রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাঙ্গন

বিদায় হাওয়ায় মলিন ক্যাম্পাস

প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজ একটু আগেই ক্যাম্পাসে এসেছে তৌহিদ হাসান পাভেল আর আরিফুল ইসলাম নাইম। ক্যাম্পাসে এখনও কোলাহল তৈরি হয়নি। তারা চুপচাপ মাঠে বসে আছে। পাভেল হঠাৎ সাদ্দামকে লক্ষ্য করে ডেকে উঠল, মূল ফটক দিয়ে সকাল সকাল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করছিল সে। বন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে মাঠের দিকে এগিয়ে গেল সাদ্দাম। “ভালো লাগছিল না তাই আগেই চলে আসলাম” কেমন যেন একটা ভাঙা গলায় কথাটা বলতে বলতে মাঠে সবার সাথে বসে পরলো সাদ্দাম। সবাই আবার নীরব। বেশ কিছু সময় পর পাভেল মৃদু স্বরে বলে উঠল, “শেষ ক্লাসের কষ্ট আর প্রথম ক্লাসের আনন্দের ভিতর একটা অন্যরকম মিল আছে তাই না ?”
সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এরা। এদের আনমনের কারণ আজ তাদের ক্যাম্পাস জীবনের শেষ ক্লাস। শেষ ক্লাসের পর শিক্ষা সমাপনী উৎসবে মেতে উঠবে এরা সবাই। “বিদায় হাওয়ার বেদিতে আবির ধূলি, মোরা ২৩-এর স্বপ্নকুড়ি” এই সেøাগানে ফার্মেসি বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সমাপনী উৎসবের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটবে তাদের দীর্ঘ চার বছরের শিক্ষা জীবনের। উৎসবের দিন সকাল থেকেই ক্যাম্পাসের চারপাশে সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশের। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের এই শিক্ষা সমাপনী উৎসবের শুরু হয় আবির ছোড়াছুড়ি মধ্যদিয়ে। আবিরের রঙে রঙিন হয়ে উঠে ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাস জীবনের শেষ স্মৃতিটুকু ফ্রেমে বন্দি করার জন্য সবাই মেতে উঠে সেলফি উৎসবে। আবেগে আপ্লুত বিদায়ী শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সবুজ অতীতের স্মৃতিচারণ করে বলেন, “৪ নভেম্বর ২০১২ ছিল আমাদের ক্যাম্পাস জীবনের প্রথম দিন। এরপর ধীরে ধীরে শুরু হয় খুনসুটি, আড্ডা, হৈ চৈ। চোখের সামনে আজও ভেসে ওঠে সেই রঙিন দিনগুলো। দেখতে দেখতে চার বছর যে কিভাবে কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না।”
কান্না বিজড়িত কণ্ঠে ইসরাক ইলা জানান, “হয়তো তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে ভার্চুয়াল সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সবার সাথে যোগাযোগ থাকবে কিন্তু একসাথে সেই আড্ডা, সেই গান, একটু দুষ্টামি কিংবা অতি সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া আর হবে না।
ফারজানা সাথী তার আবেগের বহিঃপ্রকাশ ঘটান এইভাবে, “বুক ভরা স্বপ্ন আর চোখ জড়ানো আলোর উদ্দীপনা নিয়ে প্রাণ প্রিয় গণবিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার যাত্রা শুরু করেছিলাম আমরা। আজ তার শেষ প্রান্তে এসে আমরা তিলে তিলে টের পাচ্ছি বন্ধু হিসেবে আমরা সবাই পরস্পরের প্রতি কতটা আন্তরিক ছিলাম, কতটা গভীর ছিল আমাদের ভালোবাসা। এই উৎসবের মধ্যদিয়ে গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটলেও অটুট থাকবে আমাদের বন্ধুত্ব।”
শিক্ষা জীবন শেষে কর্মব্যস্ত বাস্তবতায় প্রবেশ করলেও চার বছরের বন্ধুত্ব, প্রিয় ক্যাম্পাস, প্রিয় মুখগুলো অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ভালোবাসার গল্পে সারা জীবনের সাথী হয়ে থাকবে। তবে এই বিদায় চিরস্থায়ী না, কেননা ক্যাম্পাসের সাথে ভালোবাসার যে সম্পর্ক তা কখনো অস্বীকার করার নয়।
ষ তাজবিদুল ইসলাম

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন