চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রী ধর্ষণের বিচার চেয়ে, ছাত্রলীগ সভাপতি কর্তৃক বিচার চাইতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নারীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।
আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রাস, চাদাবাজী ও ধর্ষণের অখড়া বানিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করে ৫ জন মিলে তার ভিডিও ধারণ করেছে। চবি শাখা ছাত্রলীগের নেতারা সেই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বাধা প্রদান করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করছে আমরা তাদের সাথে আছি। ২৪ ঘন্টার ভিতরে এই কালপ্রিটদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা না হলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠবে। ছাত্রলীগের এক সময়ের গৌরবউজ্বল ইতিহাস থাকলেও আজ তারা সন্ত্রাসী চাদাবাজী আর ধর্ষণের যে মহামারী সারা দেশে ছড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তুলা এখন সকলের নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের একটি হচ্ছে আপনি একজনকে শিক্ষামন্ত্রী বানিয়েছেন যার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে দূর্ণীতির অভিযোগ উঠে। এমন একজনকে শিক্ষা উপমন্ত্রী বানিয়েছেন যার অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাদাবাজী আর মাদকের সিন্ডিকেট চালায়, ধর্ষণের চক্র গড়ে তুলে।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতারা টাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে তুলে, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেঞ্চুরি মানিকের কথা এখনো কেউ ভুলে নাই। দূর্নীতির দায়ে শোভন রাব্বানীর পতনের কথা মনে আছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাদের দূর্নীতির খবর দেখা গেলো প্রিতিটি নির্মানকাজে চাদাবাজী করতেছে। নিজের সহকর্মীকে কু প্রস্তাব দেয়।
ধৈর্যের একটা সীমা আছে, সহ্যের একটা সীমা আছে। আমাদের মা বোনদের গায়ে হাত দিবে সেটাও আমরা সহ্য করবো এমনটা কখনো সম্ভব নয়। এই জানোয়ারদের জনসমক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানাই। ছাত্রলীগের দোষী শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। অন্যথায় ছাত্র অধিকার পরিষদ সকল ক্যাম্পাস ও জেলায় আন্দোলনের ঘোষণা করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন নির্যাতন ও ধর্ষণের সাথে ছাত্রলীগের কর্মীরা জড়িত থাকে। ৯৮ সালে জাবিতে ধর্ষণের সেঞ্চুরি মানিক, সিলেট এমসি কলেজে গৃহবধূকে গণধর্ষণ, ১৫ সালে ঢাবি ও জাবিতে পহেলা বৈশাখে যৌন নির্যাতনের সাথে ছাত্রলীগ জড়িত ছিল। এই সরকারের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান যৌন নির্যাতন মূলক বক্তব্যের কারনে বরখাস্ত হয়েছিল। কিন্তু আমরা এসকল অপরাধের সুস্থ বিচার ও তদন্ত হতে দেখিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেন বলেন, চিটাগাং বিশ্ববিদ্যালয় কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এখানে ছাত্র,ছাত্রী কেউ নিরাপদে থাকতে পারেনা। ছাত্রীরা যৌন হেনস্তার স্বীকার হয়, বিরোধীরা ছাত্রলীগের অস্ত্রের কারণে মানবাধিকার হারিয়ে ফেলে, শিক্ষকরা ক্লাসে ছাত্রলীগের ভয়ে ঠিকমতো কথা বলতে পারেনা। ছাত্রলীগের অস্ত্রের রাজনীতির অবসান করতে হবে। চাকসু নির্বাচন না থাকার কারণে সেই ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা সব ধরণের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এই ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাই-বোনেরা,আপনারা এই ঘটনার শেষ দেখে ছাড়ুন। আপনাদের উপর বিন্দুমাত্র আঘাত আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল ক্যাম্পাসে আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন