টাঙ্গাইলের সখীপুরে দশম শ্রেনীর এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার রায়ে এক যুবকের যাবজ্জীবন সশ্রম করাদন্ড দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। সেই সাথে ১ লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ১ বছরের কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। মামলায় নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় এক নারীকে বেকুসুর খালাস দিয়েছে আদালত। রোববার ৭ আগস্ট দুপুরে ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিন আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন।
দন্ডিত আসামী সখীপুর পৌরসভার গজারচালা এলাকার শাহজাহান মিয়ার ছেলে মো: রবিন মিয়া (২০)। এ মামলায় বেকুসুর খালাস প্রাপ্ত হয়েছেন একই এলাকার মো: নাছির উদ্দিনের স্ত্রী ও দন্ডিত আসামীর ভাবী দিপ্তী আক্তার (২৪)।
টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের এপিপি মোহাম্মদ আব্দুল কুদ্দুস জানান, সখীপুর পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের বইছার মোড় এলাকার দশম শ্রেনীর মাদ্রাসা ছাত্রীকে (১৫) একই এলাকার মো: রবিন মিয়া তার ভাবী দিপ্তী আক্তার এর সহায়তায় ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন দুপুর ২টার দিকে নিজ বাড়ীতে ডেকে নিয়ে বসত ঘরের ভেতরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ফলে ভিকটিমের যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়। পরে ভিকটিমের পরনের থ্রীপিছ খুলে দন্ডিত আসামী রবিন মিয়া তার ভাবী দিপ্তী আক্তারের থ্রীপিছ পড়িয়ে বাড়ী থেকে বের করে দেয়। ভিকটিম নিজ বাড়িতে আসলে তার মা পরনে অন্যের থ্রীপিছ দেখে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ভিকটিম তার মাসহ বাড়ীতে অন্যান্যদের কাছে দন্ডিত আসামী রবিন মিয়া কর্তৃক তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা বলেন। পরে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে যেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ঘটনার দিন রাতেই সখীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধণী (০৩) এর ৯ (১)/৩০ ধারায় ৫ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। পরে সখীপুর থানার এসআই মো: সাইফুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। তদন্ত কর্মকর্তা বদলী জনিত কারনে পরবর্তীতে সখীপুর থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন চাঞ্চল্যকর এই মামলাটি তদন্ত করেন। পরে ভিকটিম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ ছামিদুল ইসলামের কাছে ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন।
ভিকটিমের ডাক্তারী পরীক্ষা রিপোর্টে চিকিৎসক ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণের রির্পোট প্রদান করেন। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ভিকটিমের ২২ ধারায় জবানবন্দি, ডাক্তারী পরীক্ষার রির্পোট, সাক্ষীদের জবানবন্দি পর্যালোচনা করে দন্ডিত আসামী মো: রবিন মিয়া ও নুসরাত জাহান দিপ্তী এই ২জনের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দায়ের করেন। মামলার বাদী, ভিকটিম, চিকিৎসক, তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট ৭জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এ মামলার সাক্ষী প্রমানে নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় আদালত নুসরাত জাহান দিপ্তী আক্তার (২৪) কে বেকুসুর খালাস প্রদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন