প্রতি গ্রীষ্মে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ বর্ষা ঋতু শুরু হওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। এ অঞ্চলের বার্ষিক বৃষ্টিপাতের ৭০ শতাংশের বেশি জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে আসে। অস্বাভাবিক বৃষ্টি সবসময়ই বিপর্যয় ডেকে আনে। খুব কম বা খুব দেরিতে বৃষ্টি হলে খরা শুরু হয়। প্রচুর বৃষ্টি হলে বন্যার নিচে বিস্তীর্ণ জমি বিলীন হয়ে যায়। বাংলাদেশ ও ভারতের কিছু অংশের জন্য এ বছরটি ইতোমধ্যেই বিপর্যয়কর প্রমাণিত হয়েছে। মে ও জুন মাসে অস্বাভাবিক মুষলধারে বৃষ্টির ফলে পানির চাপে নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। ২২ জুনের মধ্যে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব দুটি জেলা যেখানে ৬০ লাখ লোক বাস করে, সিলেটের প্রায় ৮৩ শতাংশ এবং সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ সম্পূর্ণরূপে পানির নিচে ছিল। বাংলাদেশ এবং প্রতিবেশী ভারতের আসাম ও মেঘালয় রাজ্য জুড়ে কর্তৃপক্ষ এবং সাহায্যকর্মীরা ৯০ লাখেরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। অন্তত ১০০ জন মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের মধ্যে প্রায় ৩০ জন বাংলাদেশে। আগামী দিনে মৃতের সংখ্যা বাড়বে প্রায় নিশ্চিত। তবে বন্যার তীব্রতা বিবেচনায় তা প্রত্যাশার চেয়ে কম। উদাহরণস্বরূপ, ২০২১ সালের জুলাই মাসে বাংলাদেশের চেয়ে দুটি ধনী এবং কম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ বেলজিয়াম এবং জার্মানিতে প্রবল বর্ষণ এবং আকস্মিক বন্যায় ১৮০ জনেরও বেশি লোক মারা গিয়েছিল। বাংলাদেশে এসব দুর্যোগে মৃতের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ১৯৭০ সালে ঘূর্ণিঝড় ভোলা অঞ্চলের কোথাও ৩ লাখ থেকে ৫ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল। ২০২০ সালে দুই দশকের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে প্রায় ৩০ জন মারা গেছে। বাংলাদেশ চরম আবহাওয়া থেকে ক্ষয়ক্ষতি উল্লেখযোগ মাত্রায় কমাতে পেরেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন