ইসলাম একটি সার্বজনীন, স্বয়ংসম্পূর্ণ ধর্ম ও জীবন ব্যবস্থা। এতে রয়েছে মানব জীবনের প্রাচীন ও আধুনিক কালের সকল জিজ্ঞাসা ও সমস্যার যথাযোগ্য সমাধান। জীবন সমস্যার ছোট-বড়, সহজ-কঠিন সকল বিষয়েই ইসলামী শরীআহ সরব। বিশ্ব জগতে এমন কোনো বিষয় পাওয়া যাবে না যার ব্যাপারে ইসলাম নিরব থেকেছে কিংবা তার সমাধান দিতে অপারগ হয়েছে। হাল জামানায় আবিস্কার ও উদ্ভাবন হয়েছে বিষ্ময়কর অনেক বিষয় বস্তু। সেই বিষ্ময়কর আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের অন্যতম হলো টেস্টটিউব ও সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদান। এ ব্যাপারেও ইসলাম নীরব থাকেনি; বরং দিয়েছে যথাযোগ্য যুক্তিগ্রাহ্য সমাধান এবং পেশ করেছে সোনালী দর্শন। নিম্নে আমরা এ সম্পর্কে ইসলামের সোনালী দর্শন ও সমাধান নিয়ে আলোকপাত করব ইনশাআল্লাহ।
টেস্টটিউব ও সারোগেসি পদ্ধতির প্রকার ও প্রক্রিয়া
টেস্টটিউব ও সারোগেসি মূলত স্বাভাবিক ও চিরাচরিত নিয়মে সন্তান জন্মদানে অক্ষম স্বামী-স্ত্রীর জন্য মাতৃত্ব ও পিতৃত্ব লাভের একটি আধুনিক পদ্ধতি। সাধারণত সন্তান জন্মদানে অক্ষম দম্পতিই এ পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে শারীরিক সৌন্দর্য ও বডি ফিটনেস ধরে রাখার জন্যও কোনো কোনো যুগল টেস্টটিউব ও সারোগেসি পদ্ধতি অবলম্বন করে পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের সাধ লাভ করে থাকে। কেউ কেউ আবার বিয়ে ছাড়াই সন্তান লাভের জন্য এ পদ্ধতি গ্রহণ করে থাকে। সে যাই হোক
এ পদ্ধতিতে সন্তান প্রজননের ক্ষেত্রে সাধারণত যে প্রক্রিয়াগুলো অবলম্বন করা হয়, সেগুলো প্রধানত নিম্নরুপ- ১. স্বামী যদি স্বাভাবিক ও চিরাচরিত নিয়মে তার বীর্য শুক্রানু স্ত্রীর বাচ্চদানিতে পৌছাতে অক্ষম হয়, তখন তার বীর্য শুক্রানু ও স্ত্রীর ডিম্বানু বিশেষ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করে টিউব, ইনজেকশন কিংবা অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় স্ত্রীর জরায়ুতে বিশেষ পদ্ধতিতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়। এভাবে স্ত্রী সন্তান জন্মদানে সক্ষম হয়। ২.স্বামী সুস্থ। স্ত্রীর ডিম্বানুতে সন্তান জন্ম দানের সক্ষমতাও রয়েছে কিন্তু স্ত্রীর শারীরিক কোনো সমস্যার কারণে বাচ্চাদানিতে ডিম্বানু এসে পৌছে না। ফলে স্ত্রী সন্তান জন্ম দিতে পারে না। এক্ষেত্রে স্ত্রীর ডিম্বানু আর স্বামীর শুক্রানু নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় সংগ্রহ করে নির্ধারিত নিয়মে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত টিউবে সংরক্ষিত রাখা হয়। এরপর সেই টিউব স্ত্রীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। এভাবে সে সন্তান জন্মদান করে। ৩. স্ত্রী সন্তান জন্মদানে সক্ষম কিন্তু স্বামী সক্ষম নয়। অর্থাৎ স্ত্রীর ডিম্বানুতে সন্তান জন্মদানের উপাদান রয়েছে কিন্তু স্বামীর শুক্রানুতে সেই উপাদান নেই। এ অবস্থায় কোনো ভিন্ন পুরুষের শুক্রানু সংগ্রহ করে উপরোক্ত দুটি পদ্ধতির কোনো একটি অবলম্বন করে স্ত্রী সন্তান জন্মদান করে। ৪.স্বামী সুস্থ অর্থাৎ তার বীর্য শুক্রানুতে সন্তান জন্মদানের উপাদান আছে কিন্তু স্ত্রীর ডিম্বানুতে সেই উপাদান নেই। তখন ভিন্ন কোনো নারীর ডিম্বানু সংগ্রহ করে স্বামীর শুক্রানুর সাথে মিশ্রিত করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করে স্ত্রীকে সন্তান প্রসবে সক্ষম করে তোলা হয়। ৫.কোনো মহিলা মা হতে আগ্রহী কিন্তু তার স্বামী নেই। তখন কোনো পুরুষের শুক্রানু সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট পদ্ধতি অবলম্বন করে মহিলাটি সন্তান জন্মদান করে মাতৃত্বের সাধ লাভ করে থাকে। ৬.স্বামীর শুক্রানু এবং স্ত্রীর ডিম্বানুতে সন্তান জন্ম দানের উপাদান আছে কিন্তু স্ত্রীর বাচ্চাদানিতে সন্তান ধারণের যোগ্যতা নেই। তখন এ দম্পতি যুগলের শুক্রানু, ডিম্বানু সংগ্রহ করে নির্ধারিত প্রক্রিয়ায় নির্ধারিত মিয়াদ পর্যন্ত টিউবে রেখে অন্য কোনো মহিলার (যে মহিলা সন্তান জন্মদানে সক্ষম এবং এ যুগলের সন্তান ধারণে সম্মত) দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়। এভাবে মহিলাটি সন্তান জন্মদান করে। আর এই দম্পতি মাতৃত্ব ও পিতৃত্ব লাভ করে। ৭. কোনো এক পুরুষের একাধিক স্ত্রী রয়েছে। তাদের কোনো একজনের ডিম্বানুতে উপাদান রয়েছে ঠিক কিন্তু শারীকির কিংবা বাচ্চাদানির কোনো সমস্যার কারণে সন্তান জন্মদানে সে অক্ষম। অন্যান্য স্ত্রীরা সুস্থ এবং সন্তান প্রসবে সক্ষম। তখন অক্ষম স্ত্রী ও স্বামীর ডিম্বানু-শুক্রানু নিয়ে মিলিয়ে বর্ণিত পদ্ধতিতে মহিলাটির কোনো সতীনের দেহে টিউবটি প্রতিস্থাপন করা হয়। এরপর এ সতীন অক্ষম সতীনের জন্য সন্তান জন্মদান করে। টেস্টটিউব ও সারোগেসি পদ্ধতিতে প্রধানত এই প্রক্রিয়াগুলো অবলম্বন করা হয়। নিম্নে প্রক্রিয়াগুলোর শরয়ী হুকুম বর্ণনা করা হলো।
প্রক্রিয়াগুলোর হুকুম
টেস্টটিউব ও সারোগেসির উপরোক্ত প্রক্রিয়া ও প্রকারগুলোর প্রতি দৃষ্টিপাত করলে কুরআন-হাদীসের দৃষ্টিতে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হয়। ১. প্রথমত যে বিষয়টি বিবেচনায় আনতে তা হলো, সন্তান জন্মদানের চিরাচরিত প্রক্রিয়া ও পদ্ধতির বাইরে গিয়ে অস্বাভাবিক প্রক্রিয়া গ্রহণ করে সন্তান জন্মদান করা হচ্ছে, যা শরীআতের মেজাজ পরিপন্থী ও নিন্দিত। ২. এই পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদানে পর্দার বিধান লঙ্গিত হয় চরমভাবে। কারণ এই প্রক্রিয়ায় স্বামী-স্ত্রী ছাড়াও তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি ও হস্তক্ষেপ ঘটছে এবং মহিলার সতর ও লজ্জাস্থানে ডাক্তার ও তার সহকারীগণের দৃষ্টি, পর্যবেক্ষপন ও স্পর্শ পাওয়া যাচ্ছে। আর ক্ষেত্রবিশেষ মহিলার কোনো পুরুষ ডাক্তারের সাথে একান্ত নির্জনে অবস্থান করতে হচ্ছে। শরীআতের দৃষ্টিতে এ বিষয়গুলো যে কত মারাত্মক ও ভয়াবহ সামান্য চিন্তা করলেই পরিস্কার হয়ে যায়। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-“আপনি মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং স্বীয় যৌনাঙ্গের হেফাজত করে। এ ব্যবস্থা তাদের পবিত্রতার জন্য অধিকতর কার্যকর। আপনি মুমিন নারীদেরকে বলুন, তারা যেন নত রাখে তাদের দৃষ্টি এবং হেফাজত করে যৌনাঙ্গকে। আর তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশ হয়েই যায় তাছাড়া তাদের অন্য কোন সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তাদের বক্ষদেশে ফেলে রাখে মাথার ওড়না।” (সূরা নূর:৩০-৩১) অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে-“ তোমরা নবীর স্ত্রীগণের নিকট কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের ও তাদের আত্মার পবিত্রতায় অধিক কার্যকর।”(সূরা আহযাব:৫৩) এখানে প্রনিধানযোগ্য বিষয় এই যে, উক্ত আয়াতে মহানবীর সা. পূণ্যাত্মা ও নিষ্কলুষ স্ত্রীগণকে পর্দার নির্দেশ দেয়া হয়েছে, যাদের অন্তরকে পাক-পবিত্র রাখার দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ গ্রহণ করেছেন। অপর পক্ষে যে সকল পুুরুষদের এই নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন রাসূলুল্লাহ সা. এর মহান সাহাবী যাদের মাঝে অনেকের মর্যাদা ফেরেশতাদের থেকেও উর্ধ্বে। এতদ সত্ত্বেও তাদের আত্মিক পবিত্রতা ও মানসিক কুমন্ত্রনা থেকে বাচাঁর জন্য তাদের মধ্যে পর্দার ব্যবস্থা জরুরী মনে করা হয়েছে। আজ এমন ব্যক্তি কে আছে যে, তার মনকে মহান সাহাবাগণের মন অপেক্ষা আর তার স্ত্রীর মনকে পূণ্যাত্মা নবীপত্মীগণের মন অপেক্ষা অধিকপবিত্র ও নিষ্কলুষ দাবী করতে পারে ? আর মনে করতে পারে যে, পর নারী ও পুরুষের সাথে একান্তে অবস্থান ও মেলামেশা কোনা অনিষ্টের কারণ হবে না।”(মাআরিফুল কুরআন:৭/১৯৪-১৯৫) সাহাবী আবু সাঈদ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “কোনো পুরুষ যেন অন্য পুরুষের গুপ্তাংশের দিকে না তাকায়, এভাবে কোন নারীও যেন অন্য নারীর গুপ্তাংশের দিকে না তাকা। (মুসলিম,মিশকাত:২/২৬৯)। অন্য এক হাদীসে আছে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- “কোন পুরুষ কোনো বেগানা নারীর সাথে একান্তে অবস্থান করলে তাদের তৃতীয়জন হয় শয়তান।” (তিরমিযী:১/২২১) সাহাবী জাবের রা. বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-“তোমরা বেগানা নারীর নিকট প্রবেশ করো না। কেননা শয়তান তোমাদের শীরা-উপশীরায় চলাচল করে।” (মুসলিম:২/২১৬; তিরমিযী:১/২২২) ৩. তৃতীয়ত যে বিষয়টি বিবেচ্য তা হলো, স্বামী-স্ত্রী দুজনের একজন অথবা উভয়ের বাইরে তৃতীয়জনের উপাদান সন্তান জন্মদানের সাথে যোগ হয়ে থাকে, যা শরীআতের দৃষ্টিতে একের ক্ষেতে অপরের চাষাবাদ করা নামান্তর। আর এ বিষয়টি ইসলামী শরীআতে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ও অভিশপ্ত কবীরা গুনাহ এবং ব্যভিচারের নামান্তর। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন- আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোনো ব্যক্তির জন্য নিজের পানি দিয়ে অন্যের ফসল সিঞ্চিত করা বৈধ নয়।” (আবু দাউদ:২/২৯৩; জাদীদ ফিকহি মাসায়েল:৫/১৫২) ৪. চতুর্থ বিবেচ্য বিষয়টি হলো, এ প্রক্রিয়ায় জন্মলাভকারী সন্তানের বংশ পরিচয় নির্ধারণের ক্ষেত্রেও মানাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হয়। অথচ বংশ পরিচয় নির্ণয় কুরআন-হাদীসের দৃষ্টিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও অতীব জরুরী বিষয়। মূলত এ কারণেই ব্যভিচার নিষিদ্ধ এবং ইদ্দত পালন আবশ্যকীয় করা হয়েছে। এদিক বিচারেও এ পন্থা অবলম্বন একটি মারাত্মক কবীরা গুনাহ। (হুজ্জাতুল্লাহিলবালিগাহ:২/১৩; জাদীদ ফিকহি মাসায়েল:৫/১৫১-১৫২)
বিশেষ প্রয়োজনে যে পদ্ধতি জায়েয
প্রকৃতপক্ষে বিচার-বুদ্ধি ও রুচির বিকৃতি না ঘটলে সুস্থচিন্তা, বিশুদ্ধ রুচি ও আত্মমর্যাদা সম্পন্ন কোনো মানুষ পিতৃত্ব ও মাতৃত্ব লাভের আশায় এ ধরনের কোনো “আজব” ও নিন্দিত পন্থা ও প্রক্রিয়া অবলম্বন করতে পারে না। এ সকল কারণে একটি মুসলিম দম্পতির জন্য সর্বোত্তম ও নিরাপদ উপায় হলো এ পদ্ধতিতে সন্তান গ্রহণের মাধ্যমে পিতৃত্ব ও মাতৃত্বের সাধ লাভের আশা পরিহার করে সবর করে সকল কিছুর কর্তা ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী মহান আল্লাহর দরবারে এজন্য প্রার্থনা করতে থাকা। এরপরও যদি কোনো অসহায় ও নিরুপায় দম্পতি টেস্টটিউব পদ্ধতি অবলম্বন করে মা-বাব হতে আগ্রহী হয়, তাহলে তাদের জন্য কেবলমাত্র প্রথম দুটি প্রক্রিয়া (অর্থাৎ যেখানে কেবল স্বামী ও স্ত্রীর উপদানই নেওয়া হয় এবং স্ত্রীর দেহেই তা প্রয়োগ বা স্থাপন করা হয়।) অবলম্বন করে নিম্নোক্ত শর্তসাপেক্ষে সন্তান গ্রহণের অবকাশ আছে। অন্য পদ্ধতিতে নয়। অন্য সকল পদ্ধতিই হারাম। শর্তগুলো হলো- ১.দম্পতিটির কোনো সন্তান নেই কিন্তু তারা মা-বাব হতেও আগ্রহী আবার স্বাভাবিক ও চিরাচরিত নিয়মে সন্তান ধারণে তারা অক্ষম। ২.পুরো প্রক্রিয়াটিতে ডাক্তার কেবলমাত্র এতটুকু কাজেই অংশগ্রহণ করবে যা স্বামী বা স্ত্রীর নিজ হাতে করা সম্ভব নয় এবং মহিলার গুপ্তাঙ্গের এতটুকু স্থানেই দৃষ্টি দিবে বা স্পর্শ করবে যতটুকু না দেখলে বা স্পর্শ না করলে কাজটি আঞ্জাম দেওয়া সম্ভব হয় না। ৩. মহিলা ডাক্তার দিয়ে কাজটি সম্পন্ন করার চেষ্টা করবে। যদি মহিলা ডাক্তার পাওয়া না যায়, তাহলে পুরুষ ডাক্তারের সাথে মহিলাটি কোনো ক্ষেত্রেই নির্জনে একা অবস্থান করবে না। মহিলার স্বামী অবস্থান করবে; সম্ভব না হলে ডাক্তারের কোনো মাহরাম মহিলা অবস্থান করবে। তবে সে মহিলার সতরের প্রতি দৃষ্টি দিবে না। (সূরা আহযাব:৫৩; সূরা নূর:৩০-৩১, মাআরিফুল কুরআন:৭/১৯৪-১৯৫; বুখারী: ২/৭৮৭, মুসলিম:২/২১৬; তিরমিযী:১/১২১-১২২; খুলাছাতুল ফাতওয়া:৪/৩৬৩; জাদীদ ফেকহি মাসায়েলে:৫/১৫৫-১৬০; তুহফাতুল ফুকাহা:৩/৩৩৪)।
জন্মলাভকারী সন্তানের বংশ পরিচয়
টেস্টটিউব ও সারোগেসি পদ্ধতিতে সন্তান জন্মদান ইসলামী শরীআত যদিও অপছন্দ করে এবং সাতটি প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রথম দু’টি ছাড়া বাকী ৫টিকেই হারাম ঘোষণা করেছে, তথাপি কোনো দম্পতি যদি এই প্রক্রিয়ায় সন্তান গ্রহণ করে তাহলে এই সন্তানের মা হবে জন্মদানকারী নারী আর বাবা হবে এই নারীর স্বামী এবং তাদের বংশ পরিচয়েই সে পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে। কারণ আল-কুরআন ও হাদীস শরীফে তাকেই মা বলা হয়েছে যে নারীর গর্ভে সন্তান জন্ম লাভ করে আর বাবা বলা হয়েছে এই নারীর স্বামীকে। ইরশাদ হয়েছে-“তাদের মাতা কেবল তারাই যারা তাদের জন্ম দিয়েছে।” (সূরা মুজাদালা:২) মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- “বিছানা [স্ত্রী] যার সন্তান তার অর্থাৎ মহিলার গর্ভজাত সন্তানের বংশ পরিচয় তার স্বামী থেকেই প্রমাণিত হবে।” (আবু দাউদ:১/৩১০, তিরমিযী:১/২১৯, ইবনে মাজাহ:১৪৪; মুসলিম:১/৪৭০; হেদায়া: ২/৪৩; জাদীদ ফেকহি মাসায়েল:৫/১৫৩-১৫৪০)
লেখক: প্রধান মুফতী ও সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া মিফতাহুল উলূম, নেত্রকোনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন