শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

প্রশ্ন : স্বাধীনতা কি আল্লাহর দেয়া বড় নিয়ামত?

| প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৩ এএম

উত্তর : স্বাধীনতা মানুষের মৌলিক অধিকার।মানুষ সৃষ্টি জগতে স্বাধীন ভাবে বাচতে চায়। বিশ^ নবী (দ) বলেন,‘প্রত্যেক নব জাতক স্বভাব ধর্মে জন্মে,তার পিতা-মাতা তাকে বিভিন্ন শৃঙ্খলাবদ্ধ করে’।আমরা মানুষ শ্রেষ্ঠ জাতি। এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত বা গোলামী করি না’।

আমাদের আদি পিতা হযরত আদম (আ) ও মাতা হযরত হাওয়া (আ)। সে হিসাবে আমরা প্রত্যেক মানুষ ভাই ভাই। সৃষ্টির অবদান হচ্ছে-সাদা-কালো,খাটো-লম্বা,বর্ণ বৈষম্য ইত্যাদি। সৃষ্টিগত ভাবে বর্ণ,ভাষা বৈষম্য, ভৌগলিক ও নৃতাত্তি¦ক পার্থক্য সৃষ্টি করে না।মহান প্রভু ঘোষনা করেন,‘হে মানুষ! আমি তোমাদিগকে সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ ও এক নারী হতে.পরে তোমাদিগকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে,যাতে তোমরা এক অন্যের সহিত পরিচিত হতে পারো। তোমাদের মধ্যে আল্লাহ সব কিছু জানেন,সব খবর রাখেন’। আমাদের বিশ^ নবী (দ) মহা মানব। তিনি বিদায় হজ্জের ভাষনে ঘোষনা করেন,‘কালোর উপর সাদার প্রধান্য নেই,অনারবের উপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই’। ইসলামের একমাত্র মুল্যবান বানী,‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ’ অর্থ-এক আল্লাহ ছাড়া আর কোন প্রভু নেই হযরত মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রাসুল। স্বাধীনতা আল্লাহর দেয়া বড় নিয়ামত। মানুষের মৌলিক অধিকার এবং ইসলামের মুল শিক্ষা।বিশ^ নবী (দ) শুধু দাস-দাসীকে মুক্ত করে শেষ করেন নি। তিনি (দ) দাস- দাসীকে সন্তান হিসাবে গ্রহন করেন।বিশ^ নবী (দ) দাসকে ভাইয়ের মর্যাদা এবং গোলামকে যুদ্ধের ময়দানে সেনাপতির দায়ীত্ব দিয়েছেন। কালো বর্ণের হাবশি দাস বিলাল (রা) কে মসজিদে নববীর প্রধান মুয়াজ্জিনের দায়ীত্বে নিযুক্ত করেন। ধনী-গরীব,রাজা-প্রজা, আরব-অনারব সব শ্রেনীর আম জনতা স্বাধীনতার স্বাদ নিতে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেন। চারি দিকে স্বাধীনতার সুখ বাতাসের সাথে ছড়িয়ে পড়েছে।ভারত উপ মহাদেশে বর্ণ ও শ্রেনী বৈষম্যর শিকার কোটি কোট নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহন করেন। স্বাধীনতার মহা সুখ ভোগ করেন। মুক্তির স্বাদ গ্রহন করেন বিভিন্ন ধর্ম ও জাতির মানুষ।

স্বাধীনতা মানে সত্য প্রকাশ,সত্য গ্রহন,সত্য প্রচার,সত্য সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার স্বাধীনতা।স্বাধীনতা মানে সুন্দর,সুশীল,সুকুমার বৃত্তি চর্চা। স্বাধীনতা মানে অসুন্দরকে বর্জা,অসত্যকে পরিহার করা। মোট কথা অন্যায়ের প্রতিবাদ করাই স্বাধীনতা। পালা বদলের হাওয়ায় দিনের পর রাত আসে। সময়ের পরিবতন ঘটে। এমনি ভাবে ভারতের মুক্ত আকাশে নেমে আসে পরাধীনতার ঘোর অন্ধকার। ভারত বাসি আবার বন্দি হয় ব্রিটিশ শাসনের বেড়া জালে। সাধারন মানুষ মুক্তির জন্য পাগল। চিন্তাশীল, বিবেকবান মানুষ মুক্তির জন্য ছটপট করেন। নদীর স্রোত আর সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। ভারত ও পাকিস্তান ১৯৪৭ ইং সালে স্বাধীনতা লাভ করে। দেশ স্বাধীন হয়। কিন্তু পাকিস্তানের শাসক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ অপকৌশলে ইসলামের প্রকৃত মুক্তির স্বাদ মানুষকে উপহার দিতে পারেনি। সময়ের ব্যবধানে ইয়াহিয়া, টিক্কা, আইয়ুব ও ভুট্রো ক্ষমতায় আসন দক্ষল করেন। পাক বাহিনী পুর্ব- পশ্চিম পাকিস্তানের মাঝে বিরাট পার্থক্য তৈরী করেন। শুরু হয় বাঙ্গালী আর পাঞ্জাবী মাঝে পার্থকের দেয়াল।বাঙালী জাতি স্বাধীনতা পেয়েও আবার পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ। ১৯৫২ সাল। শুরু হলো ভাষা আন্দোন।এ আন্দোলনে মা বাঙালীর অধিকার প্রতিষ্টা হলো।মাতৃ ভাষা মানুষের মৌলিক অধিকার।ভাষা আল্লাহ দান। আল কোরআনে এরশাদ হচ্ছে-‘আর তার নির্দশনাবলির মধ্যে রয়েছে আকাশ মন্ডলী ও পৃথিবী সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। এতে জ্ঞানীদের জন্য অবশ্যই বহু নির্দশন রয়েছে’।

উত্তর দিচ্ছেন : আসাদুজ্জামান আসাদ প্রভাষক(আরবী), পঞ্চগড় নুরুন আলা নুর কামিল মাদ্রাসা

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন