কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সুষ্ঠু করতে রির্টানিং কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত সাত প্রস্তাবনা দিয়েছেন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়সার। গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১২টায় কুসিক নির্বাচনের রির্টানিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরীর নিকট এ প্রস্তাবনার লিখিত কপি দেন তিনি। পরে বিকেল ৩টায় নগরীর বাদুরতলায় নিজ ভবনে সাংবাদিকদের সামনে এ বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
লিখিত সাত প্রস্তাবনার বিষয় উল্লেখ করে নিজাম উদ্দিন কায়সার বলেন, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনসহ সকল নির্বাচনে দিনের ভোট রাতে, কেন্দ্র দখল, ভোটার শূন্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিশ্লেষণ করে দেখা যায়। জনগণের মধ্যে সেই ভয়, আতঙ্ক ও সন্দেহ এখনো বিরাজ করছে। নির্বাচন কমিশন, জেলা ও পুলিশ প্রশাসন ভোটারদের ভয় ও শঙ্কামুক্ত পরিবেশের বিষয়ে আশ^স্থ করতে হবে। ইভিএম বাতিল করে ব্যালট পেপারে স্বচ্ছ বক্সে ভোট গ্রহণ করতে হবে।
তিনি দাবি করেন, সিটি করপোরেশন এলাকায় কর্মরত মাঠ প্রশাসনের নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও উপ-সহকারি পুলিশ পরিদর্শক থেকে সহকারি পুলিশ সুপার পদদারীদের প্রতীক বরাদ্দের আগেই বদলী করতে হবে। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা প্রার্থীদের পর্যবেক্ষন করার সুযোগ দিতে হবে। নির্বাচনের সময় আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করা যাবে না।
তিনি আরো বলেন, প্রতীক বরাদ্ধের পর দু’জন নির্বাচন কমিশারের নেতৃত্বে কয়েকটি টিম নির্বাচন এলাকায় অবস্থান করতে হবে। প্রার্থীদের অভিযোগ তড়িৎ ও সহজকরণে হোয়াটসঅ্যাপ টেলিগ্রাম, ম্যাসেঞ্জারসহ অনলাইন যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ গড়ে উঠলে এবং ভোটাররা ভোট দিতে পারলে এবারে কুমিল্লা সিটিতে পরিবর্তনের পক্ষে জোয়ার উঠবে। নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি হিসেবে ভোটাররা আমাকেই বেছে নেবে।
এদিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বাতিল হওয়া মনোনয়নপত্রের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন ছয় কাউন্সিলর প্রার্থী। নামঞ্জুর হয়েছে তিনজনের আপিল আবেদন। গতকাল মঙ্গলবার কুসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের সংরক্ষিত সদস্য পদে একজন ও সাধারণ সদস্য পদে নয়জনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়ে যায়। এসব প্রার্থীর মধ্যে নয়জন তাদের মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আবেদন করেন। গত সোমবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এর শুনানি হয়।
এ সময় ২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী বিল্লাল হোসেন, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জুয়েল এবং ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের আপিল নামঞ্জুর করা হয়। আপিল আবেদনে প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী কবির আহমেদ, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ মন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ একরাম হোসেন, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জামাল হোসেন কাজল, মো. মিন্টু এবং ৭ নম্বর সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর মো. ফারজানা আক্তার।
উল্লেখ্য, আগামী ২৭ মে কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ করা হবে। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। সিটির ২৭টি ওয়ার্ডের সবকটি কেন্দ্রে এবারে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন