ইচ্ছা এবং সামর্থ থাকার পরও বিগত দুই বছর পবিত্র রমজান মাসে ওমরাহ পালনের সুযোগ ছিল না। করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি আরব সরকার এই সুযোগ বন্ধ রেখেছিল। এ বছর পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক অবারিত হয়েছে দ্বার। মুক্ত হয়েছে বিধিনিষেধ। অনেকে হজের ফজিলত পাওয়ার আশায় রমজানে ওমরাহ করতে চান। ফলে এবার বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রী বাড়ছে দুই-তিন গুণ। ওমরাহ ভিসা নেওয়ার হিড়িক পড়েছে। অতি সহজে ভিসা পেলেও মুসল্লিরা পর্যাপ্ত ফ্লাইটের অভাব এবং টিকিট সংকটে হতাশ হয়ে পড়েছেন। টিকিটেরও অগ্নিমূল্য। করোনা শুরুর আগে সৌদি আরবে যাতায়াতের যে টিকিট ছিল ৫০ হাজার টাকার মধ্যে তা এখন লাখের ওপর। সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইটের বাইরে থার্ড ক্যারিয়ার না থাকায় টিকিট নিয়ে কাড়াকাড়ি চলছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে প্রতিদিন সৌদি আরবে গমনের টিকিটের চাহিদা ৫ হাজারের বেশি। কিন্তু দেড় হাজারের বেশি টিকিট দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। টিকিটের একটি বড় অংশ উচ্চমূল্যে কিনে নিচ্ছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। দ্রুত এই সংকট সমাধানে ফ্লাইটসংখ্যা বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহণ করতে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে রোববার চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুবিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব (হজ-২) এসএম মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ওমরা যাত্রীসহ আগামী হজ মওসুমে হজযাত্রীদের নির্বিঘ্নে সৌদি আরবে গমন-প্রত্যাগমন নিশ্চিত করতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটসংখ্যা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। করোনা পূর্ববর্তী সময়ের মতো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে চলাচলকারী বিমানের ট্রানজিট যাত্রী হয়ে ওমরাহ যাত্রীদের সৌদি আরবে গমনের সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশে সৌদি আরবের অন্যান্য এয়ারলাইনসকে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ দেওয়ারও আহ্বান জানানো হয় চিঠিতে।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) নেতারা বলছেন, ওমরাহ যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধির বাইরে বিমান ও সৌদি এয়ারলাইনসের একচেটিয়া ব্যবসা করার মনোবৃত্তিও এ সংকটের জন্য দায়ী। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে দুই দেশের পতাকাবাহী রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস ও সৌদিয়ার বাইরে অন্য কোনো এয়ারলাইনস ওমরাহ যাত্রী বহন করতে পারবে না বলে সৌদি সরকার সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এমন সিদ্ধান্তের কারণে সংকট আরো বেড়েছে।
হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি শাহাদাত হোসাইন তসলিম রোববার গণমাধ্যমকে এ বিষয়ে বলেন, এমনিতেই বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ রোজায় ওমরাহ পালনে যেতে চান। তার ওপর গত দুই বছর তারা যেতে পারেননি। স্বাভাবিকভাবেই তারা হজ এজেন্সিগুলোতে ভিড় করছেন। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে এয়ারলাইনস হিসেবে শুধু বিমান এবং সৌদিয়া থাকার কারণে যাত্রীরা অসহায় অবস্হায় পড়েছেন।
সরাসরি ফ্লাইটের বাইরে সৌদি আরব ওমরাহ যাত্রীদের দেশটিতে ঢুকতে দেবে না। অথচ বাংলাদেশ বাদে অন্য দেশের সাধারণ যাত্রীরা বিভিন্ন দেশের ট্রানজিট নিয়ে সৌদিতে ঠিকই ঢুকছেন। কঠিন নিয়মের কারণে বাংলাদেশ ভুগছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন