশোদের জামেলা না থাকায় বাড়ীর মালিকরা হয়ে পড়েছে সিন্ডিকেট নির্বরশীল। ফলে থানা এলাকায় দিন দিন বেড়েই চলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ। সূত্র জানায়, থানা এলাকায় বৈধ গ্যাস ব্যবহারকারীর চেয়ে অবৈধ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি। এছাড়াও বহু বাড়ীর মালিকরা বৈধ সংযোগ নিলেও অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন একাধিক চুলা।
কদমতলীর বাসিন্দা মো. জাকির হোসেন জানান, অদক্ষ লোকেরা ত্রুটিপূর্ণ লাইন সংযোগ দিচ্ছেন। রাতের আধাঁরে তরিঘড়ি করে লাইন সংযোগ দেওয়ায় লিকেজ হয়ে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে গ্যাস জমে বিস্ফোরণ ঘটে অনাকাঙ্খিতভাবে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। তিতাস কর্তৃপক্ষ মাঝে মাঝে কোন বাড়ীতে অভিযান চালিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও দুই একদিনের মধ্যে আবার সংযোগ দিচ্ছেন সিন্ডিকেট সদস্যরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, আদমজী নগর কদমতলী এলাকার বাসিন্দা ঠিকাদার বাবুলের নেতৃত্বে শক্তিশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। একই এলাকার আলমগীর হলেন সিন্ডিকেট প্রধান। সুমন, দুলাল মুন্সি, জীবন, খায়ের, সুজন ওই সেন্ডিকেটের অন্যমত সদস্য।
এসব সিন্ডিকেট গত কয়েক বছর ধরে কদমতলীর বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ দিচ্ছেন। এছাড়াও আটি হাউজিং এলাকায় শাহরিয়ার তপন ও মোস্তফা, মিজমিজিতে রওশন আলি, গোদনাইলে নজরুল ইসলাম ও হাবিব, মৌচাকে রনি সিন্ডিকেট অবৈধ গ্যাস সংযোগের পাশাপাশি মাসোহারাও নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বাড়ীর মালিক বলেন, নতুন বাড়ী নির্মাণ করেছি। আমারা চাইনা অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করতে। কিন্তু বৈধ ভাবে সংযোগ দিতে না পারায় বাধ্য হয়ে স্থানীয় দালাল ঠিকাদারদের মাধ্যমে লাইন সংযোগ নিয়ে গ্যাস ব্যবহার করছি।
এবিষয়ে জানতে ঠিকাদার বাবুলের সঙ্গে কথা হলে তিনি গ্যাস লাইন সংযোগ দেওয়ার সত্যতা স্বীকার করে আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
সিন্ডিকেট প্রধান আলমগীরের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, তিতাস কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেই লাইন সংযোগ দেওয়া হয়। সংযোগ খরচ বাদে তিতাস অফিস ম্যানেমোজর জন্য প্রতি চুলায় এককালিন বিশ হাজার টাকা করে নেওয়া হয়। সংযোগ চালু রাখতে চুলা প্রতি বছরে নেওয়া হয় ১৫ হাজার টাকা। আমাদের সঙ্গে কথা বলে লাইন সংযোগ নিলে তিতাস কোন ঝামেলা করেনা।
সিন্ডিকেটের সঙ্গে তিতাস কর্মকর্তাদের আঁতাতের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ তিতাসের ডিজিএম গোলাম ফারুক বলেন, তথ্য পেলেই অবৈধ সংযোগের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়। তবে অবৈধ সংযোগ স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে নতুন কৌশল অবিস্কার করে প্রদক্ষেপ নিব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন