কয়েকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে বাংলাদেশে আলোচিত আশরাফুল আলম সাঈদ ওরফে হিরো আলমকে জিজ্ঞাবাসাদ করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি আর কখনো অনুমতি ছাড়া পুলিশের পোশাক পরবেন না এবং বিকৃত করে রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীত গাইবেন না বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে ডিবিকে মুচলেকা দিয়েছেন হিরো আলম।
ডিএমপির সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের ডাকে গত বুধবার সকালে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে উপস্থিত হন হিলো আলম। সেখানে তাঁকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ। বিষয়টি গত সপ্তাহের হলেও এখনো সোস্যাল মিডিয়ায় চলছে নেটিজনদের সমালোচনা।
সিনিয়র সাংবাদিক ও কলাম লেখক মেহেদী হাসান পলাশ নামে একজন লিখেছেন, হিরো আলমের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়া যায়, কিন্তু টিভি চ্যানেলের মালিকের কাছ থেকে নেয়া যায় না। কেননা দুর্বলের উপর ছড়ি ঘোরানো খুব সহজ।
জাহিদুল ইসলাম জিন্নাহ নামে একজন লিখেছেন, রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীত গাওয়ার ব্যাপারে হিরো আলমের উপরে বাংলাদেশ পুলিশের নিষেধাজ্ঞায় আপনারা যারা তথাকথিত 'সুশীল', 'বুদ্ধিজীবী', 'শিল্পী' সমাজ খুশীতে বগল বাজাচ্ছেন, আপনারাও তৈরি থাকবেন, খুব বেশদিন লাগবে না আপনাদের উপরের অযাচিত নিয়মনীতি চাপাতে।
তিনি আরও লেখেন, রবীন্দ্র ও নজরুলসংগীত হিরো আলম কিভাবে গাইবে সেটা সম্পূর্ণই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। ভালো না লাগলে শুনবেন না, সমালোচনা করতে পারেন। তাই বলে একজন মানুষের শিল্প চর্চায় (হোক সেটা ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে বা মকারি করে) আপনারা নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন কেনো?
তিনি আরও লেখেন, রবীন্দ্র ও নজরুলকে বেঁচে কে খায় না বলেনতো? আইনত কোনো বাঁধাওতো নেই। রবীন্দ্রনাথের শিল্পের কপিরাইট উঠে গেছে বহু বছর হয়ে গেছে। সমস্যাটা আসলে শ্রেণিতে। গ্রামের রুট লেভেল থেকে উঠে আসা হিরো আলমকে চাইলেই দুই-চারটা হুমকি ও ধমক দিয়ে থামানো যায়। আর উচ্চবিত্ত কাউকে ফুলের টোকাও দেয়া যায় না!
মাজহার মাহবুব নামে একজন লিখেছেন, হিরো আলমকে রবীন্দ্র কিংবা নজরুলসংগীত গাইতে বাধা দেওয়ার অধিকার কেউ রাখে না। যদি হিরো আলম গাওয়ার অধিকার না রাখে, তবে আমরা কেউই গাওয়ার অধিকার রাখি না। যদি কেউ বলে, সে গান বিকৃত করেছে, তাহলে সেটা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ। যদি গানের কথা ও অর্থ পরিবর্তন হয়ে থাকে সেটা ভিন্ন কথা। কিন্তু সুরের জন্য কেউ তাকে বাধা দেওয়ার অধিকার রাখে না। যার ভালো লাগে না, সে শুনবে না!
শাহরিয়ার পলাশ নামে একজন লিখেছেন, মুচলেকা যদি সমর্থক বাড়াতে সহায়তা করে তবে মুচলেকাই ভালো। অনেক বিখ্যাত অশিল্পীরাও গোপনে মুচলেকা দেয়ার জন্য তদবির করে কিনা সেই দুশ্চিন্তায় হচ্ছে।
আনম্যানড ইউজার নামে একজন লিখেছেন, ভালো। এখন থেকে শুদ্ধভাবে রবীন্দ্রসংগীত আর নজরুল গীতি কিভাবে গাইবে তা ডিবি পুলিশের কাছ থেকে শিখে নিবেন সবাই।
হরিপদ নামে একজন লিখেছেন, এদেশের প্রগতীশীলরা নিজেরা চলবে নিজের ইচ্ছে মতো আবার হীরু আলমকে গান গাওয়াতে চায় তাদেরই ইচ্ছে মতো, এটা কি ধরনের প্রগতি?
আরেক আনম্যানড ইউজার নামে একজন লিখেছেন, তার যন্ত্রণা সঙ্গীত থেকে এবার যদি কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়।
শফিকুল ইসলাম নাদিম নামে একজন লিখেছেন, হিরো আলম হচ্ছে সার্কাসের পষড়হি তাকে ৎবংঃৎধরহ করার ঝঃবঢ় নেয়ায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীদের প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা।
অনেকেই লিখেছেন, হিরো আলম বাংলাসংগীতকে বিকৃত করে গান গেয়েছেন। তার এ শাস্তি অনেক আগেই হওয়া দরকার ছিল। তবুও আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।
আবার অনেকেই লিখেছেন, হিরো আলমের প্রতি এ সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হযনি। বরং তার বাক-স্বাধীনতার প্রতি হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। তার চেয়ে অনেক খারাপ শিল্পী আছে যারা বাংলা গানকে বিকৃত করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে গায়। তাদের তো এমন আইন করতে পারেন না। আর হিরো আলম দুর্বল বিধায় এমন অযাচিত আইন করেছেন। এটা এক নায়কতন্ত্র হয়ে গেলো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন