শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

৩ চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পর হঠাৎ জেগে উঠলেন ডাকাত

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১:১০ পিএম

কয়েক বছর আগে স্প্যানিশ কারা কর্তৃপক্ষ এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হয়েছিল। একজন বন্দীকে তিনজন পৃথক ডাক্তার মৃত ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মর্গে নিয়ে যাবার পর সেই মৃত ব্যক্তি হঠাৎ জেগে উঠেছিল– ঠিক তার ময়নাতদন্ত শুরু হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে।

২০১৮'র ৭ জানুয়ারী সকালে রোল কলের সময়ে ২৯ বছর বয়সী গঞ্জালো মন্টোয়া জিমেনেজকে প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। প্যাথলজিস্টরা জিমেনেজকে পরীক্ষা করার পর একটি ব্যাগে তার দেহটি ভরে হাসপাতালের মর্গে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক সেই সময়ে ব্যাগের ভেতর থেকে নাক ডাকার আওয়াজ আসতে থাকে।

জিমেনেজ, উত্তর-পশ্চিম স্পেনের আস্তুরিয়াস সেন্ট্রাল পেনিটেনশিয়ারির কারাগারে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যে ডাকাতির জন্য সাজা কাটছিলেন। রোল কলের সময়ে একটি চেয়ারে অজ্ঞান অবস্থায় বসে থাকতে দেখে কারাগারে কর্তব্যরত দুই ডাক্তার প্রথমে তাকে পরীক্ষা করে দেখেন।


ওই বন্দির দেহে সহিংসতার কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। জীবনের কোন লক্ষণ না দেখে, ডাক্তাররা জিমেনেজকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং এক ঘন্টা পরে একজন ফরেনসিক ডাক্তার দেহটি পরিদর্শন করতে আসেন। তিনিও প্রাথমিক মূল্যায়নের পর একমত হন এবং ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দেন। পরে চিকিত্সকরা বুঝতে পেরেছিলেন ভয়ঙ্কর ভুল হয়ে গেছিল। ততক্ষনে জিমেনেজ -এর দেহ সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগারে পাঠানো হয়ে গেছে। আসন্ন ময়নাতদন্তের প্রস্তুতির জন্য তার ত্বকে স্ক্যাল্পেল দিয়ে চিহ্নিতও করা হয়ে গেছিল। এই সময়ে জিমেনেজের দেহটি হঠাৎ আলোড়িত হয়। প্যাথলজিস্টরা অবাক হয়ে যান মৃত বন্দীকে হঠাৎ জীবিত হয়ে উঠতে দেখে। জিমেনেজকে পরবর্তীকালে একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, এবং শেষ পর্যন্ত তার অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানা যায়।

স্প্যানিশ প্রিজন সার্ভিসের একজন মুখপাত্র মিডিয়াকে জানান, "লিগাল মেডিসিন ইনস্টিটিউটে কী ঘটেছে সে সম্পর্কে আমি মন্তব্য করতে পারছি না, তবে তিনজন ডাক্তার মৃত্যুর ক্লিনিকাল লক্ষণ দেখেছেন তাই এই মুহূর্তে বলা মুশকিল ঠিক কি ঘটেছিল।" জিমেনেজকে 'মৃত' পাওয়া যাওয়ার আগের দিন, তিনি অসুস্থ বোধ করছেন বলে কারা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। কর্মকর্তারা তার শরীরে সায়ানোসিসের লক্ষণ দেখতে পান। জিমেনেজের শরীরে দুর্বল রক্ত সঞ্চালন বা রক্তের অভাবের কারণে ত্বক বিবর্ণ হতে শুরু করেছিল। অক্সিজেনের অভাবে রিগোর মর্টিস-এর লক্ষণ দেখতে পান চিকিৎসকেরা। হাসপাতালের কর্মকর্তারা স্প্যানিশ মিডিয়াকে জানান যে ক্যাটালেপসির ক্ষেত্রে অনেক সময় রোগীর এরকম হতে পারে। শরীরে খিঁচুনি দেখা যায়।

শারীরিক নমনীয়তার সাথে চেতনা এবং সংবেদনশীলতা হ্রাস পায়। ঠিক কীভাবে জিমেনেজ ক্যাটালেপ্টিক হয়েছিলেন তা এখনো স্পষ্ট নয়, যদিও বন্দী মৃগীরোগের শিকার ছিলেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। জিমেনেজের পক্ষে লক-আপে তার ওষুধের সময়সূচী মেনে চলা সবসময় সহজ ছিল না বলেও জানিয়েছেন তারা। যাই হোক, অবশেষে হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যার মধ্যে থেকে ২৪ ঘণ্টা পর চেতনা ফেরে জিমেনেজের। তিনি কথা বলতে শুরু করেন, যা একটি ভাল লক্ষণ বলেই জানান চিকিৎসকেরা। মৃত জিমেনেজ হঠাৎ জেগে উঠে নিজের স্ত্রীকে দেখতে চেয়েছিলেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন