জনপ্রিয় গায়ক-অভিনেতা তাহসান খান, অভিনেত্রী রাফিয়াথ রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াসহ নয় জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থআত্মসাতের অভিযোগে মামলা হয়েছে। সাদ স্যাম রহমান নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক ৪ ডিসেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে এ মামলা করেন। এ মামলার তদন্তের নথি সম্প্রতি রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় এসেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাজ্জাদুর রহমান বলেছেন, তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া, এই মামলার আসামী। যেহেতু মামলা হয়েছে তারা আমাদের নজরদারিতে আছেন। যে কোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন।
এমন পরিস্থিতি মামলার প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাস থেকে তাহসান বলেন, যখন ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম, তার আগের বছর থেকে আমাকে বারবার অনুরোধ করা হচ্ছিল। কিন্তু আমি রাজি হচ্ছিলাম না। তখন তারা বলল, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে আমরা আছি। র্যাবের চলচ্চিত্র 'অপারেশন সুন্দরবন' সিনেমার সঙ্গে আছি। আমরা আইসিটি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি, তাহলে কেন আপনি রাজি হচ্ছেন না?' অনেক অনুরোধের পর ইভ্যালির সঙ্গে চুক্তি করেছিলাম। কিন্তু, সেই চুক্তি অনুযায়ী কাজ করিনি। তার আগেই মে মাসে চুক্তি বাতিল (টার্মিনেট) করি। চুক্তি অনুযায়ী আমার বিজ্ঞাপন করার কথা ছিল। কিন্তু, আমি বিজ্ঞাপন করিনি। এর আগে দুটো লাইভ করে অনেক অভিযোগ পাচ্ছিলাম। তাই তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করি।
তিনি আরও বলেন, সারাবিশ্বের অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের অসংখ্য ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর আছে। তাদের ওপর প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডের দায়ভার আসে না, কারণ তারা শুধু প্রচারক। কোম্পানি যখন সমস্যা করবে তখন তারা সরে যাবে। প্রচারণার দায়িত্ব পালন করা কোনোভাবেই অপরাধ নয়। আর যে কোনো মুহূর্তে গ্রেফতার বা নজরদারি বলতে কী বোঝানো হচ্ছে? যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয় তাদের তো নজরে রাখতেই হয়। তাই বলে এমন শিরোনাম কাম্য নয়। আমি মানহানি মামলা করব এসব নিয়ে।
অভিনেত্রী মিথিলা বলেন, অন্যদের কাছ থেকে মামলার বিষয়টি জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে কী বলা উচিত বুঝতে পারছি না। আমি খুবই ব্যথিত। আমি মানুষদের দোষ দিচ্ছি না। কারণ অনেক মানুষই এটার ভুক্তভোগী হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমি নিজেও একজন ভুক্তভোগী। আমার সঙ্গেও প্রতারণা হয়েছে। তাদের এই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে আগে থেকে অবগত ছিলাম না। ইভ্যালির সঙ্গে জড়িত হওয়ার এক মাস পর থেকে এই প্রতিষ্ঠান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেই। সবকিছু মিলিয়ে আমি ব্যথিত। যিনি মামলা করেছেন তার মতো আমিও একজন ভুক্তভোগী। এর চেয়ে বেশি কিছু আমার বলার নেই।
অন্যদিকে আরেক অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া বলেন, হয়রানি করার জন্যই এ মামলা করা হয়েছে। কেন, কী জন্য হয়রানি সেটা তো আমি জানি না। আর থানা পুলিশ বলেছে, তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে আমার সম্পৃক্ততা আছে কিনা। আমি শিউর উনারা আমার সম্পৃক্ততা পাবে না।
শবনম ফারিয়া আরও বলেন, মামলায় আমাকে যে কয়েকটা অপরাধ দেখানো হয়েছে সেগুলোর সঙ্গে আমার কাজের কোনও মিল নেই। আর আমি এখনও ইভ্যালি থেকে এক টাকাও পাই না। যে অভিযোগ করেছে সেগুলোর সঙ্গে আমি সম্পৃক্ত না। আমি কখনো প্রমোশন করি নাই। বেতনের টাকা নিয়ে আমি প্রমোশন করব না। চাকরি নেওয়ার সময়ই বলেছি।
তিনি যোগ করে বলেন, ইভ্যালি নিয়ে আমি ফেসবুকে কোনো রকম পোস্ট শেয়ার করিনি। কারণ আমি জয়েন করতে করতেই ওদের ঝামেলা শুরু হয়ে যায়। আমি কোনো কাজই করতে পারিনি তাদের সঙ্গে। প্রমোশন না করার আরও একটি কারণ, ওদের সঙ্গে আমার কথা ছিল আমি সামনে কোনো কাজ করব না। পেছনে থেকে অফিশিয়াল কাজ করব।
মামলায় অন্য আসামিরা হচ্ছেন গ্রেফতার হওয়া ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল, তার স্ত্রী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন, আকাশ, আরিফ, তাহের ও মো. আবু তাইশ কায়েস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন