রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

শীতের সঙ্গে বেড়েছে রোগবালাই হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি

চর্মরোগীর সংখ্যা বেশি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

পৌষের প্রথম সাপ্তাহেই সারাদেশে শীতের প্রকোপ বেড়ে গেছে। ১০টি জেলায় চলছে শৈত্য প্রবাহ চলছে। উত্তরাঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি এলাকা জুড়ে শীতের তীব্রতা ভয়াবহভাবে বেড়ে গেছে। সারাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা কমেছে। বাড়ছে ঠান্ডা, শ্বাসকষ্ট, অ্যালার্জি, চর্মরোগসহ শীতকালীন নানা ধরনের রোগ। ফলে হাসপাতালে ভিড় বেড়েছে রোগীদের। রংপুর, ভোলা, বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। রাজধানী ঢাকার হাসপাতালগুলোতেও একই চিত্র। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শীতজনিত রোগে।

শীতজনিত রোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. জুলিয়া আঞ্জুমান লাকী বলেন, শীতের কারণে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, এজমার রোগী বেড়ে গেছে। আবহাওয়ার পরিবর্তন, বায়ু দূষণসহ অসচেতনার ফলেইেএসব রোগ বেড়ে যায়।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) মেডিসিন বহির্বিভাগে গিয়ে রোগীদের ভিড় দেখা যায়। ৪টি রুমে একাধিক ডাক্তার দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশির ভাগই শিশু। রোগীদের গার্জেন ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শীতে আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে সাধারণত যেসব রোগ দেখা দেয়, সেসব রোগীই তুলনামূলকভাবে বেশি। ঠান্ডা, কাশি, শ্বাসকষ্টের রোগীর সংখ্যা শীতের কারণে বেড়েছে দ্বিগুণ। শীতের কারণে সকাল ৮টার দিকে রোগীর সংখ্যা কম হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ডাক্তারের রুমের সামনে দীর্ঘ লাইন। কোনো চেয়ার ফাঁকা নেই। অনেকে আবার দাঁড়িয়ে রয়েছেন। এখানে চিকিৎসার জন্য ফেনীর সাঁড়াশিয়া থেকে এসেছেন ৬৩ বছর বয়সী আবুল বাশার। এই বৃদ্ধের সমস্যার কথা জানতে চাইলে বলেন, কয়েকদিন ধরে কাশি হচ্ছে। রাতে ঘুমাইতে পারি না। নাক দিয়েও পানি পড়ে। এ কারণে ডাক্তারের কাছে এসেছি চিকিৎসা নিতে। ঠান্ডাজনিত সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন ঝরনা আক্তার। বললেন, শীত আসলেই সমস্যাটা তার বেড়ে যায়। ডাক্তার দেখানো ছাড়া উপায় থাকে না। স্বামীর সঙ্গে এসেছি। পানিতে হাত দিলেই ঠান্ডা লেগে যায়। তার ওপর এখন শীতও বেড়ে গেছে। তাই গত কয়েকদিন ধরে ঠান্ডাটা একটু বেশি লেগেছে। আর কমছে না। ওষুধ খেলাম, ভালো হয়নি। এজন্য এখানে ভালো ডাক্তার দেখাতে আসলাম।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগী ভর্তি হচ্ছেন ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে। রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় চিকিৎসকদের হিমসীম খেতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা জানান, প্রচন্ড শীতে ঠান্ডাজনিত রোগ বেড়ে গেছে। সে জন্যই কয়েকদিন থেকে হাসপাতালে রোগীর চাপ বেশি।
শীতের মৌসুমে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় ভোগেন প্রায় সব বয়সী মানুষই। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আগে এ ধরনের সমস্যা নিয়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী আসলেও এখন সেটা বেড়ে হয়েছে ১২০ থেকে ১৫০ জনের মতো।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে কথা হয় নরসিংদীর রায়পুরা থেকে আসা ১৭ বছর বয়সী তৌফিকুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি জানান ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছি কয়েকদিন ধরে। ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেয়েছি। কিন্তু ঠান্ডা ভালো হয়নি। তাই এখানে আসলাম ভালো ডাক্তার দেখাতে। নাক দিয়ে পানি পড়ে, শুকনো কাশিও হয়।

আমাদের রংপুর প্রতিনিধি জানান, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিদিন কয়েকশ রোগী ঠান্ডাজনিত রোগের চিকিৎসা নিতে আসেন। কেউ কেউ ভর্তি হন আবার অনেকেই বহি:বিভাগ থেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে যাচ্ছেন। ভোগা হাসপাতালে গত কয়েকদিন থেকে প্রতিদিন দুইশ থেকে তিন রোগী ভর্তি হচ্ছেন। সোনিয়া তাবাস্সুম নামে এক গৃহিনী জানান, ৬দিন ধরে মেয়েকে নিয়ে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন। কিন্তু মেয়ের শ্বাসকষ্ট কমছে না।

জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎক ডা. লাকী বলেন, শীতে রোগ বেড়ে যায় আবহাওয়াজনিত কারণে। এ জন্য প্রথমতো সচেতনতা দরকার। এছাড়া প্রাচীন যে পদ্ধতি যেমন গরম চা, আদা এসব খাওয়াও বেশ ভালো। সেইসঙ্গে ধ‚মপান না করা, মাস্ক পরাসহ ঠান্ডা লাগতে পারে এমন কিছু এড়িয়ে চললে এ ধরনের রোগী হ্রাস পাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন