বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

ধর্মহীনের ইসলামপ্রিয়তা ও বাস্তবতা

মুহাম্মদ ইয়াসিন আরাফাত ত্বোহা | প্রকাশের সময় : ১৬ জুন, ২০২২, ১২:০৪ এএম

পূর্ব প্রকাশিতের পর
ইহুদিদের তৎপরতা আজ অনেক দূর এগিয়ে। তাইতো তাদের জনৈক মহিলা সাংবাদিক বলেছেন, ”যদি আমেরিকার হোয়াইট হাউজে তিন জন মানুষ থাকে তাহলে তন্মধ্যে একজন আমাদের হিতাকাংখী, আর যদি দু’জন থাকে তাহলে তাদের একজন আমাদের আর যদি একজন মানুষ থাকে তাহলে তিনিই আমাদের হিতাকাংখী”। ইহুদীদের প্রধান টার্গেট মুসলিম সম্প্রদায়। সুতরাং যেখানে খ্রিস্টান রাষ্ট্র আমেরিকা নিয়ে ইহুদীদের এতো তৎপরতা সেখানে মুসলিম রাষ্ট্র গুলোতে তাদের তৎপরতা কতবেশি গভীর তা সহজেই অনুমেয়। বাংলাদেশে বর্তমানে ইসলাম বিদ্বেষীদের তৎপরতা ও তাদের খুঁটির জোর নিয়ে চিন্তা ও গবেষণা করলে বারবার ইহুদীদের তৎপরতার চিত্রই ফুটে ওঠে। অনেকে হয়তো এক্ষেত্রে আমার মতের সাথে অমিল হতে পারেন। কিন্তু বাস্তবতা অনেকটা ইহুদী চক্রের তৎপরতাই মনে হয়েছে। অনেকে বলতে পারে বাংলাদেশে এসে ইহুদীদের কাজ করার সময় কই? তারাতো ভাববে সৌদি, আমেরিকা, তুরস্ক, রাশিয়া ও চীনের মত রাষ্ট্র নিয়ে। আসলেই তারা সে সকল বড় বড় রাষ্ট্র গুলোই নিয়েই প্রধানত ভাববে আর তাদের চেলা-চামুন্ডারা ভাববে অন্য সকল মুসলিম ও প্রভাবশালী রাষ্ট্র নিয়ে। কোনো দলের কেন্দ্রীয় নেতারা কখনো গ্রাম কমিটির কাজের পরিকল্পনা প্রণয়ণ করে না; তারা গ্রামে গ্রামে গিয়ে কাজের তদারকি করারও সময় পান না। তারজন্য দল গুলো কেন্দ্রের অধীন বিভাগীয় কমিটি, তারও অধীন জেলা কমিটি, তারও অধীন উপজেলা কমিটি, তারও অধীন ইউনিয়ন ও গ্রাম কমিটি গঠন করে। কেন্দ্রে নির্দেশ ও লক্ষ্য বাস্তবায়নে গ্রাম কমিটি গুলো নিজেদের মত নানান কৌশল প্রয়োগ করে। ইহুদী সম্প্রদায় সৌদি-আমেরিকার মত বড় বড় রাষ্ট্র গুলোকে নিজেদের মত বানিয়ে নেয়ার পর এখন বাংলাদেশের মত রাষ্ট্র গুলোর দিকে নজর দিয়েছে। আর সেগুলো তদারকি করার জন্য রয়েছেন কথিত প্রগতিশীল ইসলাম বিদ্বেষী মানুষ গুলো। ইহুদীরা অত্যন্ত হীন মানসিকতার জাতি। তারা নিজেদের স্বার্থে পৃথিবীর সকল মানুষকেও হত্যা করতে দ্বিধা করবে না।অন্যের ঘরে আগুণ দিয়ে আলু পোড়াতে বেশ পারেন তারা। যারা স্বয়ং নিজেদের নবীদেরকে হত্যা করতে পারে তাদের পক্ষে সব কিছুই সম্ভব। ইহুদী অভিশপ্ত জাতি। আল্লাহ ইহুদিদের ওপর স্থায়ীভাবে লাঞ্ছনা, অপমান ও নির্যাতন নির্ধারিত করে দিয়েছেন। যুগে যুগে ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ে তাদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করা হয়েছে। মিসরের ফেরাউন ক্ষমতায় এসে জেরুজালেম দখল করে এবং ইহুদিদের তাড়িয়ে দেয়। তারপর ব্যাবিলনের রাজা বখতে নসর জেরুজালেম দখল করে ইহুদিদের বন্দি করে নিয়ে আসে এবং তাদের দাস বানিয়ে রাখে। পরে পারস্য সম্রাট ইহুদি দাসদের সেখানে ফেরত পাঠান সত্য, কিন্তু তখন পারস্য সম্রাটেরই অধীন ছিল। ৬৬ খ্রি. রোমান সম্রাট তাইতুস জেরুজেলেম দখল করে এবং ইহুদিদের ব্যাপক হারে হত্যা করে। উপরন্তু ৭০ খ্রি. রোমান বাহিনী হাজার হাজার ইহুদিকে বন্দি করে নিয়ে যায় এবং তাদের দাস বানায়। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময়ও জার্মানের এডলফ হিটলার গণহারে ইহুদি হত্যা করেন। যুগে যুগে সকল শাসক শ্রেণী ও সূক্ষ্ম চিন্তার মানুষ গুলো ইহুদীদের চিনতে পেরেছে। তারা সবসময়ই স্বার্থান্বেষী এবং বনী ইসরাইল ব্যতিত সকল মানব গোষ্ঠী বিরোধী। তারা সর্বদা অন্যের অনিষ্ট সাধন করতে ধ্বংসযঙ্গ চালিয়েছে। যার ফলে সবাই তাদেরকে বয়কট ও ঘৃণা করে চলার চেষ্টা করেছিলো। বর্তমানে ইহুদী সম্প্রদায় এক নতুন মাত্রার সূচনা করেছে। তারা মানবিকতা সহনশীলতার কথা বলে বলে নিজেদের অবস্থান মজবুত করে নিয়েছে। ১৯৪৮ সালে ডেভিড বেনগুরিনের নেতৃত্বে গঠিত হওয়া ইজরাইল রাষ্ট্র আজ প্রত্যক্ষ বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তি। কিন্তু বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়ে তারাই যেন বিশ্বের বড় পরাশক্তি। তারা আজ অস্ত্রের যুদ্ধে খেলতে চায়না তারা স্নায়ু যুদ্ধে জড়াতে তৎপর। বিভিন্ন পরাশক্তির রাষ্ট্র গুলোকে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে লিপ্ত করে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছে। আবার মুসলিম রাষ্ট্র গুলোর প্রশাসকদেরকে অর্থ ভিত্ত ও নারীর বিনিময়ে কিনে নিয়ে সাধারণ মুসলিমদেরকে নিজেদের মধ্যকার বিভেদ ও মতভেদ সৃষ্টি করে দিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমান কথিত ইসলাম নামধারী দল গুলোর দিকে তাকালে ইহুদী তৎপরতা অনেক বেশি স্পষ্ট। মুসলিমদেরকে আজ পূর্ণজ্জীবীত হতে হবে। বাংলাদেশে যেভাবে পর্দা প্রথার বিরুদ্ধে তৎপরতা চলছে তা অত্যন্ত ভয়ানক ব্যাপার। একটা জাতিকে উলঙ্গ করতে পারা মানে তাদেরকে আদিম যুগে পৌঁছে দেয়া। আদিম যুগের মানুষ গুলোকে বর্বর হিসেবে উপস্থাপন করার প্রধান কারণ হলো তারা নাকি উলঙ্গ থাকতেন। অথচ বর্তমানে মানুষ নিজেই নিজেকে উলঙ্গ বানাচ্ছে। যারা নারীমুখী এবং সারাদিন অবাধে নারী মেলামেশায় লিপ্ত তারা কখনো ক্রিয়াশীল ও সৃজনশীল হয়ে উঠতে পারেনা। বর্তমানে প্রগতিশীলতার দোহাই দিয়ে বাংলাদেশের যুব সমাজকে নষ্টামির সর্বনিম্ন পর্যায়ে নিয়ে গেছে। বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে খোঁড়া বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। পর্দা প্রথাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানোর ফলেই মূলত আজ এই চরম দূরাবস্থা। এভাবে চলতে থাকলে পোপ প্রান্সিসের মত একসময় বাংলাদেশের মুসলিম ধর্মগুরুরাও সাধারণ মুসলমানদের বলতে হবে আপনারা বিয়ে করে যৌন মিলন করুন অতঃপর সন্তান ধারণ করুন। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ানকরূপ ধারণ করেছে। এই দূরাবস্থা থেকে উত্তোরণের জন্য কট্টর হতে হবে ধর্মের মৌলিক বিধানের ব্যাপারে। আল্লাহ যা ফরজ করে দিয়েছেন তার ব্যাপারে কোনো ছাড় দেয়া সমীচীন হবে না। বয়কট করতে হবে ইহুদী ও কথিত প্রগতীশীলতার ধারাকে। তাই বলে আবার প্রশাখা গুলো তথা সুন্নত নফল নিয়ে বাড়াবাড়ি করা চলবে না। মুসলমানদেরকে নিজেদের স্বরূপ চিনতে হবে। ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য তুলে ধরতে হবে। নিজেদেরকে উপস্থাপন করতে হবে বিশ্বের পরাশক্তিরূপে। বর্তমান বিশ্ব অস্ত্রের নয় বরং জ্ঞান ও প্রযুক্তির। জ্ঞান ও প্রযুক্তিগত মেধার বিকাশ দিয়েই নিজেদের প্রমাণ করতে হবে।

লেখক : প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন