বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, জনগন কোন সরকারকে না চাইলে কোন বিদেশী শক্তিই তাকে রক্ষা করতে পারে না। যখন বিপদ আসবে পুলিশও তখন পাশে থাকবে না। তাই তারেক রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে রাজপথে আন্দোলন গড়ে তুলুন। সাহস করে রাজপথে নামলে নিশিরাতের ভোট চোর সরকারের বিদায় অনিবার্য।
তিনি বলেন, যারা ১০ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে তাদের চোখে এখন ঘুম নাই। মার্কিন সরকার র্যাব সহ কিছু সরকারী কর্মকর্তা ও ব্যক্তিকে কালো তালিকাভ’ক্ত করেছে। আপাতত এই তালিকায় ৬০ জনের নাম আছে শুনে অনেকেই আতংকিত ।সামনে আরো কাদের নাম আসবে তা দেখার অপেক্ষায় জাতি। পদত্যাগী প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওনাকেতো বিদেশে চালান করছিলেন পালাইতে পারছে ? পারেনাই । এতেই বোঝা যায় পালানোর কোন সুযোগই নাই। দেশেই যখন থাকতে হবে তখন ১২ বছরে কৃতকর্মের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চান, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। নাহলে জনগনের আদালতে বিচার হবে নিশিরাতের এই ভোট চোর সরকারের ।
বুধবার দুপুরে জেলা বিএনপির আয়োজনে বগুড়া শহরের নবাব বাড়ী রোডস্থ জেলা কার্যালয়ের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিদাবি ও তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার্থে বিদেশে যেতে দেবেন কিনা স্পষ্ট করে বলুন। না বললে আমরা রাজপথে সরকার পতনের আন্দোলনে নেমে পড়বো এবং সরকারের পতন ঘটিয়েই ঘরে ফিরবো।
জেলা বিএনপির আহবায়ক ও পৌর মেয়র রেজাউল করিম বাদশার সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সদস্য আলী আজগর তালুকদার হেনার পরিচালনায় এই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু। বিশেষ অতিথি হিসেবেবক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক ও সাবেক প্রতিমন্ত্র অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চন্দন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান, বগুড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য গোলাম মোঃ সিরাজ, বগুড়া-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবকদলের কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক আব্দুল কাদির ভঁ’ইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক মামুন হাসান। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য দেন ফজলুল বারী তালুকদার বেলাল, জয়নাল আবেদীন চান , এ্যাড সাইফুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান বকুল , মহিলাদল সভানেত্রী লাভলী রহমান প্রমুখ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু বলেন , রাজপথেই ফয়সালা হবে । সেই পথেই আমরা অগ্রসর হচ্ছি ।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সাংগাঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়াকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে আটকে রেখেছে সরকার। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। যদি সরকার তা না করে তবে বগুড়া থেকেই শুরু হবে সরকার পতনের আন্দোলন। কারন এই বগুড়ার কৃতি সন্তান জিয়াউর রহমান কালুর ঘাট থেকে মহান স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়েছিলেন,তার সহধর্মিনী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছে এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বে হাসিনা সরকারের পতন হবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা এ্যাড, মাহবুবুর রহমান বলেন , একজন ৭৮ বছর বয়সী নারী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতির স্ত্রী হিসেবে বেগম খালেদা জিয়া জামিন ও নিজের পছন্দের স্থানে চিকিৎসা সেবা নেবার হকদার । এই অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করার কোন সুযোগ কারো নেই ।
ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন বলেন, পুরো জাতির মনোযোগ এখন এভার কেয়ার হাসপাতালের দিকে । সেখানেই বন্দী আছেন মানবতা ও গণতন্ত্রের মা।
বেলা ১২ টায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে জেলার প্রতিটি উপজেলা ও পৌর এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে বিএনপি ও এর অঙ্গদলের হাজার হাজার নেতাকর্মী যোগ দেন। এসমাবেশের কারনে শহরের বিভিন্ন সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। যানজট নিয়ন্ত্রনে পুলিশকে হিমশিম খেতে হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন