ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার (আইআইইউএম) শিক্ষার্থীদের সংগঠন ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট সোসাইটির (পিজিএসএস) ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশি কৃতী শিক্ষার্থী ফয়জুল হক। আইআইইউএম-এ অধ্যয়নরত শতাধিক দেশের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী এই সংগঠনটির ২০১৬-১৭ সেশনের জন্য ভিপি নির্বাচিত হন তিনি।
ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার চারাখালি গ্রামের মাওলানা মুজ্জাম্মিলুল হক ও ফাতেমা বেগমের ৬ষ্ঠ সন্তান ফয়জুল। দেশের এক অনন্য শিক্ষানুরাগী পরিবারে জন্ম ফয়জুল হকের পিতা বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, আলহাজ মাওলানা মুহাম্মদ মুজ্জাম্মিলুল হক রাজাপুরী, যিনি প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, পশ্চিম চাড়াখালী আজিজিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা এবং সাবেক প্রিন্সিপালÑ নেছারাবাদ ছালেহিয়া আলীয়া মাদরাসা, ঢাকা নেছারিয়া কামিল মাদ্রাসা, ফয়রা নেছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসা ও ইসলামপুর শাহ ইয়াসিন সিনিয়র মাদ্রাসা।
ফয়জুল হকের নানা দক্ষিণ এশিয়া মহাদেশের আলেম সমাজের শীরমনি, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ঝালকাঠি এনএস কামিল মাদ্রাসাসহ বহু মসজিদ, মাদ্রাসা, খানকাহ, ইসলামি মারকাজের প্রতিষ্ঠাতা, ওলিয়ে কামেল, বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবীদ, লেখক, গভেষক, সংগঠন ও দার্শনিক হযরত মাওলানা আযীযুর রহমান নেছারাবাদী (কায়েদ সাহেব হুজুর)।
ফয়জুল হক ২০০১ সালে এসএসসি, ২০০৩ সালে এইচএসসি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৯ সালে অনার্স (ইতিহাস) ও ২০১০ সালে মাস্টার্স শেষ করেন। উপমহাদেশের ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষার প্রাণকেন্দ্র ঝালকাঠী এনএস কামিল মাদ্রাসায় ভিপি নির্বাচিত হন এবং সেখান থেকে কামিল (ফিক্্হ) শ্রেণিতে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরে ২০১৩ সাল থেকে আইআইইউএম-এ হিস্ট্রি অ্যান্ড সিভিলাইজেশনের ওপর পিএইচডি গবেষণা শুরু করেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালীন ২০০৭-০৮ সেশনে বিএনসিসির (সেনা, নৌ ও বিমান) অ্যাডজুটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বরিশাল বিভাগীয় ছাত্র সমিতির সভাপতি ছিলেন। ব্লাড ডোনেশন, বৃক্ষরোপন, হাইকিং, শীতবস্ত্র বিতরণ, বহির্গমন কর্মসূচি, গার্ড অব অনার, ক্যাপসূল ক্যাম্প, প্রাথমিক চিকিৎসা শিবির, বার্ষিক ক্যাম্প, জাতীয় প্যারেড, বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় দিবসসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সহায়তা প্রদান কর্মকা-ে ফয়জুল হককে নৌপূন্যতা, সম্ভাবনা ও নেতৃত্বের অফুরন্ত গুণাবলীতে ভরপুর দেখা গেছে। সর্বোপরি বিএনসিসি ক্যাডেটের মধ্যে এক উজ্জল নক্ষত্রের নাম ছিল ফয়জুল হক। ছোট বেলা থেকেই ফয়জুল হক অসহায়, মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য নিবেদিত ছিলেন। এসএসসি লেবেল পেরুনোর আগেই ফয়জুল হক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে কাজ করছেন ঝালকাঠি এমএম হক ফাউন্ডেশনে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন এক্সিলেঞ্চ ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ লার্নিং সেন্টার, পাওয়ারসেল ছাত্র সংসদ এবং ছাত্র ফোরাম, সেন্টার ম্যানেজার ইন্টারন্যাশনাল ব্রিটিশ একাডেমি ফর এডুকেশন মালয়েশিয়া, এক্সিকিউটিভ মেম্বর কর্ণফুলি এক্স ক্যাডেট অ্যাসিসিউশন প্রভৃতি। সততা, নিষ্ঠা ও কর্মযোগ্যতা তাকে ক্যাডেটশিপের শিখরে পৌঁছতে সাহায্য করেছে। ফয়জুল হক তার নিজ এলাকা ও চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভন্ন স্থানে সামাজিক কর্মকা-ে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন। দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার লক্ষ্যে নিজেকে উৎসর্গ করতে চান বলেও জানান মালয়েশিয়া স্টুডেন্ট কমিউনিটির পরিচিত মুখ ফয়জুল হক।
নেতৃত্বের সঠিক গুলাবলি, দৃঢ় ও কর্মদ্যোগ মানুষকে কতখানি এগিয়ে যেতে সাহায্য করে তার বাস্তব দৃষ্টান্ত ফয়জুল হক।
মোহাম্মদ আবু নোমান
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন