আশিক বন্ধু : একজন উপস্থাপক হিসেবে দেশ-বিদেশ সুনাম অর্জন কুড়িয়েছেন মৌসুমী বড়ুয়া। ১৭ বছর ধরে চ্যানেল আইয়ের তারকা কথন উপস্থাপনা করছেন। তার উপস্থাপনাসহ নানা প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছেন বিনোদন প্রতিদিনের সঙ্গে।
উপস্থাপক হিসেবে আপনার কোন স্বপ্নটি এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি?
তারকাকথন-এর প্রায় তিন হাজারেরও বেশি পর্ব উপস্থাপনা করেছি। দেশের মিডিয়া জগতের প্রায় সব লিজেন্ড, তারকা, তরুণ শিল্পী, ক্রিকেটার, ডাক্তারসহ অনেক মানুষের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। যতটুকু স্বপ্ন ছিল, তারও বেশি পূরণ হয়েছে। হাতেগোনা কিছু বিশেষ প্রিয় তারকার সাক্ষাৎকার নেয়ার স্বপ্নটা এখনো আছে, যেমন ফরিদুর রেজা সাগর, লাকী আখন্দ, শবনম, ববিতা, শাবানা, এ্যান্ডু কিশোরসহ কয়েকজনের। তাছাড়া ১২ বছর ধরে তারকাকথন উপস্থাপনা করতে গিয়ে এপার বাংলা ছাড়া ওপার বাংলার গৌতম ঘোষ, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়, নায়ক প্রসেনজিৎ, শুভমিতাসহ অনেকের সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তবে বিশেষ করে যারা আমার শিক্ষক, তাদের সাক্ষাৎকার নেয়ার সময়টকু বেশ উপভোগ করেছি।
এই দীর্ঘ উপস্থাপনার সময়ে আপনার প্রাপ্তি কতটুকু?
ক্যারিয়ারের শুরু থেকে সব মাধ্যমে ছুটে যাইনি। একটাই মাধ্যম বেছে নিয়েছি। শুধুমাত্র উপস্থাপনা দিয়ে আজকে যে সম্মান পাচ্ছি, তা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ আমাকে অনেকে ভালোবাসে। আমি টেলিভিশন পার্সোনালিটি হতে চেয়েছি, এমন আশাই হৃদয়ে ধারণ করেছিলাম। আজ আমি আনন্দিত, মানুষ আমাকে অনেক আপন করে নিয়েছেন। লস এঞ্জেলসের এপ্রিকান সিটির মেয়র ২০১৫ সালে এসআই টুটুলও আমাকে সম্মাননা দিয়েছেন। তাছাড়া আমেরিকাতে নজরুলের উপর সাহিত্য সংগঠন আমাকে সম্মানিত করেছে। দেশের বাইরে এমন প্রাপ্তিতে আমি ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি।
ছেলেবেলার সাংস্কৃতিক কর্মকাÐের কথা কি মনে পড়ে?
চট্টগ্রামের রাউজানে নোয়াপাড়ায় আমাদের বাড়ি। বাড়িতে এখন তেমন একটা যাওয়া হয় না। বছরে একবার দুবার যাওয়া হয়, তা-ও কোনো অনুষ্ঠান বা উৎসব হলে যাই। আমাদের চিটাগাং-এর বাড়িতে আত্মীয়স্বজনরা থাকেন। ছোটবেলা আমার খালা কুমকুম বডুয়ার কাছে আমার গানে হাতেখড়ি। তারপর শিশু একাডেমি ও বাংলা একাডেমিতে জড়িয়ে পড়ি। মনে পড়ে, স্কুল জীবনে কবিতা লেখা, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। একসময় সাংবাদিক ও ডাক্তার হতে চেয়েছিলাম। স্কুলজীবন থেকে আমি সেবামূলক কাজে আগ্রহী। সবসময় মানুষের কল্যাণে নিজেকে জড়িত রেখেছি, তাছাড়া শিশুদের সাথে সময় কাটানোটা বেশ উপভোগ করি।
অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?
অভিনয়ে অনেক অফার এসেছ, করিনি। ছেড়ে দিয়েছি। তবে নাটক নির্মাণ বা অনুষ্ঠান পরিচালনা করব আগামীতে। অন্যদিকে চট্টগ্রামের ভাষায় কোনো অনুষ্ঠান নির্মান হলে একবাক্যে রাজি হয়ে যাব। চিটাগাং-এর প্রতি আমার অগাধ ভালোবাসা রয়েছে। তাছাড়া ভালো কোনো কাজে কখনো না করিনি। ভালো কাজ যেখানে, আমি সেখানে প্রস্তাব পেলে রাজি হব।
উপস্থাপক হিসেবে আপনার দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই সময়ে নতুনরা কেমন কাজ করছে?
নতুনরা অনেকেই ভালো কাজ করছেন। তবে শেখার আগ্রহ থাকতে হবে। আর পড়াশোনা এবং কাজের বিষয়ে গবেষণা করতে হবে। কারণ যে কোনো শিল্পী বা প্রতিটি মাধ্যমের বিষয়ে ধারণা থাকা জরুরি। মেধা এবং মননের দিকে জোর দিতে হবে। না হলে প্রতিযোগিতার এই সময়ে টিকে থাকা যাবে না।
এক প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করছেন। এতে সুবিধা কি?
বর্তমানে আমি চ্যানেল আইতে সিনিয়র প্রোগ্রাম প্রডিওসার হিসেবে কাজ করছি। আমার উপস্থাপনায় গানে গানে সকাল শুরু, বিশেষ বৈঠকি আড্ডা, এবং তারকাকথন এই তিনটি অনুষ্ঠান প্রচার হচ্ছে। আমার শান্তি এবং কাজের জন্য চ্যানেল আই যেন আমার আপন পরিবার। এখানের সবাই আমার প্রাণ। সবার সহযোগিতায় আমার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে। আমার জীবনে চ্যানেল আই যেন সুখের ঠিকানা। এতটা বছর পরও যেন প্রতিদিনিই নতুন করে অনুপ্রেরণার পথ খুঁজে পাই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন