সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইংরেজি নববর্ষ সংখ্যা

তিউনিসিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ভেঙে দিলেন প্রেসিডেন্ট সাইদ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ৭:৫৮ পিএম

তিউনিসিয়ায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ভেঙে দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ। আজ রোববার তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই কাউন্সিল ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
বিবৃতিতে জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সদস্যদের পক্ষপাতিত্ব ও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়।
কায়েস সাইদ অভিযোগ করেন, কাউন্সিলের সদস্যরা ‘কোটি কোটি’ টাকা ঘুষ নিচ্ছেন এবং রাজনৈতিক স্পর্শকাতর মামলার তদন্তগুলোতে দেরি করছেন।
তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘কাউন্সিলে পদ ও নিয়োগ সবই অনুগতদের কাছে বিতরণ করা হচ্ছে। তাদের স্থান সেখানে নয় যেখানে তারা বর্তমানে বসে রয়েছে। তাদের স্থান বরং অভিযুক্তদের দাঁড়িয়ে থাকার জায়গায়।’
সাইদের এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে তিউনিসিয়ার বিচারের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে আশঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছে। এর আগে গত মাসে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সদস্যদের অর্থনৈতিক সুবিধা বাতিল করেন কায়েস সাইদ।
২০১৬ সালে তিউনিসিয়ায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং তাদের পেশাগত প্রসার নিশ্চিত করার জন্য এই সংস্থাটি গঠন করা হয়েছিলো।
প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ এমন সময় এই সংস্থা ভেঙে দেয়ার আদেশ দিলেন, যখন দেশটিতে বামপন্থী রাজনীতিবিদ শুকরি বেলাইদের হত্যার নয় বছর পূর্তিতে বিচারের দাবিতে বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভের আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, রোববার দিনের শেষে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিরুদ্ধে কায়েসের সমর্থকরা এই বিক্ষোভকে কাজে লাগাবেন।
কায়েস সাইদ বলেছেন, ‘আমি তিউনিসীয়দের স্বাধীনভাবে বিক্ষোভের আহ্বান জানাচ্ছি। এটি আপনাদের অধিকার এবং আমাদের অধিকার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলকে ভেঙে দেয়া।’
রোববার প্রেসিডেন্ট সাইদ এই বিক্ষোভের অনুমোদন দিলেও দেশটিতে সকল ধরনের বিক্ষোভের ওপর নিষেধাজ্ঞা চালু রয়েছে।
গত বছর ২৫ জুলাই করোনা পরিস্থিতিতে তিউনিসিয়ায় সৃষ্ট দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় জেরে আকস্মিক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পর রাতে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ দুই বছর আগে নির্বাচিত পার্লামেন্ট ৩০ দিনের জন্য স্থগিত, প্রধানমন্ত্রী হিশাম মাশিশিকে বরখাস্ত ও দেশের নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আদেশ জারি করেন।
পরে ২৩ আগস্ট 'রাষ্ট্রের জন্য হুমকি' বিবেচনায় পরবর্তী আদেশ দেয়া না পর্যন্ত পার্লামেন্ট স্থগিত রাখার আদেশ দেন প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ।
অপরদিকে ২২ সেপ্টেম্বর জারি করা এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে সংবিধানের কিছু অংশ স্থগিত করার মাধ্যমে নিজের ক্ষমতা জোরদার করেন সাইদ।
তিউনিসিয়ার রাজনৈতিক দলগুলো এই আদেশকে 'সাংবিধানিক অভ্যুত্থান' বলে অভিযোগ করে আসছে।
২০১১ সালে আরব বসন্তের সূচনাকারী দেশ তিউনিসিয়ায় স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে ২৪ বছর দেশটি শাসন করা একনায়ক জাইন আল আবেদীন বিন আলী ক্ষমতাচ্যুৎ হন। এর পর থেকেই গত দশ বছর ভঙ্গুর অবস্থা সত্ত্বেও আরব বিশ্বের একমাত্র গণতান্ত্রিক শাসন উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে চালু ছিলো। সূত্র : আলজাজিরা ও আনাদোলু এজেন্সি

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন