মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে ষোল বছর পলাতক থাকার পর অবশেষে পুলিশের হাতে গ্রেফত হলো মোঃ জসিম উদ্দিন (৪২) নামে এক ব্যাক্তি। আঠারো বছর আগে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের (২০০৪) এক হত্যা মামলায় ২০০৬ সালে তার বিরুদ্ধে সর্ব্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড দেয় আদালত। পাশাপাশি পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থ দন্ডও দেয়া হয়। রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারী) রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মশিউর রহমানের নেতৃত্বে কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের ভোলাইল থেকে জসিমকে আটক করা হয়। গতকাল সোমবার দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য জানান সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ওসি মশিউর রহমান। উল্লেখ্য নিহত কাশেম ছিলেন তাৎকালী আদমজী জুট মিলের শ্রমিক নেতা । এই হত্যাকন্ডটি ছিল তখন সময়ের দেশের একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা ।
সাংবাদিক সম্মেলনে ওসি মশিউর রহমান জানায়, ২০০৪ সালের ২৮ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি এলাকায় কাশেম নামে এক ব্যাক্তিকে গুলি করে হত্যা করে জসিম ও তার সঙ্গিরা। ওই ঘটনায় জড়িত জসিমসহ অন্যদের নামে তৎকালীন সময়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে নিহতের স্ত্রী রেজিয়া বেগম। এদিকে ঘটনার পর থেকেই পলাতক ছিলেন জসিম। তার অনুপস্থিতেই ২০০৬ সালের ৫ মে মামলাটির বিচার কার্য শেষ করে জসিমকে মৃত্যু এবং অর্থ উভয় দন্ডে দন্ডিত করেন তৎকালীন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক আব্দুল মান্নান। ওসি মশিউর রহমান আরো জানায়, মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী জসীম উদ্দিন পলাতক থাকায় তাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলোনা। যার কারণে তাকে গ্রেফতারও করা যাচ্ছিলো না। বহুবছর তার গ্রেফতারী পরোয়ানাটি পড়ে ছিলো। মাসখানেক আগে বিষয়টি আমার নজরে পড়ে। এতো আগের একটি মামলা এবং আসামী দীর্ঘদিন আগে থেকে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেফতারের বিষয়টি এতো সহজ ছিলো না। পরবর্তীতে আমি আমার পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশে আসামী জসিমকে গ্রেফতারে কাজ শুরু করি। প্রথমে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার আদমজী এলাকায় তার খোঁজ জানার চেষ্টা করি। এতো বছর আগের ঘটনা হওয়ায় এবং সে পলাতক থাকায় তেমন কোন তথ্যই পাওয়া যায় নাই। পরবর্তীতে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হই। সেই সব তথ্য নিয়ে তাকে খোঁজার চেষ্টা করি। একপর্যায়ে আমরা জানতে পারি জসিম কুমিল্লায় তার গ্রামে অবস্থান করছে। এবং সে সেখানে সিএনজি অটোরিক্সার চালক হিসেবে কর্মরত আছে। আমরা দ্রুত সেখানে চলে যাই এবং তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। এ মামলায় অপর মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী হুমায়ুন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী মোহন ও মনির বর্তমানে জেল হাজতে কারাভোগ করছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন