শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

বিনোদন প্রতিদিন

নান্দনিক স্থাপত্যশৈলীর মসজিদটিই এখন জৌলুস হারানো এফডিসির দর্শনীয় স্থান

বিনোদন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৪ এএম

এফডিসির পশ্চিম দিকের শেষ প্রান্তে দেয়াল ঘেঁষে এক সময় একটি মসজিদ ছিল। সাথেই অত্যন্ত নান্দনিক ও সুদৃশ্য আলোঝলমলে ঝর্ণা স্পট থাকলেও মসজিদটি ছিল খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায়। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও অজু করার জায়গা, মসজিদের ভেতরের স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে, বৃষ্টি হলে মসজিদের সামনে হাঁটু সমান পানি জমে থাকা এবং তা পেরিয়ে মসজিদে প্রবেশ করার মতো নানা সমস্যার মধ্যে এফডিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারি থেকে শুরু করে অভিনেতা-কলাকুশলী এবং এখানে আগতদের নামাজ আদায় করতে হতো। মসজিদটি সংস্কারে এফডিসি কর্তৃপক্ষকে বহু বছর তাগিদ দেয়া হলেও করব-করছি বলে আর করা হয়নি। কর্তৃপক্ষকে এফডিসি’র অন্যান্য উন্নয়নে যতটা তৎপর দেখা গেছে, ততটাই উদাসীনতা দেখা গেছে মসজিদটি সংস্কারের ক্ষেত্রে। ২০১৮ সালের আগ পর্যন্ত তা জরাজীর্ণ অবস্থায়ই থেকে যায়। সে সময় তরুণ অভিনেতা সনি রহমান এফডিসি’র মসজিদটি সংস্কার নয়, সেখানে নান্দনিক একটি মসজিদ নির্মাণের কথা চিন্তা করেন। তিনি এফডিসির মসজিদটি সংস্কারের জন্য তার এলাকা নরসিংদী’র শিল্পপতি থার্মেক্স গ্রæপের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির মোল্লার সহযোগিতা চান। আব্দুল কাদির মোল্লা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ২০১টি মসজিদ নিজ খরচে নির্মাণ করেছেন। তার সহযোগিতা চাইলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সম্মতি জানান। সে সময় সনি শিল্পী সমিতি, পরিচালক সমিতির নেতৃবৃন্দর সাথে আলাপ করেন। তারা সনির এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তারা একসঙ্গে আব্দুল কাদির মোল্লার সাথে দেখা করেন এবং মসজিদটি সংস্কারের কথা বলেন। কাদির মোল্লা সংস্কার নয়, সেখানে নতুন এবং নান্দনিক স্থাপত্যের মসজিদ নির্মাণ করে দেয়ার প্রতিশ্রæতি দেন। তার প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী, দ্রæতই মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। বিস্ময়কর ব্যাপার হচ্ছে, যে মসজিদ সংস্কারের জন্য বছরের পর বছর ধরে এফডিসি কর্তৃপক্ষকে তাগিদ দিয়ে সংস্কার করা যায়নি, সেই মসজিদই অত্যন্ত অল্প সময়ে নতুন মসজিদে রূপ লাভ করে, যা কল্পনা করা যায় না। এটা সম্ভব হয়েছে, কাদির মোল্লার আন্তরিকতা ও মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগের সাথে জড়িতদের নিয়মিত তদারকির কারণে। ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে অনন্য স্থাপত্যশৈলীর দুইতালা বিশিষ্ট মসজিদটির নির্মাণ কাজ গত বছরই শেষ হয়। পুরো অর্থই প্রদান করেন আব্দুল কাদির মোল্লা। এর মাধ্যমে এটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, এফডিসি কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হলেও এর সঙ্গে জড়িত ও উদ্যোক্তারা সফল হয়েছেন। এজন্য তাদেরকে শিল্পী ও কলাকুশলীরা অভিনন্দন জানিয়েছে। এই মসজিদের সৌন্দর্যের কাছে এখন ঝর্ণা স্পট ¤øান হয়ে গেছে। গত ২০ জানুয়ারি আব্দুল কাদির মোল্লা এফডিসিতে এসে মসজিদটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রের সর্বস্তরের নায়ক-নায়িকা, কলাকুশলী ও এফডিসি কর্তৃপক্ষ অংশগ্রহণ করেন। তারা আব্দুল কাদির মোল্লাকে এমন একটি অপূর্ব ও অনিন্দ্য মসজিদ নির্মাণ করে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। আবদুল কাদির মোল্লা তার বক্তব্যে বলেন, আমি খুবই আনন্দিত এই মসজিদের কার্যক্রম সুন্দরভাবে স¤পন্ন হওয়ায়। আমার জন্য আপনারা দোয়া করবেন, যাতে মানুষের খেদমত করতে পারি। আপনারা মসজিদটির যতœ নেবেন। বলা বাহুল্য, এফডিসি এখন তার জৌলুস হারালেও নতুন মসজিদটি তার নান্দনিকতা নিয়ে এখন আলো ঝলমল হয়ে আছে। একসময় যে মসজিদ ছিল অবহেলিত, জীর্ণ ও টিনের চালার এটি এখন এফডিসি’র মূল দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। মুসল্লিরা সচ্ছন্দে ও আগ্রহ নিয়ে এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। উল্লেখ্য, দুইতলা বিশিষ্ট এ মসজিদে একসঙ্গে প্রায় সাড়ে ৭ শতাধিক মুসল্লী নামাজ আদায় করতে পারেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন