সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

বিদ্যুৎ কেন্দ্র হয়ে গেল অভিনব সংস্কৃতি কেন্দ্র

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:১০ এএম

ছিল বিদ্যুৎ কেন্দ্র, হয়ে উঠলো সংস্কৃতি কেন্দ্র। মস্কোর কেন্দ্রস্থলে জিইএস-২ সংস্কৃতি কেন্দ্রের কর্মকান্ড দেখলে সত্যিই চমক লাগে। এ রূপান্তর প্রক্রিয়া সত্যি চমকপ্রদ। জিইএস-২-এর বিশাল ভবনটি ক্রেমলিন ও মস্কোর ঐতিহাসিক কেন্দ্রস্থল থেকে বেশি দূরে নয়। ১৯০৭ সালে তেলচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র হিসেবে স্থাপনাটি যাত্রা শুরু করেছিল। এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে সেখান থেকে মস্কোর ট্রামগুলিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। ২০১৭ সালে স্থাপনাটির পুনর্গঠন শুরু হয়। রাশিয়ার এক ধনকুবের সেই উদ্যোগের ব্যয়ভার বহন করেছিলেন। টাকার অঙ্ক গোপন রাখা হলেও বেশ কয়েক কোটি ইউরো ব্যয় করা হয়েছিল বলে অনুমান করা হয়। শুধু স্থাপত্যই অসাধারণ নয়, এই সংস্কৃতি কেন্দ্রের কর্মসূচিও প্রায় সব রকম দর্শক আকর্ষণ করে। সাবেক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রাঙ্গণে প্রদর্শনীর জায়গা ছাড়াও কনসার্ট হল রয়েছে, যেটিকে সিনেমা হিসেবেও কাজে লাগানো হয়। তরুণ শিল্পীদের জন্য ওয়ার্কশপ এবং একটি লাইব্রেরিও রয়েছে। অভিনব এই স্থাপত্যের মধ্যে শিল্পের প্রায় সব শাখার সহাবস্থান এবং শহরের মানুষের সঙ্গে সংযোগ কেন্দ্রটিকে আকর্ষণীয় করে তুলছে। একশ বছরেরও বেশি সময় ধরে জিইএস-২ চালু আছে। মস্কোর সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হিসেবে পরিচিত সেটি। ভেতরের অংশ উন্মুক্ত ও উজ্জ্বল। নাটক, সংগীত, পারফর্ম্যান্স, চিত্রশিল্প ও ভিডিও আর্টের বিশাল প্রাঙ্গন এটি। ইটালির তারকা স্থপতি রেনসো পিয়ানোর তৈরি এই স্থাপনা রাশিয়ার রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। সব মানুষ ও শিল্পশাখার জন্যই এর দ্বার খোলা। আর্ট ডাইরেক্টর হিসেবে ফ্রানচেস্কো মানাকোর্ডার জন্য ভবনটি ভালোভাবে কাজে লাগানোর দায়িত্ব চ্যালেঞ্জে ভরা। তিনি বলেন, ‘এই ভবনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো স্পেসের বহুমুখী ব্যবহার। যেখানেই আমরা কনটেন্ট তৈরি করি, সেই সব অংশকে গ্যালারি, থিয়েটার, কনসার্ট অথবা সিনেমা হলে পরিণত করা যায়। নতুন ভবনটিকে আমাদের ভালো করে বুঝতে হচ্ছে। নতুন কফি মেশিন কিনলে যেমন সেটির ব্যবহার শিখে নিতে হয়। ব্যাপারটা বেশ জটিল। ৩৫,০০০ বর্গ মিটার যেন ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক মাত্রার সঙ্গে তুলনা করা যায়।’ ৭০ মিটার উঁচু চারটি চিমনি স্থাপনাটির আদি রূপের কথা মনে করিয়ে দেয়। আজ দূষিত ধোঁয়ার বদলে চিমনিগুলিকে বাতাস চলাচলের জন্য ব্যবহার করা হয়। সেটি ভবনটির নতুন খোলামেলা পরিবেশের প্রতীক বলে সংস্কৃতি কেন্দ্রের অন্যতম স্থপতি আনা প্রোকুদিনা মনে করেন। প্রকল্পের অন্যতম স্থপতি আনা প্রোকুদিনা বলেন, আমরা এই স্পেস এমনভাবে পরিকল্পনা করেছি, যাতে বিভিন্ন অংশের মধ্যে কোনো স্পষ্ট বিভাজন না থাকে। সব অংশ যেন একে অপরের সঙ্গে মিশে যেতে পারে। নীচের তলা পুরোপুরি খোলা, দুই দিক থেকেই শহর দেখা যায়। আমাদের কাছে সেটা অত্যন্ত জরুরি ছিল। কারণ সংস্কৃতি কেন্দ্রকে সব সময়ে শহরের সঙ্গে সংযোগ বজায় রাখতে হয়। একেবারে প্রথম দিকের একটি প্রকল্প দর্শকদের নাগালেই রয়েছে। আইসল্যান্ডের এক শিল্পী কয়েক মাস ধরে ‘সান্টা বারবারা› নামের অ্যামেরিকার সোপ অপেরার রুশ সংস্করণ মঞ্চায়ন করেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাবার পর অন্যতম প্রথম মার্কিন ধারাবাহিক হিসেবে রুশ টেলিভিশনে দেখানো হয়েছিল বলে সেটির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। জিইএস-২ ভবনে কোনো প্রবেশমূল্য নেই। ‘সবার জন্য সংস্কৃতি’ হলো মূলমন্ত্র। এই মৌলিক গণতান্ত্রিক ভাবনা মস্কো শহরের মাঝে ঐতিহাসিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিকে নতুন শক্তিতে ভরপুর করে তুলছে। ডয়চে ভেলে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন