কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে চার কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা ঘিরে দু’দিন ধরে আলোচনা পর এবারে নগর জুড়ে মানুষের মুখে মুখে স্বতন্ত্র প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের নিজাম উদ্দিন কায়সারের ২৯ হাজার ভোট। সিটি নির্বাচনে এই প্রথম অংশ নিয়ে তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৯ হাজার ভোট পেয়ে আলোচনায় থাকা তরুণ প্রার্থী কায়সার ও তার প্রতীক ঘোড়া নিয়েই এখন মুখর জেলার রাজনৈতিক অঙ্গন।
জেলার রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকার কাছে নয়, ঘোড়ার কাছেই হেরেছে টেবিল ঘড়ি। কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও মনিরুল হক সাক্কুর মধ্যে জয়-পরাজয়ে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নিজাম উদ্দিন কায়সারের ২৯ হাজার ভোট ট্রাম্পকার্ডের ভূমিকা রেখেছে।
কুমিল্লার রাজনীতি-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন- কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াসিনের পরম আত্মীয় (শ্যালক) নিজাম উদ্দিন কায়সার এবার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করে বিএনপির এই নেতার অনুসারী ও নিজস্ব ভোটের পুরোটাই পেয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারণায় গণমাধ্যমে খুব একটা প্রচার না পাওয়া কায়সার ঘোড়া প্রতীকে ভোটের লড়াইয়ে ভালো ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
এদিকে মনিরুল হক সাক্কুর ভোট প্রসঙ্গে গণমাধ্যমে দেওয়া নিজাম উদ্দিন কায়সারের বক্তব্য নগরজুড়ে আলোচনা হচ্ছে। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেয়া বক্তব্যও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
গণমাধ্যমে কায়সার দাবী করেছেন, বিএনপির পরিচয় ব্যবহার করে একটি অংশকে বিভ্রান্ত্র করে তার ঘোড়া প্রতীকের ভোট নষ্ট করেছে সাক্কু। আর বাহার ঠেকাও-নৌকা ঠেকাও গ্রুপের এবং কালো টাকার ভোট কব্জা করেছিল সাক্কু।
নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে কায়সার বলেন, জাতীয়তাবাদী আদর্শের লোক, তরুণ ভোটার, সরকারবিরোধী অংশ এবং পরিবার, বন্ধু ও তাঁদের অনুসারীদের ভোট পেয়েছেন তিনি।
কায়সার দাবী করেন, ‘টেবিল ঘড়ি নয়, নৌকার সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্ধিতা হতো তার ঘোড়া প্রতীকের। তিনি আরও বেশি ভোট পেতেন কিন্তু আমি মনে করি সাক্কুর কারণে আমি হেরেছি। কারণ, বিএনপির আদর্শের সঙ্গে সাক্কু নেই কিন্তু তিনি প্রচারণায় ও গোপনে বিএনপির পরিচয় ব্যবহার করে দলের একটি অংশকে বিভ্রান্ত করে, ভুল বুঝিয়ে আমার ভোট নষ্ট করেছে। আর প্রতিবারের মতো এবারও কালো টাকায় ১৫ থেকে ২০ হাজার ভোট কিনেছে। একই সঙ্গে কৌশলে ‘বাহার ঠেকাও- নৌকা ঠেকাও’ গ্রুপের সঙ্গে আঁতাত করে তাদের ভোট নিজের কবজায় এনে ভোটের সংখ্যা বাড়িয়েছে। না হয় তো আমিই নৌকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জয়লাভ করতাম।’
প্রসঙ্গত, বুধবার কুমিল্লায় তৃতীয়বারের মতো সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।এতে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের কাছে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন। আর আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন কায়ার পেয়েছেন ২৯ হাজার ৯৯ ভোট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন