শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

বিশ্বময় ইসলামের জাগরণ : এ জেহাদ তো জেহাদ নয়

প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফতাব চৌধুরী
তথাকথিত ইসলামী খিলাফত বা ইসলামী শাসনব্যবস্থা কায়েম করার নামে ২০১২ সালে গঠিত ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট (আইএসআইএল বা আইএস) জেহাদের নাম করে স্বীয় ধর্ম বা অন্য ধর্মের শিশু থেকে নিয়ে বৃদ্ধ পর্যন্ত নিরীহ জনতাকে যখন তখন যেখানে সেখানে হত্যা করে আদিম যুগের নরখাদকে রূপান্তরিত হয়েছে। ইসলামী শাসনব্যবস্থা সম্বন্ধে যাদের সম্যক জ্ঞান নেই, তারাই আবার ধর্মোন্মাদ হয়ে জেহাদের নামে যতসব ইসলামবিরোধী কাজ করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে জেহাদ হলো নিজের ষড়রিপুর বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজের কু-প্রবৃত্তিকে দমন করে সৎ পথে চলা, অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা। সেটাও আবার বুঝিয়ে-শুনিয়ে, বিনয় ও সহিষ্ণুতার সঙ্গে, রক্তের বিনিময়ে নয়। আর যুদ্ধবিগ্রহ হলো আত্মরক্ষামূলক শেষ বিধান বা বিকল্প, সেটা কিন্তু জেহাদ নয়। ইসলাম কখনও আক্রমণাত্মক কার্যকলাপকে সমর্থন করে না। কোনও ধর্ম অসহিষ্ণুতা, খুনখারাবিকে সমর্থন করে না। ধর্মের নামে যারা হত্যাযজ্ঞ চালায়, ধর্মকে হাতিয়ার করে রক্ত নিয়ে খেলা করে, তারা তো ধার্মিক নয় বরং ধর্মান্ধ। *
যে ইসলাম ধর্মকে হাতিয়ার করে কতিপয় ধর্মোন্মাদ বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, সেই ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইসলাম ধর্ম প্রচার করার জন্য মক্কা ছেড়ে মদিনায় যাওয়ার পরও শত্রুপক্ষ মহানবী (সা.) ও তাঁর সঙ্গীদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে সৈন্যবাহিনী নিয়ে মদিনা অভিমুখে যাত্রা করেন। সেই সংবাদ পাওয়ার পর আক্রমণকারীদের প্রতিহত করা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন মহানবী (সা.)। ওই সময়ই আল্লাহর পক্ষ থেকে ওহি বা বাণী আসে আক্রমণকারীদের বাধা দেওয়ার জন্য। সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়, কোনও কচিকাঁচা শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা বা মহিলাকে আহত বা নিহত করা যাবে না। গাছগাছালি, ফল বা উৎপন্ন ফসলও নষ্ট করা যাবে না। মোকাবিলা করতে হবে কিন্তু সীমা লঙ্ঘন করা যাবে না। বিরুদ্ধ পক্ষ আক্রমণ করলে তারপর যেন প্রতিরোধ করা হয়। এই শর্ত মেনে যুদ্ধ করা কঠিন প্রত্যাহ্বান। কারণ যুদ্ধে কে-কোথায় মরবে বলা যায় না, আবার গাছপালা, ফলমূল উৎপন্ন ফসল ইত্যাদি রক্ষা করাও ভারি মুশকিলের কাজ। কিন্তু জঙ্গি সংগঠনগুলো অবাধে নরহত্যা ও রাষ্ট্র সম্পত্তি ধ্বংস করে যে জেহাদ করছে, সেটা সম্পূর্ণ অধার্মিক তথা নিষিদ্ধ কাজ। বর্তমান অরাজক পরিস্থিতিতে শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.) যাঁর মাধ্যমে ইসলাম পূর্ণতা লাভ করে, তাঁর কয়েকটি বাণী বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। * ‘প্রকৃত মুমিন মুসলমান সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি সমগ্র মানুষ জাতির প্রাণ এবং সম্পদ-সম্পত্তি রক্ষার ব্যাপারে ভরসা রাখার জন্য উপযুক্ত।’ * ‘সমস্ত সৃষ্টি জগৎটাই হচ্ছে আল্লাহর পরিবার। সুতরাং, সেই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয়, যে ব্যক্তি আল্লাহর এই পরিবারের প্রতি সদ্ব্যবহার করতে সক্ষম।’ * ‘আল্লাহর কাছে মানুষের যত রকমের অন্যায়-অবৈধ আর অবাধ্যতার পাপ আছে, সেই সমস্ত পাপকর্মের তুলনায় নিজের দেশ বা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা পাপের ওজন সমান নয় বরং বহু বেশি।’ * ‘সে বেহেস্তে যেতেই পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত প্রতিবেশী তার দ্বারা তার কোনও ক্ষতি হবে না এই সম্বন্ধে নিশ্চিত না হয়।’ * ‘দুর্বল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাউকে যদি কোনও মুসলিম খুন করে, তাহলে তার বেহেস্ত পাওয়া তো দূরের কথা, বেহেস্তের সামান্য সুগন্ধ পর্যন্ত পাবে না সে।’ উপরিউক্ত বাণী থেকে এটা স্পষ্ট, মুসলিম নামধারী যারা জঙ্গি কার্যকলাপ চালাচ্ছে, তারা প্রকৃত মুসলমান নয়, ওরা ইসলামের কলঙ্কস্বরূপ। অতএব মুখোশধারী কতিপয় মুসলিমসৃষ্ট সন্ত্রাসকে কখনও ইসলামী সন্ত্রাস বলা সমীচীন নয়। সন্ত্রাসের সাথে ইসলামের কোনোই সম্পর্ক নেই। ২০১২ সালে আবু বক্কর আল-বাগদাদির নেতৃত্বে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট (আইএসআইএল) নামক জঙ্গি সংগঠনটি গঠিত হয়। বলা হয় এর স্রষ্টা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অথবা ই¯্রাঈল। লেভান্ট-এর অর্থ বৃহত্তর সিরিয়া, যার জন্য সংগঠনটিকে আইএস-ও বলা হয়। এই সংগঠনের সূচনাপর্ব ১৯৯৯ সালে। পরবর্তীতে কয়েকটি জঙ্গি সংগঠন একত্রিত হয়ে ইসলামিক স্টেট অব ইরাক (আইএসআই) গঠন করে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল শিয়া মুসলিম বা খ্রিস্টানদের নিধন করে ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করেন। সিরিয়াকে সংযুক্ত করে গঠিত আইএসআইএল বা আইএসের লক্ষ্য হলো সমগ্র বিশ্ব ইসলামী খিলাফত প্রতিষ্ঠা করা। ভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে ইসলামের মূল কক্ষপথ থেকে শত যোজন দূরে সরে গিয়ে আইএসআইএস অতি উন্নত সামাজিক গণমাধ্যম ব্যবহার করে ইহকাল ও পরকালের বিভিন্ন চমকদার পুরস্কারের কথা বলে, প্রলোভন দিয়ে, মগজধোলাই করে বিভিন্ন দেশ থেকে সদস্য সংগ্রহ করছে, যাদের বেশির ভাগ তরুণ-তরুণী। জেহাদে অংশগ্রহণ করে শহীদ হয়ে সহজে বেহেস্তগামী হওয়ার জন্য প্রলুব্ধ হয়ে তরুণ-তরুণীরা অংশগ্রহণ করছে বলে মনে হয় না। যেখানে জাগতিক সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য লাভের জন্য মানুষ দিনকে রাত করছে, সেখানে কোন দুঃখে স্বর্গসুখ লাভ করার স্বার্থে তরুণ-তরুণীরা জীবনকে বলিদান দেবে। অনেক সময় যুব সম্প্রদায় কর্মহীনতা, সামাজিক নির্যাতন, নিপীড়ন ও বৈষম্যের শিকার হয়ে সন্ত্রাসী বা চরমপন্থি কার্যকলাপে প্রলুব্ধ হয়। স্বীয় পরিবার-পরিজন ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতাহীন ছন্নছাড়া বাউন্ডুলেরাই বিভিন্ন কারণে হতাশাগ্রস্ত হয়ে আইএসের আহ্বানে সাড়া দেয়, যেখানে অ্যাডবেঞ্চার হিসেবে বীরত্বের সঙ্গে অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র নিয়ে রক্তের সঙ্গে খেলা করে মজা লোটাসহ জৈবিক ক্ষুধা নিবৃত্তির সহজলভ্য ব্যবস্থা বিদ্যমান। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের ন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম ফর দ্য স্টাডি অব টেররিজম অ্যান্ড রেসপন্স টু টেররিজমের ড. টনি লেমিয়াক্সের কয়েকটি উক্তি নিম্নরূপ (উৎস ওয়াশিংটন থেকে পরিবেশিত সংবাদ প্রতিবেদন : সাঃ প্রঃ ০৮,০৭,১৬)Ñ আইএসের প্রচারণার একটি কথোপকথন এমন, এখানকার জীবন অতটা খারাপ নয়, এখানে ভালো পরিস্থিতিই বিরাজ করছে। এখানে আসলে তুমি বিয়ে করতে পারবে এবং এই নতুন স্থান ও ধারণার অংশ হতে পারবে। আর আইএস যে নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করছে তাকে গণহত্যা হিসেবে বিবেচনা না করে বরং একে একটি ন্যায্য লড়াই হিসেবে গণ্য করা হয়। ধারণাটি হলো এমন যে, তুমি সিরিয়া ও ইরাকে এসে এই বিশাল অনুপাতের সংঘাতে অংশগ্রহণ করতে পার, ইতিহাসে ঘটে চলা তাৎপর্যপূর্ণ কিছু একটার অংশ হতে পারে।
আইএসআইএল যে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন গণমাধ্যম কার্যক্রম চালায় তা-ও সম্ভবত কোনও এক অসাধারণ মেধাবী আমেরিকান নাগরিকের মাথা থেকে এসেছে, যা নজিরবিহীন। এক দশক ধরেই আমরা এমন বহু ঘটনা দেখে এসেছি। কিন্তু নতুন যা ঘটছে তা হলো, এত সংখ্যক ভিডিও এর আগে আর কখনও প্রকাশ করা হয়নি। আর নিষ্ঠুরতাও এমনভাবে মাত্রা ছাড়িয়ে যায়নি। মাত্র এক বছরেই ক্রুশবিদ্ধকরণ, গণহারে মৃত্যুদ- কার্যকর, লোককে দিয়ে নিজেদের কবর খোঁড়ানোর মতো ভিডিও আগের কোনও সন্ত্রাসী সংগঠনই প্রচার করেনি। এই বীভৎসতা প্রদর্শনের মাধ্যমে আইএস যুদ্ধক্ষেত্র এবং বিজিত অঞ্চলের জনগণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী নজিরবিহীন প্রচারণা পেয়েছে। আর এই ব্যাপক প্রচারণাই জঙ্গি সংগঠনটির সদস্য সংগ্রহে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। উন্নত প্রযুক্তির গণমাধ্যম ও প্রশিক্ষণসহ অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র জোগানে কোনও বৃহৎ তৃতীয় শক্তির মদদ থাকার কথা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমেরিকা ও ফ্রান্সের সম্মিলিত শক্তি বাগদাদিও শক্তিকে কেন প্রতিহত করতে পারছে না, সেটাই রহস্যজনক। মদদদাতা মূল উৎসকে উৎখাত করতে না পারলে সন্ত্রাসবাদ দমন করা সম্ভব হবে না।
এদিকে, ১৩-০৭-১৬ তারিখে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশিত সংবাদ প্রতিবেদনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র জন পিসাকির মন্তব্য হলোÑ ‘আইএসআইএল-র প্রচারণা যন্ত্রের মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের যে লড়াইটা করতে হচ্ছে তা নজিরবিহীন। আগে কখনও এমন যুদ্ধ করতে হয়নি আমাদের। এর মোকাবিলা করতে হলে আমাদের আরও অনেক কিছুই করতে হবে। আইএসের প্রচারণা যন্ত্র থেকে আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিদিন অন্তত ৯০ হাজার টুইট চালাচলি হয়।’ আমেরিকা ও ফ্রান্সের বিমান হামলার প্রতিশোধ নিতে গিয়ে ফ্রান্স ও আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে বর্বর হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে জঙ্গি সংগঠন আইএস। হত্যালীলার অতি সাম্প্রতিক সংযোজন হলো ১ জুলাই রাতে ঢাকায় স্প্যানিশ ক্যাফেতে হামলা করে ২০ জন বিদেশিকে হত্যা। জুলাইর ৩ তারিখ বাগদাদে জোড়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করা হয় ১৩০ জনকে। ঈদের প্রাক্কালে ৪ জুলাই মদিনার মসজিদে নববীর কাছে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের ফলে বোমারুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। আবার, ঈদের নামাজের প্রাকমুহূর্তে কিশোরগঞ্জ জেলায় জঙ্গিদের বিস্ফোরণ ও গুলি চালনার ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৪ জন। রমজান মাসের ওই হত্যাকা-ের পরও রক্তপানের পিপাসা মিটতে না মিটতেই একজন মাত্র জঙ্গি ১৪ জুলাই রাতে ফ্রান্সের নিস শহরে জাতীয় দিবস উপলক্ষে আনন্দমগ্ন জনতার ওপর অভিনব কায়দায় ট্রাক চালিয়ে কমপক্ষে ৮৪ জনকে হত্যা করে। নরপিশাচ দ্বারা ধারাবাহিক হত্যালীলার তালিকা শেষই করা যাচ্ছে না। ২২ জুলাই সন্ধ্যায় জার্মানির মিউনিখে একটি শপিংমলে আইএস কর্তৃক গুলিবর্ষণের ফলে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আবার, এর পরদিনই ২৩ জুলাই আফগানিস্তানের শিয়া হাজারা সম্প্রদায়ের বিদ্যুৎ লাইনের দাবিতে কাবুলে এক বিক্ষোভ মিছিলে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হত্যা করা হয় ৮০ জনকে। জঙ্গি সংগঠনগুলোর উন্মাদনায় আমজনতার জীবনে আতঙ্ক বিরাজ করছেÑ কখন, কোথায় বোমা বিস্ফোরণ বা গুলি চালনার ঘটনা ঘটে তার ঠিকানা নেই। কাঁটা দিয়ে কাঁটা তোলা গেলেও অস্ত্র দ্বারা যে অস্ত্রের ঝঙ্কার বন্ধ করা যায় না, তা বর্তমান পরিস্থিতি প্রমাণ করছে। প্রতিটি ধর্মই মানবতার শিক্ষা দেয়। ধর্মের নামে অমানবিক যে কোনও ধরনের কার্যকলাপকে প্রতিরোধ করতে হবে যে কোনও মূল্যের বিনিময়ে। মুখোশধারী সন্ত্রাসবাদকে দমন করার জন্য সকল শ্রেণির শান্তিপ্রিয় সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। শুধু গতানুগতিক ফতোয়া ও বিবৃতিতে দায়িত্বকে সীমাবদ্ধ না রেখে মাঠে নেমে প্রমাণ করতে হবে নিজের দায়বদ্ধতা। হযরত মুহাম্মদ (সা.)-র বাণী হচ্ছেÑ ‘তোমরা অতি অবশ্যই অপরকে সৎকর্ম করার অনুরোধ আর মন্দকর্ম করতে নিষেধ কর, আর তা যদি না কর, তা হলে কিন্তু আল্লাহ তোমাদের জন্য পাঠাবেন বিভিন্ন প্রকারের বিপদ বা শাস্তি।’ তাই নরহত্যার মতো জঘন্য কাজের নিষেধ গণপ্রতিবাদের মাধ্যমে সাব্যস্ত করার লক্ষ্যে সবাইকে একজোট হয়ে এগিয়ে আসতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন