রোববার, ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে জুনে

৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতু ক্লোজিং সেগমেন্ট ঢালাইয়ের মাধ্যমে যুক্ত হল দু’পাড়

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে কঁচা নদীর ওপর ৮ম চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর ক্লোজিং সেগমেন্ট ঢালাই সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দুটি বিভাগের মধ্যে সরাসরি সড়ক সংযোগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার শেষ রাতে সেতুটির সুপার স্ট্রাকচারের সবশেষ অংশের ঢালাইয়ের মধ্যে দিয়ে মূল প্রকল্পটির ৮৫% কাজ সম্পন্ন হল। একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ করোনা মহামারী সঙ্কটে নির্মাণ কাজ পিছিয়ে পড়লেও আগামী জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে বলে সড়ক অধিদফতর আশা করছে।

প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এ সেতুটির মাধ্যমে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের সাথে ল²ীপুর-ভোলা হয়ে মোংলা বন্দর ছাড়াও বরিশাল, চট্টগ্রাম ও খুলনা বিভাগের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ সহজতর হবে। ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ওপর যানবাহনের চাপ অনেকটাই হ্রাস পাবে। পাশাপাশি ৩টি উপক‚লীয় বিভাগের সড়ক পথের দূরত্বও ৩০-৫০ ভাগ হ্রাস পাবে বলে জানা গেছে।
প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ৮ম এ মৈত্রী সেতুটির জন্য চীন সরকার ৬৫৪ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেছে। ২০১৬ সালের ১ নভেম্বর চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরকালে প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট বক্স গার্ডার ধরনের এ সেতুটি নির্মাণে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু ডিপিপি প্রস্তুতসহ একনেকে অনুমোদনে বিলম্বের কারণে ভ‚মি অধিগ্রহণও পিছিয়ে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ শুরুতেই বিলম্ব ঘটে। সেতুটির নকশা প্রণয়ন থেকে নির্মাণ কাজ সবই চীনা প্রকৌশলীদের দ্বারা সম্পন্ন হচ্ছে।
কঁচা নদীর ওপর প্রায় ৪৫ ফুট প্রসস্ত ও দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সেতুটির নদীর মূল অংশে ৯৯৮ মিটারকে উভয় প্রান্তে আরো ৪৯৫ মিটার ভায়াডাক্টের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে। সেতুটির দুই প্রান্তে ১ হাজার ৪৬৭ মিটার সংযোগ সড়কসহ পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখতে আরো ২টি সেতু ও বক্স কালভার্ট নির্মিত হয়েছে। এ জন্য ১৩.৩১ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করতে হলেও সেতুটির পিরোজপুর প্রান্তে বাইপাস সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে মহাসড়কে সংযুক্ত করার বিষয়টি অনিশ্চতার মধ্যে রয়েছে। আগামীতে শহরের যানজট কোন পর্যায়ে পৌঁছাবে তা নিয়ে শঙ্কিত সড়ক বিশেষজ্ঞরা। তবে পিরোজপুর বাইপাস নির্মাণের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন হলেও মাত্র সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মাণে কোন উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়নি।
৯টি স্প্যান ও ৮টি পিয়ার বিশিষ্ট এ সেতুটি সর্বোচ্চ জোয়ারের চেয়ে ৬০ ফুট উচ্চতায় নির্মিত হচ্ছে। ফলে সেতুটির তলদেশ দিয়ে চট্টগ্রাম ও বরিশাল থেকে মোংলা সমুদ্র বন্দরসহ খুলনা নদী বন্দরের পণ্য ও জ্বালানিবাহী বড় মাপের নৌযানের পাশাপাশি নৌবাহিনীর ফ্রিগেটসহ যেকোন ধরনের যুদ্ধ জাহাজ চলাচলেও কোন প্রতিবন্ধকতা থাকবে না। কঁচা নদীর মধ্যভাগে সেতুটির তলদেশে সবচেয়ে বড় স্প্যানটিতে ১২২ মিটার এলাকা নৌযান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
এক হাজার ৪৯৫ মিটার দীর্ঘ সেতুটির ৯২টি পাইল ও ১০টি পাইলক্যাপ ছাড়াও ভায়াডাক্টসহ সেতুর সব পাইল নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে সুপার স্ট্রাকচারের বক্স গার্ডারের ঢালাই সম্পন্নের মাধ্যমে। মূল সেতুর ১০টি পিয়ার এবং ভায়াডাক্টের ১৫টি পিয়ারও সম্পন্ন হয়েছে। সেতুটির উভয় প্রান্তে প্রায় ৬শ’ মিটার নদী শাসনসহ টোল প্লাজার কাজও চলছে। একইসাথে সংযোগ সড়কের ‘ওয়ারিং কোর্স’ সম্পন্ন করে আগামী মাসের মধ্যেই বিটুমিনাস কার্পেটিং কাজ শুরু হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
Mostafa Kamal ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৭ এএম says : 0
সেতুটির কাজ শেষ েহলে এলাকাবাসী অনেক উপকৃত হবে। ধন্যবাদ কর্তৃপক্ষকে।
Total Reply(0)
মিফতাহুল জান্নাত ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৮ এএম says : 0
বরিশালবাসীর পক্ষ থেকে সরকারকে ধন্যবাদ।
Total Reply(0)
সেই ডায়েরী ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৮ এএম says : 0
তবে েএকটাই দাবি কাজ যেন সময় মতো শেষ হয়।
Total Reply(0)
হুসাইন আহমেদ হেলাল ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৬:৩৯ এএম says : 0
আলহামদুলিল্লাহ, দেশ উন্নয়নের মহাসড়কে এগিয়ে চলেছে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন