শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

গারো পাহাড়ে বন্যহাতির আবারো তান্ডব অব্যাহত

‘ধান খেয়ে সাবাড় করে, চোখ পড়েছে এখন সরিষা ও বোরো বীজতলা ক্ষেতের দিকে’

ঝিনাইগাতী(শেরপুর) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২২, ২:৩৯ পিএম

গারো পাহাড়ে ‘ক্ষেতের আমন ধান খেয়ে সাবাড় করে বন্যহাতির চোখ পড়েছে এখন বোরো বীজতলা ও সরিষা খেতে! ধান খাওয়ায় চাল কিনে খেতে হচ্ছে অনেক পরিবারকে। প্রতি দিন রাতে সরিষা খেতে হানা দিচ্ছে বন্যহাতি। সপ্তাহকাল ধরে হাতি নেমে আসছে লোকালয়ে। রাতদিন পাহাড়া দিচ্ছে কৃষকরা। রাতে আগুন জ্বালিয়ে ক্ষেতেই পড়ে থাকছে কৃষক।’ এ ভাবেই ক্ষোভে কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের গারো পাহাড়ের পানিহাটা গ্রামের নুর বানু বেগম। খাবারের সন্ধানে সপ্তাহকাল ধরে হাতিরপাল ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে এসে পানিহাটার সরিষা খেত খেয়ে ও পায়ে পিষে করছে ধ্বংস। সোমবার (৩ জানুয়ারি) সরেজমিনে দেখা গেছে, পানিহাটার ভারত অংশের প্রায় ২২/২৩ টি হাতির পাল। অপরদিকে পানিহাটার বাংলাদেশ অংশে ২০-২৫ জন স্থানীয়রা মাটির ঢিলা ও গাছের ভাঙ্গা ডাল হাতির দিকে ছুড়ে মারছে। ঢিল ছোঁড়ায় হাতিরপাল চিৎকার করে রাগান্বিত হয়ে তেড়ে আসছে। স্থানীয়রা দৌড়ে পিছিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়রা যখন হাতির ওপর ঢিল ছুড়ছে তখন হাতি পিছু হটছে। হাতি ও মানুষের মুখোমুখি অবস্থান যেনো ’চোর পুলিশ খেলা’ চলছে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

এভাবে উত্যক্ত কেরছেন কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষকরা জানান, হাতিরপালকে না তাড়ালে, রাতে সরিষা ক্ষেত খেয়ে সাবাড় করে ফেলবে। বাড়িতেও হামলা করতে পারে। তাই আমরা গ্রামবাসী মিলে হাতি তাড়াচ্ছি।

কৃষক আবদুর রশিদ বলেন, দশ কাঠা (৫০ শতাংশ) জমিতে ধান লাগিয়ে ছিলাম। হাতি খেয়ে ফেলায় একমুঠো ধানও পাইনি। সব ধান খেয়ে সাবাড় করেছে। এখন সরিষা ও বোরো বীজতলার খেত ধ্বংস করছে। ফসল ও জীবন বাঁচাতেই দলবেঁধে রাতে পাহাড়ায় থাকছি। জানা গেছে, গত সপ্তাহকাল ধরে বন্যহাতি অবস্থান করছে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা মেঘালয়ের চেরেংপাড়া পাহাড়ে। হাতির পালটি ’পানিহাটায়’ নিয়মিত নেমে অসছে আবাদি জমি ও লোকালয়ে। ডিসেম্বরে পানিহাটার কৃষক হাসমত আলীর বাড়িঘর ভাংচুর করেছে। রাতের আধাঁরে তান্ডবে হাসমত আলী, তার স্ত্রী তিন ছেলেসহ জীবন রক্ষা করে পার্শ্ববর্তী বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে। হাতি তান্ড চালিয়ে বসতঘরের বারান্দা ভেঙে চুরমার করে ফেলে।

নভেম্বরে হাতির ’পানিহাটায়’ বিনষ্ট করেছে ৪০-৪৫ একর জমির পাকা আমন ধান। পানিহাটার এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিমের সভাপতি যোসেফ মারাক বলেন, হাতি পালবেঁধে আসে লোকালয়ে। পাহাড়াতেও রক্ষা হয় না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চান তিনি।
শেরপুর বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা সুমন সরকার বলেন, বন্যহাতির আক্রমণ থেকে জানমাল বাঁচাতে সচেতন আছি। নিয়মিত টহল ও জনসচেতনতামূলক সভা করা হচ্ছে। হাতিপ্রবণ এলাকায় বসবাসরত জনসাধারণকে হাতির আক্রমণ ঠেকাতে বন্যহাতির দলকে উত্যক্ত না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন