নেছারাবাদে বিদ্যালয়ের সামনে সড়ক পাড় হতে গিয়ে মাইসা ইসলাম (৯) নামে চতুর্থ শ্রেণীর এক শিশু শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে স্বরূপকাঠি আটঘর কুড়িয়ানা সড়কে আকলম মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় সামনে সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাইসা আকলম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী।
ঘটনার পর দুপুরের দিকে মাইসার পিতা মিজান ফকির বলেন, মাইসা সকালে স্কুলে যাওয়ার জন্য বই খাতা নিয়ে বের হয়। কিছুক্ষণ পরে জানতে পারি, মাইসা ইজি বাইকের নিচে চাপা পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। তড়িঘড়ি করে তাকে উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় মাইসার পিতা গাড়ী চালকের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি করেছে। মাইসা স্বরূপকাঠি পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের ফকির বাড়ীর মিজান ফকিরের মেয়ে। মিজান পেশায় নার্সারির দিন মজুর।
এদিকে ঘটনার সাথে সাথে সড়ক অবরোধ করে সড়ক আটকে রাখে আকলম মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘটনার দিন সকালে মাইসা সড়ক পার হয়ে বিদ্যালয় গেটে প্রবেশ করতে ছিল। এমন সময় স্বরূপকাঠি থেকে একটি দ্রুতগামী ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক এসে মাইসাকে সজোরে পিছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে মাইসা রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। পরে মাইসাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র ও পুলিশ এসে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করলে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ তুলে নেয়। পরে ওই সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
সকালে নেছারাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক মো: তাজেল বলেন, আমি নিহত মাইসার বাড়ীতে আছি। এখন পর্যন্ত কেহ কোন অভিযোগ দেয়নি।
এ দিকে এ দুর্ঘটনায় মাইসার পরিবার পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ বা মামলা দেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে, নেছারাবাদ থানার ওসি আবির মোহাম্মদ হোসেন জানান, আমার জানা নেই। তবে পরিবারের পক্ষ থেকে যে রকম শাস্তির দাবি করা হবে আইনগতভাবে পুলিশের পক্ষ থেকে তেমনি ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।
বিকেলে মাইসার স্কুলের প্রধান শিক্ষক এস,এম জাকির হোসেন জানান, এ ঘটনায় মেয়ের পক্ষ থেকে মেয়ের পিতা সমজায় গিয়েছেন। এখন স্বরূপকাঠি পৌরসভার মেয়র মহোদয়ের অনুরোধে ছাত্রী মাইাসার লাশ দাফন করার জন্য পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিতে পিরোজপুরে যাচ্ছি।
তবে এ বিষয়টি নিয়ে মেয়ের পিতার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
মাইসার ওয়ার্ডের ৫নং ওয়ার্ড কমিশনার কাজী ওহিদুজ্জামান বলেন, মেয়ের পরিবার খুবই সাধারন। অপরদিকে ইজিবাইক চালক পরিবারও খুবই গরীব। তাই এ মর্মে মেয়ের পরিবার কোন ঝামেলায় যেতে চাইছেন না। তাই মেয়ের পিতা থানায় একটি কাগজ দিয়েছেন। মাইসার পিতা মিজান ফকির মেয়ের লাশ দাফনের জন্য পিরোজপুর ডিসি মহোদয়ের অনুমতি নিতে কয়েকজন মিলে পিরোজপুরে গেছেন।
স্বরূপকাঠি পৌর মেয়র গোলাম কবির জানান শুনেছি, মেয়ের পিতার পক্ষ থেকে একটা সমঝোতা হয়েছে। এখন লাশ দাফনের জন্য মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েকজন স্বজন এবং মাইসার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন, পিরোজপুর জেলা প্রশাসকের কাছে অনুমতি নেয়ার জন্য পিরোজপুরে গেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন