বিশেষ সংবাদদাতা : ঘটনাটি ২০০৯ সালেÑঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশনে গাজী ট্যাংক ক্রিকেটার্সের হয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে এক ওভারে ৬ বলের ৬টিতে ছক্কায় নাইম ইসলামের উপাধিটা হয়ে গেছে ছক্কা নাঈম। সে বছর চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শেষ ১৮ বলে ২৪ রান যখন হয়ে পড়েছে দূরুহ,তখনো সেই ছক্কা নাইমই আবির্ভূত জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ৪৮তম ওভারে চিবাবাকে পর পর তিন বলে তিনটি ছক্কায় অসাধ্য সাধন করেছে নাইম, তার ওই তিনটি ছক্কায় ১ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ দল। কিন্তু সেই ছক্কা নাইমকেই যে যাচ্ছে না দেখা। ২০১৪ সালে এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের পর জাতীয় দলের বাইরে ২ বছর ৯ মাস। বিপিএল’র সর্বশেষ আসরে চিটাগাং ভাইকিংসের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র ৪ ম্যাচ, সেখানে স্ট্রাইক রেটও বলার মতো নয়Ñ৮৪.৪৬! নিজের পদবীটা নিজেই যে মুছে ফেলেছেন নাইম। দলে বিপিএল আইকন সৌম্য সরকার আছেন, আছেন টুয়েন্টি -২০ সেনসেশন বুম বুম আফ্রিদি। তবে তাদের কাউকে নয়, গাইবান্ধার ছেলে বলে এবার বিপিএলে রংপুর রাইডার্স ফ্রাঞ্চাইজি আঞ্চলিকতার টানে নাইমকে দিয়েছে দলের অধিনায়কের দায়িত্ব।
আজ রাতে চিটাগাং ভাইকিংসের বিপক্ষে আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রংপুর রাইডার্স অবতীর্ন হচ্ছে যখন,তখন প্রশ্ন উঠছে অধিনায়কত্ব পেয়ে কি নিজের পুরোনো পরিচয় ফিরে পেতে যাচ্ছেন নাইম? হারানো ছন্দ ফিরে পেতে চেষ্টা করবেন বলে দিয়েছেন কথা রংপুর রাইডার্স অধিনায়ক নাইমÑ‘ চেষ্টা করবো সেরকম কিছু করতে। তবে ব্যক্তিগত লক্ষ্য হচ্ছে দলের জয়ের মুহূর্তে অবদান রাখা।’ দলে আফ্রিদির মতো মেগা স্টার থাকতে অধিনায়কের দায়িত্বটা অর্পিত হওয়ায় বাড়তি কোন চাপ নিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন নাইমÑ‘বাংলাদেশের সেরা টুর্নামেন্টের একটি বিপিএলে অধিনায়কত্ব পেয়ে ভালো লাগছে। তবে দলে বড় ক্রিকেটার থাকা কোনো চাপ নয়। আমি যখন অধিনায়ক আমার অধীনেই তো তাকে খেলতে হবে।
দলে যে ৮জন বিদেশি থাকার কথা ছিল, তাদের মধ্যে বাবর আজম এবং শারজিল খানকে পাচ্ছে না রংপুর রাইডার্স। অন্য যারা আছেন,তার মধ্যে বড় নাম শুধুই আফ্রিদি। বড় তারকাদের ছাড়াই দারুণ একটি কম্বিনেশন সম্ভব বলে মনে করছেন নাইমÑ ‘শহিদ আফ্রিদি ছাড়া আমাদের দলে হাইপ্রোফাইল বিদেশী ক্রিকেটার নেই। তবে শাহজাদ আফগানিস্তানের সেরা খেলোয়াড়, লিয়াম ডসন ইংল্যান্ডের ভালো ক্রিকেটার। সে কিছু দিন আগে বাংলাদেশে খেলে গেছে। তাছাড়া পাকিস্তানের নাসিম জামশেদ সম্পর্কে সবাই জানে। ইংল্যান্ডের একজন উদীয়মান পেসার আছে ,সে খুব ভালো বোলার। ব্যাটিংয়ে কোন একটি ম্যাচে ২’শ, বোলিংয়ে কোন একটি ম্যাচে প্রতিপক্ষকে ১শ’র মধ্যে অল আউট করার স্বপ্নও দেখেন নাইম। অ্যাকশন শুধরে,আইসিসি’র ছাড়পত্র পেয়ে বাঁ হাতি স্পিনার আরাফাত সানি নাকি আগের চেয়েও ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন,এমনটাই মনে করছেন নাইমÑ‘আরাফাত সানি খুব ভালো বোলিং করেছে। আগের চেয়ে এখন অনেক বেশি কার্যকর। স্পিনও করে এখন বেশি, আগের চেয়ে স্কিডও করে ভালো।’
ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে চিটাগাং ভাইকিংস ২৯ রানে জিতে আসরে দারুন শুরু করায় দ্বিতীয় ম্যাচেও ধারাবাহিকতায় মনোযোগী তামীমÑ‘১২টি ম্যাচের ট’র্নামেন্ট এটা। ভুল যতো কম করা যায়,ততোই মঙ্গল। গুরুত্বপূর্ন ম্যাচে দারুন শুরু করেছি বলে ছন্দটা থাকবে বলে আশা করছি।’
ড্যারেন স্যামী,সাব্বির,মিরাজদের দল রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে খুলনা টাইটান্স অবতীর্ন হচ্ছে আজ আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। কাগজে-কলমে স্টুয়ার্ট ল’র প্রশিক্ষন নির্ভর খুলনা টাইটান্সে আছেন কেভন কুপার,আন্দ্রে ফ্লেচার,বেনি হাওয়েল, জুনায়েদ খান, মোহাম্মদ আসগর, লেন্ডন সিমন্স, রিকি ওয়ালেস। তবে বিপিএলে খুলনা টাইটান্স অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহ তাকিয়ে স্থানীয় ক্রিকেটারদের দিকেÑ‘আমাদের দলে ওরকম বড় নাম নেই। কিন্তু দিন শেষে পারফরম্যান্সই কথা বলবে। আমরা যদি দল হিসেবে ভালো করতে পারি, অলরাউন্ড স্কিলগুলো শো করতে পারি, আশা করতে পারি এবারও ভালো কিছুর সম্ভাবনা থাকবে।’ বিপিএল’র গত আসরে তার নেতৃত্বে হয়েছে বরিশাল বুলস রানার্স আপ। বিপিএলে শিরোপায় হাত দেয়া হয়নি ২০১৪-১৫ মওশুমে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে শিরোপা জয়ী দলের অধিনায়ক মাহামুদুল্লাহÑ‘এই মুহুর্তে দলটা বেশ ভারসাম্যপূর্ন। পেস বোলিং অলরাউন্ডার, লেগ স্পিনার, অফ স্পিনার আছে। ভালো ব্যাটসম্যানও আছে। আমাদের দেশীয় ক্রিকেটার সংগ্রহ ভালো হয়েছে। ভালো খেলাটাই এখন মূল লক্ষ্য। এরকম দলকে অধিনায়কত্ব করতে উপভোগ করি। ঢাকা, চিটাগং, কুমিল্লা দলে বড় বড় নাম আছে। চ্যাম্পিয়নশিপের দাবিদার প্রায় সবগুলো দলই। তাই ভালো ক্রিকেট খেলাটাই মূল লক্ষ্য।’
মাহামুদুল্লাহর চাওয়া একটাই সুখি ড্রেসিং রুমÑ‘ক্রিকেটারদের স্বাধীনতা দেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি চাই আমার দলের ক্রিকেটাররা সব সময় এটা বিশ্বাস করেই খেলুক। হ্যাপি ড্রেসিং রুম যেরকম চাই ঠিক সেরকম।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন