বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:১০ এএম

মহামারীর বিপর্যয় কাটিয়ে উঠছে যুক্তরাজ্য। গত বছরের শুরু থেকেই ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দেশটির অর্থনীতি। বিধিনিষেধ শিথিলের পর তৈরি হয় তুমুল ভোক্তা চাহিদা। পাশাপাশি সরকারের দেয়া বিপুল পরিমাণ প্রণোদনা চাহিদাকে ত্বরান্বিত করে। ভোক্তা চাহিদার ওপর ভর করে প্রবৃদ্ধিতে ফেরে অর্থনীতির বিস্তৃত খাত। এ অবস্থায় ২০২১ সালে ব্রিটিশ অর্থনীতি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ প্রসারিত হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে প্রবৃদ্ধির এ গতি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্বোচ্চ। খবর দ্য গার্ডিয়ান। কভিড-১৯ মহামারীর প্রথম ধাক্কায় ২০২০ সালে যুক্তরাজ্যের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৯ দশমিক ৪ শতাংশ সংকুচিত হয়েছিল। এরপর স্মরণকালের ভয়াবহ এ মন্দা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে দেশটির অর্থনীতি। যদিও কভিডের নতুন ধরন ওমিক্রন সংক্রমণের কারণে ডিসেম্বরে পুনরায় মন্দায় পড়ে দেশটির অর্থনীতি। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছে, ডিসেম্বরে অর্থনীতির উৎপাদন দশমিক ২ শতাংশ কমে গেছে। যদিও এ সংকোচনের গতি প্রত্যাশার চেয়ে কম। বড়দিনের ছুটিতে দোকানগুলোয় পণ্যের ঘাটতি ও রেকর্ডসংখ্যক চাকরির শ‚ন্যপদ অর্থনীতির গতিকে ধীর করে দেয়। বছরের শেষ মাসে জিডিপি দশমিক ৬ শতাংশ গভীর মন্দায় পড়বে বলে আশঙ্কা করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা। তবে দেশজুড়ে কভিড টিকার বুস্টার ডোজ বিতরণ ও পরীক্ষা কার্যক্রমে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি আরো বড় মন্দা রোধ করেছে। বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতা সত্তে¡ও বছরের শেষ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ব্রিটিশ অর্থনীতি ১ শতাংশ বেড়েছে। ইতিবাচক এ প্রবৃদ্ধির জন্য অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক ৪০ হাজার কোটি পাউন্ডের প্রণোদনা এবং উপযুক্ত সময়ে এ সহায়তা বিতরণকে কৃতিত্ব দিয়েছেন। তিনি বলেন, অর্থনীতি যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তার জন্য আমি গর্বিত। আমি আমাদের বিস্তৃত টিকাদান কার্যক্রমের জন্যও গর্ববোধ করি। কারণ এ বিষয়গুলোই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। তবে শ্রম ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতারা বলছেন, এ প্রবৃদ্ধি নিয়ে উদযাপন করার কিছু নেই। কারণ তিন দশক ধরে যুক্তরাজ্যে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে। সর্বশেষ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের মধ্যে জীবনযাত্রার মান সবচেয়ে বেশি চাপের মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (টিইউসি) সাধারণ সম্পাদক ফ্রান্সেস ও’গ্র্যাডি বলেন, গৃহস্থালি জ্বালানির দাম ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রকৃত মজুরি কমে যাচ্ছে। এ সংমিশ্রণ অর্থনৈতিক চাহিদার ওপর প্রভাব ফেলেছে এবং মহামারী থেকে আমাদের পুনরুদ্ধারকে দুর্বল করে দিচ্ছে। প্যানথিয়ন মাইক্রোইকোনমিকস যুক্তরাজ্যের প্রধান অর্থনীতিবিদ স্যামুয়েল টম্বস বলেন, ব্রেক্সিটের পর শ্রমিক ও উপকরণের দীর্ঘস্থায়ী ঘাটতি ও দুর্বল রফতানির পরও ২০২১ সালে অর্থনীতি শক্তিশালীভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। যদিও বছরের শেষ দিকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে শ্লথগতি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থার জন্য কেবল ওমিক্রনের সংক্রমণ বৃদ্ধিকে দায়ী করা যায় না। কারণ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই এ সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী ছিল। তাছাড়া ইউরোপের দেশগুলোর তুলনায় ব্রিটিশ সরকার তুলনামূলক কম বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল। তবুও রফতানি অর্থনীতির অন্যতম দুর্বল খাত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। গার্ডিয়ান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন