শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ইউরোপে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি ন্যাটোর

৮৫০০ সেনাকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৩ এএম

ইউক্রেনে সম্ভাব্য রুশ সামরিক হামলার আঁচ পেয়ে পূর্ব ইউরোপে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো। ওই অঞ্চলে যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ প্রস্তুত রেখেছে জোটটি। এদিকে ইউক্রেন নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যে মোতায়েনের জন্য প্রায় সাড়ে আট হাজার সেনাকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের পক্ষ থেকে এমনটাই বলা হয়েছে।

রাশিয়ার হামলার আশঙ্কায় কিয়েভে নিজেদের দূতাবাসের সব কর্মীর পরিবারকে দ্রুত ইউক্রেন ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া এ মুহূর্তে রাশিয়া ভ্রমণ না করতে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক করা হয়েছে। যুক্তরাজ্যও কিয়েভে নিজেদের দূতাবাসের কর্মীদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। জাপানও ইউক্রেন থেকে নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে। ন্যাটোর মহাসচিব জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ সোমবার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ন্যাটো তার মিত্রদের রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখবে। ইউরোপের পূর্বাঞ্চলের মিত্রদের রক্ষায় সামরিক শক্তি বৃদ্ধির বিষয়টিও এসব পদক্ষেপের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। আমাদের নিরাপত্তা পরিবেশে যেকোনো ধরনের হুমকি মোকাবিলায় আমরা জবাব দিতে সর্বদা প্রস্তুত।’

রুশ ‘আগ্রাসন’ মোকাবিলায় ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রাণঘাতী সামরিক সহায়তার প্রথম চালান ইউক্রেনে পাঠিয়ে। এ রকম সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলেও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরেই ইউক্রেন সীমান্তজুড়ে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে মস্কো। সম্প্রতি সেই তৎপরতা আরও বেড়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেনসহ পশ্চিমা বিশ্বের দাবি। এ অবস্থায় ন্যাটো সম্প্রতি বাল্টিক অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। স্পেন নৌশক্তি বাড়িয়েছে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় নেদারল্যান্ডস যুদ্ধজাহাজ ও স্থল সামরিক বাহিনী প্রস্তুত রেখেছে।

ইউক্রেন ইস্যু নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কয়েক দফা বৈঠক করলেও সেটা যে বেশি কাজে আসেনি, তা এখন বোঝা যাচ্ছে। ইউক্রেন নিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পাশাপাশি সম্প্রতি জেনেভায় দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বৈঠক করেন। বৈঠকের পর দুই দেশ ইউক্রেনে সঙ্কট সমাধানে আলোচনা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুত দেয়। কিন্তু পরিস্থিতি ঘোলাটে হতে শুরু করে গত শনিবার থেকে। ওই দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রথম সামরিক সহায়তার চালান কিয়েভে পৌঁছায়। এরপর মস্কো সামরিক কার্যক্রম আরও জোরদার করতে শুরু করে। বেশ কিছুদিন ধরেই ইউক্রেন সীমান্তজুড়ে সামরিক তৎপরতা বাড়িয়েছে মস্কো। সম্প্রতি সেই তৎপরতা আরও বেড়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র, ইউক্রেনসহ পশ্চিমা বিশ্বের দাবি। এ অবস্থায় ন্যাটো সম্প্রতি বাল্টিক অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধবিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, কিয়েভে দূতাবাস খোলা থাকবে। তবে প্রেসিডেন্ট কার্যালয় হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে সতর্কবার্তা দেয়া হয়েছে, যেকোনো সময় ইউক্রেনে হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। এই কর্মকর্তারা বলেছেন, এমন আকস্মিক ঘটনা ঘটলে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার মতো অবস্থায় নাও থাকতে পারে সরকার। সেই কারণে ইউক্রেন ত্যাগের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে ‘অপরিপক্ব’ হিসেবে উল্লেখ করেছে ইউক্রেন। সোমবার দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওলেগ নিকোলেঙ্কো বলেছেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের নেয়া পদক্ষেপকে অপরিপক্ব হিসেবে মনে করছি।’ যুক্তরাষ্ট্রের পদক্ষেপকে অতি সতর্কতার প্রদর্শন বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ইউক্রেনে রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসন ঠেকাতে একটি সম্মিলিত কৌশল ঠিক করার লক্ষ্যে কাজ করছে পশ্চিমা শক্তিগুলো।

এ প্রেক্ষাপটে সোমবার ইউরোপের মিত্রদেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পেন্টাগন বলেছে, ইউক্রেন সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে সেনা মোতায়েন করা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। সেনা মোতায়েন প্রসঙ্গে পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, এটা তখনই হবে, যখন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো র‌্যাপিড রিঅ্যাকশন ফোর্স সক্রিয় করার সিদ্ধান্তে নেবে কিংবা অন্য কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে। তবে নিজ থেকে ইউক্রেনে সেনা মোতায়েনের কোনো পরিকল্পনা যুক্তরাষ্ট্রের নেই বলে জানান পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি। সূত্র : বিবিসি নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন