৭৫-এর স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্ভাগ্য, ৭৫ এ কিন্তু শিশুরাও মুক্তি পায়নি। কারবালার ময়দানেও এ রকম ঘটনা ঘটেনি। শিশু-নারীদের কেউ হত্যা করেনি কিন্তু বাংলার মাটিতে যাদের জন্য আমার বাবা জীবন উৎসর্গ করেছেন, বছরের পর বছর কারাগারে ছিলেন, যাদের একটি জাতি হিসেবে মর্যাদা দিয়ে গেছেন। আর সেই বাঙালিদের হাতে তাকে জীবন দিতে হয়েছে। এটাই হচ্ছে সব থেকে কষ্টের, সব থেকে দুঃখের।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় হৃদয়ে পিতভ‚মি শীর্ষক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
এরআগে বেলা ১০টা ৫৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতার সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সে এসে পৌঁছান। বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সে এসে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান।
এরপর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলালীগসহ, গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ, টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠন জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, আমাদের শিশুরা সুরক্ষিত থাকবে, সুন্দর জীবন পাবে। জাতির পিতা এ দেশের শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। আমার ছেলে জয়ের সৌভাগ্য হয়েছে আমার বাবার কোলে চড়ে খেলা করতে। তিনি যখন খেলতেন বাচ্চাদের সঙ্গে মনে হতো তিনি নিজেই যেন একটা শিশু হয়ে যেতেন।
তিনি বলেন, বাবার স্বপ্ন পূরণ করবার জন্য, এ দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, এ দেশের শিশুদের যেন আগামী দিনে আমাদের স্বজনহারা বেদনা নিয়ে বাঁচতে না হয়। তারা যেন সুন্দর জীবন পায়, উন্নত জীবন পায়। যে শিশুদের জাতির পিতা অত্যন্ত ভালোবাসতেন, আর ভালোবাসতেন বলেই আমরা যখন ২১ বছর পর সরকার গঠন করি, তখনই আমরা ১৭ মার্চ শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা দিই। কারণ তিনি শিশুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য স্বাধীনতার পরপরই আমাদের যে সংবিধান দিয়েছিলেন তাতে শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন।
তা ছাড়া শিশু অধিকার আইন তিনি করে দিয়ে যান। সেই সঙ্গে শিশুদের সুরক্ষার জন্য কেয়ার অ্যান্ড কোটেশন সেন্টার যেটা বর্তমানে সরকারি শিশু পরিবার নামে পরিচিত, সেটাও তিনি প্রতিষ্ঠা করে শিশুদের অর্থাৎ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত শিশুদেরও যেন ভালোভাবে লালন-পালন হয় সেই ব্যবস্থা তিনি করে দিয়েছিলেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ১৯৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি, তখন আমরা শিশুদের উন্নয়নের জন্য শিক্ষায়-দীক্ষায় যাতে তারা এগিয়ে যেতে পারে-পিছিয়ে না পড়ে সে জন্য প্রতিটি এলাকায় স্কুল তৈরি করে দেওয়া, তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করা; জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমরাও অনেক স্কুল জাতীয়করণ করি। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ এবং বিভিন্ন অপকর্ম থেকে যাতে তারা মুক্তি পায় সেই ব্যবস্থা নিই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন