‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের সচিব প্রশান্ত কুমারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাত, অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে উপ-পরিচালক মো: মশিউর রহমানকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে গতকাল রোববার মেঘনা ব্যাংক এবং ব্যাংক এশিয়া থেকে প্রশান্ত এবং ঘনিষ্ঠ দুই নারী গ্রাহকের লেনদেনের রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে এ তথ্য।
দুদক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ড. প্রশান্ত কুমার রায় বেনামী সদস্যদের নামে ঋণ দেখিয়ে ৬৩২ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেনÑ মর্মে অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে ৪০ হাজার ১২৩টি সমিতি গঠন করে ২০ লাখ ৮৬ হাজার ৮৬৮টি পরিবারের মধ্যে ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে ১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। প্রকল্পের চক্রাকারে দেয়া ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ৫০৮ কোটি টাকা। অনাদায়ী পড়ে আছে ১ হাজার ১৪১ কোটি টাকা।
এছাড়া প্রশান্ত কুমার রায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই প্রকল্পের অলস অর্থ নিয়মবহির্ভূতভাবে কম সুদে দু’টি বেসরকারি ব্যাংকে রেখে আর্থিক সুবিধাসহ ওই ব্যাংকগুলো তার ২য় ও ৩য় স্ত্রীকে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন। এছাড়া সরকারের সচিব হয়েও তিনি একাধিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এমডি হিসেবে দু’টি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে গিয়ে চালাতে গিয়ে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী এক ব্যবসায়ীর কাছে কোম্পানির শেয়ার বিক্রির চুক্তি করে বিপুল অর্থ নেন-মর্মেও অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন।
রেকর্ডপত্র চেয়ে ব্যাংক এশিয়া লি: কর্পোরেট শাখায় দেয়া চিঠিতে দুদক ৩ ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। (১) প্রশান্ত কুমার রায়ের অ্যাকাউন্ট নম্বর-০০২৫৫০১২১১৬সহ অন্যান্য অ্যাকাউন্টের শুরু থেকে অদ্যাবধি লেনদেনের রেকর্ড। এ অ্যাকাউন্টে ১ লাখ টাকার বেশি লেনদেনকৃত অর্থের উৎস (ডেবিট-ক্রেটিড ভাউচার, গ্রাহকের আবেদনের কপি, (২) ব্যাংক এশিয়ার স্কশিয়া শাখার গ্রাহক ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের অ্যাকাউন্টের (নং-০০৭৩৪০১৮০৫৬, ০০৭৫৫০১১৮৬৮, ০০৭৫৫০১২৭৬০, ০০৭৫৫০১৩০০৩) শুরু থেকে অদ্যাবধি লেনদেন বিবরণী এবং (৩) একই শাখার গ্রাহক নবমিতা রায় মুক্তির অ্যাকাউন্টে (নং-০০৭৩৪০১৮৯৫১)সহ অন্যান্য অ্যাকাউন্ট নম্বরের শুরু থেকে অদ্যাবধি লেনদেনের অর্থের উৎস সংক্রান্ত তথ্য চাওয়া হয়। মেঘনা ব্যাংক লি:-কে দেয়া চিঠিতে ব্যাংকটির মতিঝিল শাখার গ্রাহক অনিন্দিতা রায বন্যার অ্যাকাউন্টের (নং-১১০৩১২১০০০০১০৯০) শুরু থেকে অদ্যাবধি লেনদেনের রেকর্ড চাওয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন