পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ বলেছেন, বাংলাদেশ বিশ্বের সাথে তার ‘নিজ শর্ত’ মতেই কাজ-কারবার করে থাকে এবং ঢাকা দেশগুলোর সাথে পারস্পারিক অর্থনৈতিক স্বাথের্র অংশীদারিত্বে বিশ্বাসী। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আর কারো দয়া পাত্র নই, বিশ্বের সাথে আমাদের নিজ শর্তেই কাজ করি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্যাটেজিক স্টাডিজ (বিস) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির আয়োজনে ‘পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি: বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষা’ শীর্ষক এক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একথা বলেন।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ অন্তঃর্ভূক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাস করে এবং বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঘটনা ও সেই ঘটনার নায়কদের কর্মকা-কে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি বলেন, ‘যখন আমরা পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশের স্বার্থরক্ষা নিয়ে আলোচনা করছি, তখন আমাদের সামনে ভেসে ওঠে প্রায় অপরিসীম পরিসরের এক দৃশ্যপট , যেখানে প্রতিটি মুহূর্তে অসংখ্য অনুঘটক অনবরতই পরিবর্তিত হচ্ছে ’।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যাদের ক্ষতি করার ইচ্ছে নেই এবং যারা নিজ স্বার্থে ক্ষতিকর এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের সম্পদ ব্যবহার করার ইচ্ছে রাখে না- ঢাকা তাদের প্রত্যেকের সাথেই সম্পৃক্ত হতে প্রস্তুত রয়েছে। তিনি বলেন, ‘এভাবেই বাংলাদেশ তার স্বার্বভৌম জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করে।’ ড. মোমেন বলেন, কৌশলগত অবস্থান, সমৃদ্ধ অনুপাতিক জনসম্পদ ও শক্তিশালী অভ্যন্তরীণ বাজার- বাংলাদেশকে দাবার বোর্ডের এক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের আসনে বসিয়ে দিয়েছে। আমাদের পছন্দই আমাদের চালিকাশক্তি। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে আমাদের বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুশাসন বাক্য রয়েছে- ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরীতা নয়।’ ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃেত্ব আমাদের দেশ সেই লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু কিভাবে ও কখন এই লক্ষ্য অর্জিত হবে, তা অপ্রকাশিত রয়েছে। বিশেষত: ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে উত্তোরনের যে সরল লক্ষ্য ব্যাহত করার মতো জটিলতাও তো রয়েছে। তিনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই), এপেক, কুয়াড, আউকুস ও সাম্প্রতিক ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক কাঠামো’ (আইপিইএফ) এর মতো অনেক নতুন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব বিকশিত হচ্ছে।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশে এখন বিশ্বে ৪০তম ও দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয়-বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ। আমাদের থেকে একমাত্র ভারত এগিয়ে আছে। ২০৩০ সাল নাগাদ এটি বিশ্বের ২৮তম বৃহৎ অর্থনৈতিক দেশ ও ২০৩৫ সালের মধ্যে ২৫তম অর্থনৈতিক দেশ হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের শাসনব্যবস্থা, অর্থনীতি ও পরিবেশগত লক্ষ্যের সাথে যেসব বৈশ্বিক সংগঠনগুলোর মিল রয়েছে, তাদের সাথেই কাজ করতে আগ্রহী।’ ড. মোমেন বলেন, আমরা বৈশ্বিক সরবোরাহ চেইনে বাংলাদেশের যুবক-যুবতীদের মেধা ও দক্ষ হাতের সংযোগ ঘটাতে চাই।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ তার সর্বোত্তম উপায়ে শিল্প ও ভোক্তা উভয় ক্ষেত্রে বিশ্ব-বাজারে সেবা দিতে আগ্রহী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন