এ বছরের মার্চেই নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিল বাংলাদেশ দল। সেবার সীমিত ওভারের ম্যাচ খেলতে গিয়ে ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হয়েছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। তবে এবারের সফরের আগে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেটের সঙ্গে আলোচনা করে কোয়ারেন্টিনের সময় করা হয়েছিল সাত দিন। কিন্তু বাংলাদেশ ক্যাম্পে করোনাভাইরাস হানা দেওয়ায় দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। শোনা যাচ্ছিল বাতিল হতে পারে এই সিরিজ। এ নিয়ে গতকাল জরুরি বৈঠকে বসেছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। সভা শেষে বোর্ড প্রধান নাজমুল হাসান পাপন জানিয়েছেন, ২১ ডিসেম্বর নির্ধারণ হবে সিরিজের ভাগ্য।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট শুরু হওয়া কথা ১ জানুয়ারি। কোয়ারেন্টিনের নিয়ম মেনে এতদিনে অনুশীলনে নেমে পড়ার কথা মুমিনুল হকদের। কিন্তু স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং কয়েকজন ক্রিকেটার আক্রান্ত এক ব্যক্তির সংস্পর্শে যাওয়ায় তাদের রাখা হয়েছে আইসোলেশনে। বাকিদের দুই দফা করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসার পরও নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য অধিদফতর ক্রিকেটারদের অনুশীলন ‘সাময়িক স্থগিত’ করেছে। এই অবস্থায় ক্রিকেটাররা নাকি দেশে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন। তাই গতকাল জরুরি বৈঠকে বসেছিল বিসিবি। এই বৈঠকে ছিলেন বিসিবি প্রধান পাপন। বৈঠক শেষে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সিরিজ বাতিল হবে কিনা জানা যাবে ২১ ডিসেম্বর, ‘বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডে দুই টেস্ট খেলবে কিনা সেটা চূড়ান্ত হবে ২১ ডিসেম্বর। সেদিন বাংলাদেশ দলের কোভিড টেস্ট হবে। কোভিড টেস্টে সবাই নেগেটিভ হলে বাংলাদেশ সিরিজ চালিয়ে যাবে। যদি বাংলাদেশের কারও পজিটিভ আসে তাহলে নিউজিল্যান্ডে কোয়ারেন্টিন বাড়বে। তখন সিরিজ খেলবে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।’
সিরিজ শুরু হতে বেশি দিন বাকি নেই। অথচ অনুশীলন তো দূরে থাক, ক্রিকেটাররা এখনও একসঙ্গেই হতে পারেননি। এই অবস্থায় মানসিকভাবেও বিপর্যস্ত মুমিনুলরা। তাছাড়া প্রস্তুতির ঘাটতি তো থেকেই যাচ্ছে। তাই সিরিজ বাতিলের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। যদিও এখনই সিরিজ বাতিল করার অবস্থা আসেনি বলে জানালেন পাপন, ‘আমাদের সঙ্গে খেলার পর ওদের (নিউজিল্যান্ড) অস্ট্রেলিয়া সিরিজ রয়েছে। তবে এখনই সিরিজ বাতিলের কোনও সুযোগ নেই।’
আগামী ২১ তারিখ নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের করোনা রিপোর্ট হাতে পাবে সংশ্লিষ্টরা। এরপরেই মূলত বোঝা যাবে সেই সিরিজের ভাগ্য। কোয়ারেন্টিন পর্ব বাড়বে নাকি সিরিজের সূচিই পরিবর্তিত হবে, সেটা জানা যাবে তখন। কোনো কারণে যদি এই টেস্টের সময় সূচি পিছিয়ে যায়, সেক্ষেত্রেও বিপিএল আয়োজন করতে আগ্রহী বিসিবি। এক্ষেত্রে, নিউজিল্যান্ডে অবস্থানরত ক্রিকেটারদের ছাড়াই শুরু হবে বিপিএল। নিউজিল্যান্ড সিরিজ শেষ করে তারা দেশে এসে দুই-চারদিন বিশ্রাম নিয়ে বিপিএলে অংশ নেবেন!
এদিকে ফেব্রুয়ারির শেষদিকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ও দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে ঢাকায় আসবে আফগানিস্তান। এই সিরিজের সূচিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। বিপিএল আয়োজনে তাই সময়সীমা খুবই সীমিত বিসিবির। দল বা ভেন্যু কমিয়েও বিপিএল আয়োজন করতে চায় তারা, ‘বিপিএলটা আমাদের দরকার এই কারণে যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আছে আমাদের। এখানে স্থানীয় ক্রিকেটারদের চিহ্নিত করা যায়। বলছি না এখানে ভালো করলেই চলে যাবে এমন না কিন্তু আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সহায়তা করে। আমরা মনে করছি এটা করা উচিত। আমরা এটা কিভাবে করতে পারি? কিভাবে করব, কতটুকু সময় পাবো আমরা যে পরিকল্পনা করেছিলাম সেটা অনুযায়ী নাও হতে পারে। আমাদেরকে ওইখানেও কিছু একটা কাটছাঁট করতে হতে পারে। আমি উদাহরণগুলো বলছি। একটা হতে পারে ওইখানে যারা আছে ওদেরকে বাদ দিয়ে বিপিএল চালু হয়ে যাবে। যারা ওইখানে আছে ওইখান থেকে আসার পরে ওদেরকে ব্রেক দেয়া হবে ২/৪ দিনের। তারপর ওরা যোগ দেবে। বাদ দেয়া বলতে খেলবে না হয়তো কিন্তু ওদের পেমেন্টটা পাবে। আর্থিকভাবে যদি ক্ষতি হয় সেটা আমরা করতে পারি। আমি একটা অপশন বলছি, করবো বলিনি। আরেকটা হতে পারে তিনটা ভেন্যুর জন্য আমাদের ৬ দিন ভ্রমণ আছে। হয়তো ভেন্যু একটা কমালে আমরা দু’দিন সেভ করতে পারি। এটাও একটা সম্ভাবনা। বলছি না। তৃতীয় হচ্ছে ৬ টার জায়গায় ৫টা দল করলে আমরা আবার ৪-৫ দিন সময় পাই। এগুলো নিয়ে আলাপ আলোচনা হচ্ছে। ২১ তারিখে সিদ্ধান্তটা জানার পরে আপনাদের নির্দিষ্ট করে জানাবো।’
বিসিবির প্রাথমিক সূচি অনুযায়ী ২০ জানুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মাঠে গড়ানোর কথা বিপিএল। এদিকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচ চলবে ৯-১৩ জানুয়ারি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন