বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজে নিউরোসার্জারী বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে এ বিষয়ে লেখা পড়া যেমনি বন্ধের পথে, তেমনি এ অঞ্চলের সর্ববৃহত হাসপাতালটিতেও স্নায়ুবিক শল্যচিকিৎসা বন্ধ গত বছরাধীককাল। ফলে গোটা দক্ষিণাঞ্চলে স্নায়ু বৈকল্য সহ এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসার তেমন কোন সুযোগ আর অবশিষ্ট নেই। অত্যন্ত স্পর্ষকাতর এ চিকিৎসার জন্য রোগীদের ঢাকায় ছুটতে হচ্ছে। তবে গরীব অসহায় রোগীদের পক্ষে তা সম্ভব না হওয়ায় তাদের চিকিৎসার নুন্যতম কোন সুযোগ নেই।
দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠান, বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বছর পনের আগে জেরনারেল সার্জরীর সাথে মাত্র ১০ শয্যার নিউরোসার্জরী ইউনিট চালু করা হলেও চিকিৎসক সংকটে ধুকে ধুকে চলছিল এখানে বিশষায়িত এ চিকিৎসা ব্যাবস্থা। কিন্তু গত বছর তিনেক ধরে মেডিকেল কলেজটির নিউরোসার্জারী বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদেই কোন শিক্ষক না থাকায় কলেজের শিক্ষা ব্যবস্থার মত হাসপাতালটিতেও চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে। হাসপাতাল কৃতপক্ষ বার্ন ইউনিটের মত নিউরো সার্জারী ইউনিটটি বন্ধ ঘোষনা না করলেও অত্যন্ত স্পর্ষকাতর ও বিশেষায়িত এ ইউনিটে অধুনিক বিজ্ঞানসম্মত চিকিৎসা ব্যবস্থা অনুপস্থিত। এমনকি কলেজটির জেনারেল সার্জারী, জেনারেল/ক্লিনিক্যাল নিউরোসার্জারীতে পর্যন্ত কোন শিক্ষক না থাকায় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মত হাসপাতালেও স্পর্ষকাতর এ চিকিৎসা ব্যাবস্থা প্রায় বন্ধ। এমনকি কলেজটির স্পাইনসার্জারী বিভাগে সহকারী অধ্যাপকের একজন শিক্ষকের পদ থাকলেও সেপদে কোন জনবল নেই। ফলে কোনভাবেই কলেজটিতে ¯œায়ুরোগ সংক্রান্ত পাঠদানের মত হাসপাতালটিতেও চিকিৎসা ব্যবস্থা সচল রাখা সম্ভব হচ্ছেনা।
কলেজের বার্ন ও প্লস্টিক সার্জারী বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় হাসপাতালটিতে আগুনে পোড়া রোগীদের চিকিৎসা বন্ধ ছিল গত দেড় বছর। গত মাসে ঝালকাঠীতে একটি ‘এমভি অভিযান-১০’ নৌযানে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় এ হাসপাতালে অগ্নিদগ্ধ প্রায় ৭০ জন রোগী ভর্তি করা হলেও ঢাকা থেকে বিশেষ মেডিকেল টিম পাঠিয়ে এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু করতে হয়। তবে অতি সম্প্রতি বার্ন ইউনিটে একজন সহযোগী অধ্যাপক পদায়ন হবার পরে দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বার্ন ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হয়েছে।
এসব বিষয়ে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলামের সাথে বুধবার দুপুরে আলাপ করা হলে তিনি চিকিৎসকের অভাবে হাসপাতালটির নিউরোসার্জারী বিভাগে চিকিৎসা ব্যাবস্থা বিপন্নের কথা স্বীকার করে বলেন, চিকিৎসক সংকটের কথা আমরা বার বারই অধিদপ্তরকে জানিয়ে আসছি। এরই প্রেক্ষিতে দিন দুয়েক আগে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জারী বিভাগে একজন সহযোগী অধ্যাপক পদায়ন করা হয়েছে বলে তিনি জানতে পেরেছেন। তবে তিনি এখনো যোগ দেননি। যদিও এ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপকের দুটি পদ রয়েছে। তবে সহযোগী অধ্যাপক যোগ দিলেও সংকটের কিছুটা সুরাহা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে সহকারী অধ্যাপক পদেও যে কাউকে পদায়নের প্রয়োজনীয়তার কথাও জানান হাসপাতাল পরিচালক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন