বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শিক্ষাঙ্গন

চল না ঘুরে আসি...

মৃধা মোহাম্মাদ বেলাল | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চল না ঘুরে আসি অজানাতে, যেখানে নদী এসে থেমে গেছে....!’’ মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে ছন্দময় সুরে তাল মিলিয়ে ডানা মেলে হারিয়ে যাই দিগন্তহীন পথে। কিন্তু বাস্তবতার ব্যস্ত দিনে তা আর হয়ে উঠে কই! আমরা ব্যস্ত শহরের ব্যস্ত মানুষ, দিগন্তহীন পথে হারাবার বাসনা আটকে যায় সময়ের কারাগারে।
একসাথে চলার পথে হয়তোবা অনেক সময় ছোট ছোট ভুল হয়ে থাকে, ভুলগুলো শুধরে নতুন করে চলার অনুপ্রেরণা দেয় একটুখানি ভ্রমণ। তেমনি এক ছুটির দিনে গত শুক্রবার ১১ নভেম্বর সুযোগ পেলাম দুঃখগুলো মুছে দিয়ে আনন্দটুকু ছোট-বড় সবার সাথে ভাগাভাগি করে নেয়ার। স্বপ্নীল রথে চড়ে ঘুরে এলাম জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম হল, আ.ফ.ম কামালউদ্দিন হল পরিবারের সকল সদস্য। ক্যাম্পাসে প্রেসিডেন্সিয়াল হল নামে পরিচিত এই আবাসিক হলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল কেন্দ্রে অবস্থিত। এই হলের ছোট-বড় সকলের মধ্যকার বন্ধন যেন অন্যদের ঈর্ষা করার মতো! হল পরিবারের সকলে মিলে গিয়েছিলাম ক্যাম্পাস থেকে দূরে মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিত দোহারের পদ্মার পাড়, মৈনটঘাট। একটি সুন্দর পরিবেশে ২য় বারের মতো এই পিকনিকের আয়োজন করেছিলেন হলের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। পিকনিক উপলক্ষে হরেক রকম টি-শার্ট পরিহিত প্রত্যেকের মুখের হাসি যেন সোনালি সূর্য্যরে মতো দেখাচ্ছিল। টি-শার্টে নির্বাচিত লেখা ছিল, ‘‘কামালউদ্দিন হল পরিবার, ঐক্যবদ্ধ হৃদয় সবার’’। একতার সুরে সকাল ৯টায় হলের মূল ফটক থেকে ক্যাম্পাসের ৩টি ও ভাড়া করা ১টি বাসে রওনা হলাম, উদ্দেশ্য মৈনটঘাট। যেতে যেতে প্রতিটা বাস যেন নাচে গানে আর হৈ হুল্লোড়ে নেচে তাল মিলায়। বন্ধুবর সিজার, সাজু, পথিক, সাব্বির, ইসরায়েল আর আমিসহ পুরো বাসের ছোট বড় সকলের সঙ্গীতযজ্ঞ যেন ভিন্ন জগৎ সৃষ্টি করল।
অবশেষে ঘন সবুজের প্রান্ত পদ্মার পাড় যখন পেঁৗঁছলাম তখন বেলা ২টা। যে যার মতো বাঁধভাঙ্গা উলাসে বাস থেকে ছুটে দৌড়। নদীর পাড় ঘেঁষে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত দল বেঁধে প্রত্যক্ষ করলাম পদ্মার বিশালতা। ছলাত ছলাত ঢেউগুলো আছড়ে পড়ছে কূলে। এদিকে হলের বাবুর্চি মনির ভাই রান্নার কাজে ব্যস্ত, নদীর পাড়ে গর্ত করে চুলা বানিয়ে চলছে রান্নাঘরের রান্না। নদীর তীরে দুর্বা ঘাসে সবাই গোল হয়ে বসে গেলাম। খেতে খেতে কত কথাই না হলো! সভাপতি জনি ভাই বলল, ‘‘কামালউদ্দিন হল পরিবার এক সুতোয় গাঁথা শত শত ফুল। আজকের দিনের ধারাবাহিকতা থাকবে ঐক্যবদ্ধ হৃদয়ে আরো অনেক কাল। প্রকৃতির রাজ্যে নেমে আসল গোধূলি, পদ্মার মাঝে যাবে বলে তিনটি ট্রলার ভাড়া করা হলো। পদ্মার উত্তাল বুকে দুই হাত মেলে দিলাম। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা শেষ হলো, আঁধার কালো আকাশে উঁকি দিল রোমাঞ্চিত রূপালী চাঁদ। পদ্মার বুকে চাঁদের আলোয় সিক্ত করলাম নিজেকে নতুন এক অভিজ্ঞতায়। কখন যে মাঝি মামা তীরে ভিড়ল, চাঁদের ভরা যৌবনে বিভোর মন টেরই পেল না! ক্যাম্পাসের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম, তখন রাত সাড়ে ৯টা। সকলের সুরে সুরে আবার আকাশে বাতাসে ধ্বনিত প্রতিধ্বনিত হলো, ‘‘এই পথ যদি না শেষ হয়, তবে কেমন হতো...!’’

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন