শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি টিআইবি’র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০২২, ৬:২৯ পিএম

রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজনের আত্মীয়দের বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে জরিমানা করায় টিটিই বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা ন্যক্কারজনক বলে মনে করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। এই ঘটনায় নৈতিকবোধ থেকে মন্ত্রীর সাময়িক সময়ের জন্য পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে টিআইবির পক্ষ থেকে এই আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণের দায়ে রেলমন্ত্রীর স্ত্রী’র তিন আত্মীয়কে জরিমানা করায় সংশ্লিষ্ট টিকিট পরিদর্শককে (টিটিই) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এটি ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে টিআইবি গভীর উদ্বেগ ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে। ন্যয়-নিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালনের কারণে পুরস্কৃত হওয়ার পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট টিটিই-কে তড়িৎ গতিতে বরখাস্তের সিদ্ধান্তে দেশবাসীর কাছে এই বার্তাটিই পরিষ্কার হয়েছে যে, ক্ষমতাবানরাই শুধু নয় বরং তাদের প্রভাব বলয়ের মধ্যে থাকা আত্মীয় পরিজনদের জন্যও আইন প্রযোজ্য নয় বরং অনিয়মের কাছে মাথানত করেই রুটিরুজি টিকিয়ে রাখার অন্যতম উপায়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি ক্ষমতার অপব্যবহারের একটি নির্লজ্জ ও নিকৃষ্টতম উদাহরণ। এখানে মূলত দুইভাবে ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনা ঘটেছে, প্রথমত রেলমন্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের বিনা টিকেটে রেল ভ্রমণ অর্থাৎ তারা ধরেই নিয়েছিলেন যে, রেলের প্রচলিত আইন তাদের জন্য প্রযোজ্য নয়! দ্বিতীয়ত, সংশ্লিষ্ট টিকিট পরিদর্শক তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করায়, তাঁকে কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ প্রদান না করেই তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল ফোনে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পুরস্কৃত হওয়ার পরিবর্তে বরখাস্ত হবার ঘটনাÑদেশবাসীর কাছে এই বার্তাটিই পৌঁছেছে যে, ক্ষমতার দাপট ও অনিয়মই হচ্ছে বাস্তবতা। তাছাড়া, এই নিকৃষ্টতম দৃষ্টান্ত এখনও গুটিকয়েক যারা নিষ্ঠা ও সততার সাথে স্ব স্ব ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করছেন তাঁদের জন্য একটি শক্তিশালী নেতিবাচক বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় রেলমন্ত্রী নিজের কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা গণমাধ্যমের কাছে অস্বীকার করেছেন এবং তাঁর আত্মীয় পরিচয়দানকারীদের চেনেন না বলে দাবি করেছেন। একইসাথে রেলকর্তৃপক্ষ টিটিই বরখাস্তের জন্য যাত্রীদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগকে সামনে নিয়ে এসেছে এবং যার সাথে রেলমন্ত্রীও একমত হয়েছেন। এমন বাস্ততবতায় প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে, বিনা টিকিটের সেসব যাত্রী টিটিইকে রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় কেন দিয়েছিলেন? তাদের সত্যিকার পরিচয় রেল কর্তৃপক্ষ যাচাই করেছিলেন কি-না? যাত্রীদের সাথে অসদাচরণের অভিযোগ বিষয়ে টিটিই-এর বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে রেলমন্ত্রীর পরিচয় কতোটা প্রভাব বিস্তার করেছিলো? এসব বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন।

টিআইবি মনে করে যেহেতু রেলমন্ত্রীর আত্মীয়দের জড়িয়ে এ জাতীয় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে; তাই বিনা টিকেটে ভ্রমণকারীগণ রেলমন্ত্রীর পরিচয় ব্যবহার করেছেন, তাই ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নৈতিক অবস্থান থেকে সাময়িক সময়ের জন্য তাঁর পদত্যাগ করা উচিত। পাশাপাশি যে-কোনো ধরনের ভয়ভীতি ও চাপের ঊর্ধ্বে থেকে সংশ্লিষ্টগণ যাতে বিনা টিকেটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্তদের ও দায়িত্ব পালনকারী টিকিট পরিদর্শকের বরখাস্তের সাথে সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে নির্বিঘেœ তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারেন, তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন