বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

আবির রঙে রঙিন বিদায়বেলা

প্রকাশের সময় : ২৪ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অক্টোবর-নভেম্বর মাসে ডাক্তার গড়ার কারখানাগুলোতে একটা চাপা হাহাকার শুরু হয়। একটি মহৎ পেশার অংশীদারিত্ব ও দেশের মানুষের সেবার উদ্দেশ্যে পাঁচ বছর পূর্বে যারা মেডিকেল কলেজে প্রবেশ করেছিল এখন তাদের বিদায় বেলা। এবং বিদায় সব সময় বিষাদময়। আর সে বিদায় যদি পাঁচ বছরের ভালোবাসার প্রিয় ক্যাম্পাস থেকে হয়, বিষাদ তখন আবেগী রূপ নেয়। দেশের মেডিকেল কলেজগুলোতে পুরাতন কারিকুলামে প্রতি বছরের জানয়ারি মাসে এমবিবিএস চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রস্তুতিমূলক ছুটি ও আনুষঙ্গিক কারণে অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে শেষ ক্লাসগুলো হয়ে থাকে। চাপা কষ্টের বাঁশির সুরে তখন মেডিকেল কলেজে ক্লাস সমাপনী বা র‌্যাগ ডে উদযাপন শুরু হয়। কলেজের অধ্যয়নরত সব থেকে সিনিয়র ব্যাচ প্রস্তুতি নিতে শুরু করে পাঁচ বছরের প্রিয় ক্যাম্পাসকে বিদায় জানানোর।
স্মৃতি সংরক্ষণে র‌্যাগ ডে উপলক্ষে বানানো হয় আলাদা টিশার্ট। পাঁচ বছরের সহপাঠীদের অনুভূতি, স্বাক্ষর আর রঙে টিশার্ট হয়ে উঠে ভালোবাসার বন্ধনের প্রতীক। এছাড়াও দিনব্যাপী র‌্যালি, শিক্ষকদের সাথে ছবি তোলা, বিদায় নেয়াসহ থাকে বিভিন্ন আয়োজন। ক্যাম্পাসের প্রতিটি অংশে যেন বিদায়ের আবেশ মেখে যায়।
শেষ সময়ে এসে সবার মনে পড়ে মেডিকেল কলেজ জীবনের প্রথম দিনের কথা। নতুন জীবন শুরুর প্রথম দিনের সেই অনুভূতির কথা স্মরণ করে শিক্ষানবীশ চিকিৎসক ডা. মোশারফ সিকদার বলেন, ‘‘দিনটা ছিল উত্তেজনায় ভরপুর। ছোটবেলা থেকে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আজ সত্যি হচ্ছে ভেবেই নিজেকে এমবিবিএস পাস করা ডাক্তার মনে হচ্ছিল। ঐদিনের সেই অপরিচিত ক্যাম্পাস, অপরিচিত শতাধিক নতুন সহপাঠীর সাথে শুরু হওয়া জীবনের আরেকটি পর্ব আজ সব থেকে বড় আবেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’
বিদায় অনুষ্ঠানের অন্যতম সেরা আকর্ষণ থাকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিদায়ী ও বর্তমান ব্যাচের অংশগ্রহণে সমন্বিতভাবে সাজানো হয় অনুষ্ঠান। নাচ, গান, কৌতুক, কবিতা, অভিনয়সহ থাকে সকল উপকরণ। স্মরণীয় হয়ে থাকে বিভিন্ন সময়ে এলআরবি, শিরোনামহীন, আর্টসেল, লালনসহ দেশীয় ব্যান্ডের পরিবেশনা।
গত বছর সমাপনী উদযাপন করা শিক্ষানবীশ চিকিৎসক ডা. প্রিয়ঙ্কা মাহমুদ রথি মেডিকেল কলেজ জীবনের শেষ দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘‘পাঁচটা বছর!! দেখতে দেখতে কেটেই গেল। এখনো মনে হয় এইতো সেদিন আসলাম স্বপ্ন পূরণের ইচ্ছে নিয়ে। আর এখন স্বপ্ন হাতের মুঠোয় নিয়ে সমাপনী টানেছি মেডিকেল লাইফের৷ এত এত স্মৃতি জমেছে!! প্রথম দিনের নতুন মুখগুলো আজ জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ। বিদায়ের সময়গুলো হৃদয় এফোড় ওফোড় করে দেয়। আর হবে না সেই হাসি, ঠাট্টা, আড্ডা, কান্না, রাগারাগি!’’
পরিচিত প্রিয় অ্যাপ্রোন, প্রিয় শিক্ষক, প্রিয় লেকচার রুম, ওয়ার্ড, অপারেশন থিয়েটার ছেড়ে সবাই এগিয়ে যাবে দেশ গড়ার কাজে। মানুষের সেবা তথা দেশ ও সৃষ্টিকর্তার সেবা করার উদ্দেশ্যে অতিবাহিত পাঁচ বছর থেকে গ্রহণ করা শিক্ষা আলো ছড়াবে গভীর অন্ধকারেও।
ষ মনির হোসেন শিমুল

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন