শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

‘সরকারের ফাঁদে যারা পা দেবে তাদের ঘেরাও করতে হবে’

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০২২, ১২:০০ এএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, আমরা একটা সিদ্ধান্তে একমত হয়েছি, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। শেখ হাসিনার কোনো ক্ষমতা নেই। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- ইভিএমে ভোট হবে, আরে ভোটে গেলে তো ইভিএমে ভোট হবে। বিএনপিসহ দেশের আন্দোলনরত সব রাজনৈতিক দল একমত এই সরকারের অধীনে কোনো ভোটে অংশ নেবেন না। এই পার্লামেন্ট রেখে কোনো নির্বাচন নয়। এখন দালাল ধরতে হবে, এই সরকারের ফাঁদে যারা পা দেবে তাদের ঘেরাও করতে হবে। তাদেরকে নজরে রাখতে হবে।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দেশব্যাপী বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রতিবেশী একটি দেশ আগামী নির্বাচনের সিট দেওয়ার জন্য ফেরী করছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন আপনি সিট দেওয়ার কে? সংবিধানের কোনো পাতায় লেখা আছে? এইসব ফেরী ওয়ালারা যেখানে যেখানে ফেরী করতে যান, নেতাকর্মীদের বলব রাস্তায় পেলে পা দুইটা ভেঙ্গে দেবেন।

শ্রীলঙ্কার রাজাপাকসে সরকারের পরিনতি প্রসঙ্গ টেনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচার-লুটপাটকারীদের পরিনতি ভালো হয় না। শ্রীলঙ্কার অবস্থা কেন এমন হলো? এক সময় শ্রীলঙ্কার মুদ্রা পাচারকারীরা আমেরিকায় ধরা পড়ল। তারপর ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় সারা শ্রীলঙ্কায় রাজাপাকসে ও তার পরিবার লুটপাট ও কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে শান্তিপ্রিয় শ্রীলঙ্কার মানুষ আজ ফুঁসে উঠেছে। রাজাপাকসে পালিয়েছে। তার লোকজন নদীতে ঝাঁপ দেওয়ারও সুযোগ পাচ্ছে না। তাহলে এই আওয়ামী লীগ সরকারের পরিণতি রাজপাকসে সরকারের চেয়ে ভয়াবহ হতে পারে।

সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হোক তা চাই না। আমরা চাই মানসম্মানের সাথে আপনারা ক্ষমতা থেকে প্রস্থান করুন। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, সংসদ বিলুপ্ত করুন। এরপর নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে জনগণ যাকে ভোট দিবে তারা সরকার গঠন করবে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে গয়েশ্বর রায় বলেন, নেতাকর্মীদের বলব, আগামী দিনে শৃঙ্খলা বজায় রাখবেন, রাজপথে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন। আপনারা মূল্যায়িত হবেন, জাতির কাছে সম্মানিত হবেন। টেলিভিশনে ছবি তোলার প্রবণতা আমাদের বদলাতে হবে। এখন সময় নেই। এখন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময়। ছাত্র যুবকরা যেই শ্লোগান দিত, সেই শ্লোগান দিতে হবে। শ্লোগান দিতে হবে অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, খালেদা জিয়ার অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন, তারেক রহমানের অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন।

বিএনপি ও বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর হামলার পরিকল্পিত মহড়া চলছে অভিযোগ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এখন হামলার প্রতিবাদ নয়; প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে, হামলা হলে পাল্টা হামলা, আঘাত আসলে পাল্টা আঘাত করতে হবে। যেখানেই হামলা সেখানেই প্রতিরোধ সেখানেই পাল্টা হামলা এটা আমার গণতান্ত্রিক অধিকার। এতে যারা বাধা দিবে, তাদের আমরা মোকাবেলা করবো। পোশাকে হোক বিনা পোশাকে হোক আর ছাড় দেওয়ার সময় নেই। আর মুখ বুঝে পিঠে লাঠির মার খাওয়ার সময় নেই। আমরা রাজপথে একমাত্র রক্ত দেব, আর যারা রক্ত নিবে-সেই দিন শেষ জনগণের বাংলাদেশ সামনে অপেক্ষা করছে।

এ সময় সরকারের মন্ত্রী-এমপি তাদের আত্মীয় স্বজনের দুর্নীতি ও অর্থ পাচার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, লুটপাটের জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। জনগণ দেশ স্বাধীন করেছে সুখে থাকার জন্য, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র দেখার জন্য। আমরা সেই রাষ্ট্রের জন্য লড়াই করছি। আমরা ক্ষমতার জন্য লড়াই করছি না, আমরা জনগণকে ক্ষমতাবান করতে লড়াই করছি। জনগণ ভোট দিয়ে সরকার গঠন করবে।

উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হকের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সরাফত আলী সপু, আজিজুল বারী হেলাল, আব্দুস সালাম আজাদ, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুবদলের সাইফুল আলম নিরব, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন