কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলায় দেশের সকল সরকারি দপ্তরে বিদ্যুতের ব্যবহার শতকরা ২৫ শতাংশ হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। পাশাপাশি, সরকারের নীতির অনুসরণে বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ে কার্যকর কর্মপন্থা নিরুপনের লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সিনিয়র সচিব এবং সচিববৃন্দের সাথে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সভাপতিত্বে আজ অনুষ্ঠিত এই সভার পরে মুখ্য সচিব নিজেই সভার বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পিএমও সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ব্রিফিংয়ে মুখ্য সচিব বিদ্যুৎ ও জ¦ালানীর ব্যবহার কমিয়ে আনতে সকল মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব কর্মপন্থা নিরুপনের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘সরকারি সকল দপ্তরে বিদ্যুতের ব্যবহার ২৫ শতাংশ হ্র্রাস করতে হবে।’
জ¦ালানী খাতের বাজেট বরাদ্দের ২০ শতাংশ কম ব্যবহারের লক্ষ্যে অর্থ বিভাগ প্রয়োজনীয় পরিপত্র জারি করবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মুখ্য সচিব বলেন, ‘আতংতিক হওয়ার কোন কারণ নেই ভবিষ্যতে যাতে আমাদের কোন ধরণের সংকটে পড়তে না হয় তারজন্য সতর্কতামূলক ভাবেই এই ব্যবস্থা।’
আর এ ব্যবস্থা কেবল শহর রাজধানী কেন্দ্রিক নয়, সকল জেলা-উপজেলার যার যার মন্ত্রণালয়স্থ দপ্তরেও যেন গৃহীত হয় সেজন্য সকল মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, প্রধানন্ত্রীর উৎপাদন বাড়ানোর এবং মিতব্যয়ী হবার আহ্বান সকলকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে মন্ত্রণালয় সমূহকে অনাবশ্যক ব্যয় পরিহারসহ বিদ্যুৎ ও জ¦ালানি সাশ্রয়ী হবার আহ্বান জানান। সরকারের নীতি অনুসরণে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাগুলোকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে কোডিড পরবর্তী অর্থনৈতিক অভিঘাত এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলশ্রুতিতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানীসহ নিত্যপণ্যের অব্যাহত মূল্যবৃদ্ধির কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরকারের ব্যয়-সাশ্রয় নীতি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়- তা নিয়ে সচিবগণ আলোচনা করেন।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতেমা ইয়াসমিন অন্যান্যেও মধ্যে বৈঠকে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
সভার অন্য সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে- অনিবার্য না হলে শারীরিক উপস্থিতিতে সভা পরিহার করতে হবে এবং অধিকাংশ সভা অনলাইনে আয়োজন, অত্যাবশ্যক না হলে বিদেশ ভ্রমণ যথাসম্ভব পরিহার করা, খাদ্যদ্রব্যসহ নিত্যপণ্যের মূল্য সহনীয় রাখতে বাজার মনিটরিং, মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মজুদদারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ অন্যান্য পদক্ষেপ জোরদার করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী পরিবহনে ব্যক্তিগত যানবাহনের ব্যবহার যৌক্তিকিকরণের লক্ষ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ এবং অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহ বৃদ্ধিকল্পে অর্থ-বছরের শুরু থেকেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে এবং লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।
একইসঙ্গে প্রতিটি মন্ত্রণালয় নিজস্ব ক্রয় পরিকল্পনা পুনঃপর্যালোচনা করে রাজস্ব ব্যয় হ্রাসের উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলেও সভায় উল্লেখ করা হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন