দেশের পর্যটন খাতে লোকসান কাটিয়ে আবারো আশার আলো সঞ্চারিত হয়েছে। পর্যটন শহর কক্সবাজার শহরসহ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক পর্যটক সমাগম হচ্ছে। এতে করে পর্যটন সংশ্লিষ্ট অর্থনীতি লোকসান কাটিয়ে ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। বিগত দুই বছর করোনাকালীন সময়ে পর্যটন মৌসুমেও হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান গেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়।
আগামী শুক্র-শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির সাথে রয়েছে বিজয় দিবসের অতিরিক্ত ছুটি। এখন করোনা নেই, চমৎকার আবহাওয়া। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষাও শেষ। এখনই কক্সবাজারে বেড়ানোর সুযোগ। এই সুযোগে সব শ্রেণী-পেশার পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণে আসছেন। বিজয় দিবসের এই ছুটিতে কক্সবাজারে মৌসুমের সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে হোটেল-মোটেল কর্তৃপক্ষ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই ব্যাপক পর্যটক সামাল দিতে নড়েচড়ে বসেছেন। হোটেল মোটেল মালিক সমিতি কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের সেবায় তাদের তদারকি বাড়িয়েছেন। নজরদারি বাড়িয়েছে টুরিস্ট পুলিশ এবং সার্বক্ষণিক সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন সৈকতের পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
পর্যটন জোন কলাতলীর হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস গুলোতে খবর নিয়ে জানা গেছে বিজয় দিবস উপলক্ষে ছুটিতে হোটেল-মোটেলগুলোর প্রায় ৮০ ভাগ অগ্রিম বুকড হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে অনেক পর্যটক এসে গেছেন কক্সবাজারে। তারা বিজয় দিবসের আনন্দ উদযাপন করবেন কক্সবাজার সৈকতে।
গতকাল দেখা গেছে, সৈকতের বিনোদন পয়েন্টগুলোতে শত শত ছাতা-চেয়ার সাজিয়ে পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত কিটকট ব্যবসায়ীরা। বিভিন্ন পয়েন্টে টিউব ও স্পিডবোট দিয়ে পর্যটকদের সাগরে গোসল করতে এবং সাঁতার কাটতে সহযোগিতা দিয়ে আনন্দ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
টুয়াক নেতা আনোয়ার কামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, পর্যটক ভালই আছেন। তবে কক্সবাজার শহরের রাস্তাঘাটের দুরবস্থায় পর্যটকদের দুর্ভাগও কম হচ্ছে না।
পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মনে করছেন, এতে একদিকে যেমন চাঙ্গা হচ্ছে কক্সবাজারের পর্যটনকেন্দ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনীতি। একই কারণে অতীতের লোকসান কাটিয়ে উঠার আশা করছেন তারা।
হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির নেতা আলহাজ্ব আবুল কাশেম সিকদার বলেন, বিজয় দিবস উপলক্ষে সাপ্তাহিক ছুটির সাথে অতিরিক্ত ছুটিতে কক্সবাজারে ব্যাপক পর্যটক এসেছেন এবং আসছেন। এই পর্যটক সামাল দিতে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সাথে হোটেল মোটেল মালিক সমিতি ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে তারকা হোটেল সিগালের সিইউ ইমরুল হাসান রুমি বলেন, পর্যটক ভালোই আসছেন। তবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়রানীর বিষয়টি নজরে আনা দরকার।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের এসপি জিল্লুর রহমান বলেন, কক্সবাজার বিশ্বের অন্যতম উন্নত পর্যটন শহরে পরিণত হতে যাচ্ছে। সেই চিন্তাতেই কক্সবাজার উন্নয়নে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সেই মানের সেবা পর্যটকরা না পেলে পর্যটকরা কক্সবাজার বিমুখ হতে পারেন। তিনি বলেন টুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিকভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তা বিধানে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে।
এদিকে বরাবরের মতোই বিনোদন কেন্দ্র গুলোতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি শান্ত থাকায় দেশি-বিদেশি পর্যটকরা কক্সবাজার ভ্রমণ করতে আনন্দ উপভোগ করে থাকেন।
এছাড়া অতীতের চেয়ে কক্সবাজার যাতায়াত অনেক আরামদায়ক হয়েছে এখন। সড়কপথে যেমন পরিবহন সংস্থায় আরামদায়ক গাড়ি যুক্ত হয়েছে। তেমনি ভাবে আকাশপথে ও বেড়েছে বিমানের ফ্লাইট সংখ্যা।
এদিকে ব্যাপক পর্যটক আগমনের সুযোগে কক্সবাজারের বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটক হয়রানি খবরও জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন হোটেল এবং পরিবহন সংস্থাগুলো পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন। এমনকি হোটেল-রেস্টুরেন্টে কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন কয়েক জন পর্যটক।
এদিকে কক্সবাজার শহরের রাস্তাঘাট সংস্কার কাজ চলছে রাত দিন। উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও কক্সবাজার পৌরসভা সূত্রমতে চলমান উন্নয়ন কাজ খুব দ্রুত শেষ হবে। এতে করে কক্সবাজার হবে একটি উন্নত এবং পরিচ্ছন্ন শহর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন