পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে মানব পাচারকারীরা আরো বেশি ক্ষতি সাধন করতে সক্ষম। সরকার এবং অংশীজনরা প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের প্রতিরোধ করতে পারে। গতকাল শনিবার রাজধানীর ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেলে বাংলাদেশ ইউনাইটেড নেশনস মাইগ্রেশন নেটওয়ার্ক ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানবপাচার প্রতিরোধে জাতীয় পরামর্শক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে মানব পাচার একটি ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম এবং আমাদের থেকে অন্য দেশের প্রযুক্তি আরও উন্নত হতে পারে, মানব পাচারকারীরা যার সুবিধা নিতে পারে। সেজন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে উন্নয়নশীল দেশগুলো যেন উন্নত প্রযুক্তি হাতে পাওয়ার সুবিধা পায়।
ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাচার রোধে ক্যাম্পে উচ্চ গতির মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমাদের অনুরোধে তা করা যায়নি। আমারা নাগরিকদের মানব পাচারের শিকার হওয়া থেকে বিরত রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। বিভিন্ন সময়ে আমাদের উদ্যোগ ও প্রণীত নীতি তাই ইঙ্গিত করে। নিরাপদ অভিবাসন নিশ্চিতে আমরা বিভিন্ন আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, মার্কি যুক্তরাষ্ট্রকে ইমিগ্রেন্টদের দেশ বলা হয় এবং ইমিগ্রেন্টরা সেখানে কারো কাছে বোঝা না। ইমিগ্রেন্টরা তাদের ইনোভেশন ও উন্নয়নের উৎস। তারা স্থানীয়দের কর্মসংস্থান কমিয়ে না এনে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করি মানবিক বোধের জায়গা থেকে তাহলে এই সঙ্কট থেকে উত্তরণ করতে পারবো।
একই অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, মানবপাচারের মতো ঘৃণ্য অপরাধের বিষয়ে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করে। এই অপরাধ রোধে সরকার আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের কারণে ভিকটিম হয়ে গেছে। আমাদের সম্পদ সীমিত। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও সহায়তা নিশ্চিত করছে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে এই বাস্তুচ্যুত নাগরিকরা আমাদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বাংলাদেশ দ্রুতই মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন চায়।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানবপাচার সূচকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্তরে অবস্থান করছে। এটি বাংলাদেশের প্রতিনিয়ত মানবপাচারের বিরুদ্ধে অবস্থানের প্রতিফলন। মানবপাচার ইস্যুকে সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আকতার হোসেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চর্ড, ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত ডেপুটি চিফ অব মিশন স্কট ব্র্যান্ডন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের ভারপ্রাপ্ত চার্জ দ্য এফেয়ার্স জেরেমি অপরিটসো, বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক জিন লুইস, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর চিফ অব মিশন আব্দুস সাত্তার ইজয়েভ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন