কারিগরি ত্রুটির কারণে নয় বরং সদিচ্ছার অভাবে মাদরাসা বোর্ড থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করা শিক্ষার্থীরা বৃত্তির টাকা পাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন মাদরাসা থেকে বোর্ডবৃত্তি প্রাপ্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে এ অভিযোগ করেন তারা। এসময় অবিলম্বে বৃত্তি জটিলতার সমস্যা সমাধান না করলে উচ্চ আদালতে রিট করার ঘোষণাও দেন বৃত্তিপ্রাপ্তদের একাংশ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সালেহ উদ্দিন সিফাত বলেন, কারিগরি ত্রুটি না বরং এখানে কারো সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। এ সদিচ্ছার অভাব কাদের! সহজেই যদি বলে মাউশিতে যারা আছে, মাদরাসা অধিদপ্তর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। এই তিনটা এনটিটিকে আমরা দায়ী করছি। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায় কোনভাবেই এড়াতে পারে না। করোনাকালীন সময়ে যখন বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটালাইজড করার কথা বলা হয় আমরা সবাই যেন ক্রমিকের সাথে মিল রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিল্ডিং থেকে দেওয়া ফরমে পূরণ করি! আমরা খুশি হয়েছিলাম। কারণ, আগের মতো মেকানিকাল ওয়েতে আমাদের দৌড়াদৌড়ি করতে হবে না। কিন্তু দুই বছরে ভোগান্তি দূর না করে ভোগান্তি আরো বৃদ্ধি করেছে বলে মন্তব্য করেন সিফাত।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনাস ইবনে মুনিরের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন তামজিদ হোসাইন, আফরাজ আল মাহমুদসহ মাদরাসা বোর্ড থেকে বৃত্তি প্রাপ্ত ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা অনতিবিলম্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের যারা মাদরাসা বোর্ড থেকে বৃত্তি প্রাপ্ত তাদের সকলকে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার আহবান জানান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি কোন ধরনের সদিচ্ছা না দেখায় এবং সমস্যার সমাধান না করে তাহলে হাইকোর্টে রিট করার ঘোষণা দেন তারা।
উল্লেখ্য, তিন বছর ধরে বৃত্তির টাকা পাচ্ছে না মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে পাস করে সাধারণ শিক্ষায় যাওয়া শিক্ষার্থীরা। ২০১৭, ১৮, ১৯ ও ২০ সালে আলিম (উচ্চ মাধ্যমিক) পরীক্ষায় মেধার স্বাক্ষর রেখে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পাচ্ছে না। একইসময়ে বৃত্তি পাওয়া অন্যান্য বোর্ডের শিক্ষার্থীরা একাধিকবার বৃত্তি পেলেও অদৃশ্য কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর আলাদা হয়ে যাওয়ার পর থেকে এ সমস্যার শুরু। গত তিন বছরেও সমস্যার সমাধান হয়নি। সমাধানে কে এগিয়ে আসবে, সেটা নিয়েও আছে দ্বন্দ্ব। এর ফলে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মাদরাসা শিক্ষার্থী বৃত্তির টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর, মাদরাসা বোর্ড ও মাউশিতে গেছে। কিন্তু ফিরেছে খালি হাতে।##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন